প্রতিবেদন : কেন্দ্রের খাদ্য-ফতোয়া নিয়ে প্রতিবাদে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙাড়া ও জিলিপি নিয়ে কেন্দ্রের ফতোয়ার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, কিছু সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশে এখন থেকে নাকি সিঙাড়া/জিলিপি (samosa- jalebi) খাওয়া যাবে না। এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনও বিজ্ঞপ্তি নয়। আমরা সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। আমরা এই বিজ্ঞপ্তি কার্যকরও করব না। আমার মনে হয়, সিঙাড়া এবং জিলিপি অন্যান্য রাজ্যেও জনপ্রিয়। সেইসব রাজ্যের মানুষরাও এই খাবারগুলি ভালবাসেন। মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করা সঠিক কাজ নয়।
কেন্দ্রের দাবি, সিগারেটের মতোই সমান ক্ষতিকর সিঙাড়া-জিলিপি (samosa- jalebi)। সেই কথা মনে করাতেই নাকি এবার এই খাবারগুলির উপর লেখা থাকবে, বিধিবদ্ধ সর্তকীকরণ। এই বিষয়ে তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, সিঙাড়া-জিলিপিতে কুনজর পড়ছে কেন্দ্রের। সিঙাড়া-জিলিপি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ফতোয়া মানবে না রাজ্য সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন রাজ্য কে কী খাবেন, স্বাধীনতা তাঁর। খাদ্যের গুণমান ঠিক থাকলে খাদ্যবস্তুর উপর কোনও বিধিনিষেধ বা হস্তক্ষেপ উচিত নয়। বাংলায় এসব হবে না।
আরও পড়ুন- ডিভিসি জল ছেড়েছে না জানিয়ে, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
প্রশ্ন উঠছে যেসব দোকানে সিঙাড়া, জিলিপি, লাড্ডু, বড়া, পাও-এর মতো খাবার পাওয়া যায়, সেইসব দোকানে এই চার্ট টাঙানোর জায়গা কোথায়! আর কেইবা তা হিসেব করে লিখবেন!
এই বিষয়টি থেকেই স্পষ্ট ছোট দোকান তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই কেন্দ্রের এই ষড়যন্ত্র। কারণ, সরকারের এই পদক্ষেপ আসলে স্বাস্থ্যনীতি নয়, সবটাই লোকদেখানো নাটক। এতে সমস্যার সমাধান নয়, বরং গরিব মানুষের সস্তা খাবার ও তাদের জীবিকাকে অপরাধী বানানো হচ্ছে। ছোট ব্যবসায়ী, যাঁরা রাস্তার মোড়ে সিঙাড়া-জিলিপি ভাজেন তাঁদের পেটে লাথি মারার চক্রান্ত করা হচ্ছে। সত্যিই যদি দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবা হত, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত ছিল আল্ট্রা-প্রসেসড ফুড বাতিল করা। তরিতরকারি, ডাল, ফলমূলের দাম কমানো। স্থানীয় কৃষি ও দেশীয় খাবারের সংস্কৃতি রক্ষা করা। সাদা চোখে দেখতে গেলে বেশ কিছু প্রশ্ন জলের মতো স্বচ্ছ, বেছে বেছে শুধু এগুলোর কেন পিছনে পড়ল সরকার? আসল বিপদকে কি আড়াল করা হচ্ছে? বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রক্রিয়াজাত খাবার নিয়ে কেন নীরব স্বাস্থ্যমন্ত্রক?