প্রতিবেদন : মোদি যদি আসে আর কোনওদিন দেশে নির্বাচন হবে না। এরা এলে গণতন্ত্রকে শেষ করে দেবে, সংবিধানকে খেয়ে নেবে। ইতিহাস-ভূগোল বদলে দিয়েছে, আমাদের দেশের সম্প্রীতির কাঠামোর চরিত্র বদল করে দিয়েছে। তাই আর মোদি নয়। সোমবার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে প্রচার মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Supremo Mamata Banerjee) দিল্লিতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়াকে ক্ষমতায় আনার বার্তা দিলেন। তিনি বলেন, এবার ইন্ডিয়া জোটই জিতবে। ‘দিদি আসছে’ সম্মিলিত আওয়াজ শুনে তিনি বলেন, দিদি তোমাদের সঙ্গেই আছে। দিদি দিল্লিতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়াকে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে। আমরা এখান থেকে হেল্প করব জোটকে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ইন্ডিয়া জোটই জিতবে। কাল পর্যন্ত যে হিসেব রয়েছে তাতে ওরা বড়জোর ১৯০ থেকে ১৯৫ আর ইন্ডিয়া জোট ৩১৫। ইতিমধ্যেই হিসেব হয়েছে তিন-চারটে পার্টিকে বাদ দিয়েই।
তিন দফায় চুপসে গিয়েছে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Supremo Mamata Banerjee) এদিন বলেন, তিনটে দফা ভোট হয়েছে তাতে মুখটা চুপসে গিয়েছে। আজকেরটা এখনই তো কাউন্ট করতে পারব না। তিনটে দফা যা হয়েছে তাতেই কুপোকাত। এপাশ-ওপাশ-ধপাস হয়েছে। বলেছিল না ইসবার ৪০০ পার! এবার পগার পার। এত অত্যাচার, গণতন্ত্রটাকে কারাগারে পরিণত করে দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা ভোট হয়েছে তাতে বিজেপি ৪০০ তো দূর ২০০-ও পার করতে পারবে না।
আরও পড়ুন- সন্দেশখালিতে অশান্তি, গ্রেফতার বিজেপির চার
চক্রান্তের খেলা খেলবেন না : তৃণমূলনেত্রী বলেন, বিজেপি সন্দেশখালির মা-বোনেদের অসম্মান করার জন্য টাকা খরচ করছে। বোমা-গুলি-পিস্তল দিচ্ছে। যা ইচ্ছে করে যাচ্ছে। আমি ওদের বলি, মা-বোনেদের সম্মান চলে গেলে সেই সম্মান ফেরে না। মা-বোনেদের নিয়ে এই চক্রান্তের খেলা খেলবেন না। তারপর তিনি বলেন, মোদিবাবু জেনে রাখুন, আমাদের এখানে মা-বোনেদের গায়ে হাত দিতে গেলে সবাই ভয় পায়। হাত দিলে তাকে জেলে থাকতে হয়। এটা আপনাদের উত্তরপ্রদেশ নয়, মধ্যপ্রদেশ নয়। তফসিলিদের উপর অত্যাচারে ভারত এক নম্বর। এটা বাংলা। এটা রবীন্দ্রনাথের বাংলা।
ল্যান্ডপোর্টে কর্মীদের পাশে : এদিন বনগাঁয় সীমান্ত বাণিজ্য সংক্রান্ত ল্যান্ডপোর্টের সমাধান সূত্রের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ল্যান্ডপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের অধীনে নিয়ে এসেছে। ল্যান্ডপোর্টে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বর্তমানে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিশ্বজিৎ যদি জেতে, তবে আমি, বিশ্বজিৎ, মমতাবালা সবাই একসঙ্গে বসে একটা সিদ্ধান্ত নেব। যাতে ওদিকটাও ঠিক থাকে। আর গরিব মানুষগুলোরও কর্মসংস্থান হয়।
নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মোদিবাবুরা আর নাম খুঁজে পাননি, আমার নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন করছে। বিজ্ঞাপনে সে তার মাকে বলছে, ‘চল মোদিকে ভোটটা দিয়ে আসি। আমার বাড়িতে জল দিয়েছে।’ উনি জলটা দেননি। জলটা আমরা দিয়েছি। এই জলের ৭০ শতাংশ টাকা, জমি এবং রক্ষণাবেক্ষণ সব রাজ্য সরকার করে। মোদিবাবু কিচ্ছু করেনি। আপনারা নাকি বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ পান। মোদিবাবু বলছেন। পাচ্ছেন নাকি? বিনা পয়সা গ্যাস পাচ্ছেন? এ হল গ্যাস বেলুনের থেকেও বড় গ্যাস।
দেশের বরাত বিদেশে : তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ইছাপুর গান সেল ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেশের বরাত কেন বিদেশে দিয়েছো? সৌধ, রাস্তাঘাট, জল— সব কিছু করেছি আমরা। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ছয় লেনের করা হয়েছে। ডানকুনি থেকে কল্যাণী পর্যন্ত ইকোনমিক করিডর হচ্ছে। বলে, ওরা এইমস করেছে। আমরা ১৮০ একর জমি দিয়েছি বিনামূল্যে। ওরা বলে জল দিয়েছি। এই জলে আমরাও টাকা দিই। ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। রেশনের জন্য আমরা গত ২ বছর ধরে সব টাকা দিয়েছি। রেশনও বিনা পয়সায় আমরাই দিই।