বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩০০ ছুঁয়েছে। কিন্তু এতবড় দুর্ঘটনার দায় কার? এই নিয়ে যখন রাজনৈতিক তরজা চরম আকার নিয়েছে ঠিক সেই সময় নবান্নে(Nabanna) সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তুলে ধরলেন বর্তমান সময়ে রেলের(Rail) ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা। পাশাপাশি কুৎসাকারীদের তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, “দায়িত্ব পালন না করে কুৎসা করা হচ্ছে। গোধরাকাণ্ডে(Godhara) কতজনের মৃত্যু হয়েছিল? কতজন মারা গিয়েছিল?”
রবিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি কালকে ওখানে গিয়েছিলাম। আপনারা শুনেছেন একটা খারাপ কথা বলিনি। আমি কোনও আক্রমণ করিনি। রেলমন্ত্রীও আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি বললে আরও বলতে পারতাম। কারণ রেলটা আমি হাতের তালুর মতো জানি। সিগন্যালিং সিস্টেম কেউ দেখেই না। অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস ছিল না কেন। রেল বাজেটও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলভবনও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলকে বেচার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম এই সময়টা রাজনৈতিক কথা বলব না। হঠাৎ আমার কাছে একটা ম্যাসেজ এল। তাতে তাঁরা একটা লিস্ট দিয়েছে আমার সময় কত মারা গেছে রেল দুর্ঘটনায় আমি যে আধুনিক করে দিয়ে এসেছিলাম রেলকে তার জন্যই দুর্ঘটনা কমেছে। যে তথ্য ওরা দিয়েছে ওটা ভুল ইনফরমেশন। আমি তো এখন রেলমন্ত্রকে নেই।”
এরপর সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি যদি জিজ্ঞাসা করি গোধরায় কতজন মারা গিয়েছিল। আমি তো সব করে দিয়ে এসছিলাম বলে রেলটা স্বাভাবিক ছিল। যাদের দায়িত্ব ছিল নৈতিকতার তারা দায়িত্ব না নিয়ে আমার সময়ে কত মরেছে হিসেব করতে বসেছে। সেই সময় চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগানো হয়েছিল। কতজন মানুষ মারা গিয়েছিলেন? আপনাদের সময় অনেক দুর্ঘটনা হয়েছে। আমরা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি কারণ দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এত মানুষের মৃত্যুর পর তো ক্ষমা চাইতে পারতেন। এটা সম্পূর্ণ গাফিলতি। কোনও কো-অর্ডিনেশন ছিল না। না হলে ৮-১০ মিনিটে কলিশন হতে পারে না।”
আরও পড়ুন- ‘সংখ্যা আরও বাড়তে পারে’ মৃতদের পরিসংখ্যান তুলে ক্ষোভ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
পাশাপাশি নিজে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কী কী কাজ করেছেন তাঁর হিসেব দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার রেলমন্ত্রকে কেউ মারা গেল চাকরি দেওয়া হত। আমরা রেলে প্রথম অ্যান্টি কলিউসান ডিভাইস লাগাই। আনম্যানড লেবেল ক্রসিংকে ম্যানড করি। ৪০০ লেবেল ক্রসিংয়ে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। অ্যান্টি কলিউসান ডিভাইসের কৃতিত্ব কেন্দ্রের নেই। আমি নিজে মাডগাও গিয়ে অ্যান্টি কলিউসান ডিভাইস নিয়ে আসি। আমরা রেলের ভাড়া একপয়সাও বাড়াইনি। এখন একটা স্টেশনে যেতে ৩০ টাকা লাগে। মুম্বইয়ে রেলওয়ে বিকাশ কর্পোরেশন লিমিটেড আমরা করেছিলাম। দিল্লিতে মেট্রোর সমস্যা আমরা সামলে উদ্বোধন করেছিলাম। নিজেদের দশ ঢাকতে অন্যকে গালি দেওয়াটা ঠিক নয়। মৃতদেহ লোকানো হচ্ছে। ঝগড়া করার জন্য অনেক সময় রয়েছে। মৃতদেহ নিয়ে যারা রাজনীতি করে তাদের ধিক্কার।