প্রতিবেদন : ত্রিপুরা, অসম, গোয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের লক্ষ্য এবার উত্তরপ্রদেশ। সেই লক্ষ্যেই মোদির বারাণসী যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের হেভিওয়েট দুই নেতা দলে যোগ দেওয়ার পরেই নেত্রীর এই ঘোষণায় রাজনৈতিকমহলে তুমুল চাঞ্চল্য। রাজনৈতিকমহল বলছে, তৃণমূল এবার সদর দফতরে কামান দাগা শুরু করল।
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া দুই রাজনৈতিক নেতাই রাজনৈতিক ঐতিহ্যে উত্তরপ্রদেশে পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখ। রাজেশপতি ত্রিপাঠী ও ললিতপতি ত্রিপাঠী। প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলাপতি ত্রিপাঠীর দুই নাতি। দুজনেই রাজ্যের প্রাক্তন বিধায়ক। ললিত আবার রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের সহসভাপতি ছিলেন। বিজেপির অন্দরমহলে প্রবেশ করে তৃণমূলের প্রভাব বিস্তার যে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে, তা মালুম পাচ্ছে গেরুয়াবাহিনী।
আরও পড়ুন : গোয়ার চায়ের দোকানে মিটিং করব, চ্যালেঞ্জ মমতার
শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক সভা শেষে কংগ্রেসের দুই শীর্ষস্থানীয় নেতার যোগদান পর্বে নেত্রীর স্পষ্ট কথা, দুজনেই কিন্তু কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করে তবেই তৃণমূল কংগ্রেসে এলেন। ত্রিপাঠী ভাইয়েরা আমাকে উত্তরপ্রদেশ যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কালীপুজো, ছট পুজোর পর সময় বুঝে যাব। বারাণসী যাব। সঙ্গে অভিষেকও যাবে। লখনউ আমাদের অচেনা নয়। এলাহাবাদও আমরা চিনি। মানুষ চাইছেন, তাই অন্য রাজ্যেও যাব। কিন্তু মোদির বারাণসী যাওয়া যে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণের দিক থেকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ত্রিপাঠী ভাইয়েরা বলেন, গোটা দেশ দেখছে, দিদি কীভাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ছেন। বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে জয় একটা ইঙ্গিত। উত্তরপ্রদেশের মানুষও দিদিকে আপন করে নেবেন। লড়াই হবে, আন্দোলন হবে। সামনে থাকবেন দিদি। পাল্টা নেত্রী বলেন, আমরা ওখানে গিয়ে লড়াই করব না। ওখানকার মানুষ লড়াই করবেন। আমরা পাশে থাকব।
নেত্রী জানতেন কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে আসার অর্থই হল বিতর্ক। তাই রাজেশ-ললিতের দলে আসা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের উদ্দেশে বলেন, গত ৭ বছর ধরে কংগ্রেস কেন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করল না! নোটবন্দি, সিএএ, এনআরসি, গ্যাস, পেট্রল-ডিজেলের দামবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের চড়া দাম নিয়ে কংগ্রেস কেন লড়েনি? কংগ্রেস লড়েনি বলেই তো তৃণমূল কংগ্রেসকে পাল্টা লড়াইয়ে নামতে হয়েছে। হাতরাস, লখিমপুরে যখন তৃণমূলের সাংসদরা লড়াই করে পৌঁছে গেল, তখন কংগ্রেস সার্কিট হাউসেই বসে ছিল। আমরা মাথা নুইয়ে বসে থাকার বান্দা নই।
আরও পড়ুন : ত্রিপুরার মতো গোয়ায় তৃণমূলকে আটকাতে নামল বিজেপি-পুলিশ
ত্রিপুরার পর এবার গোয়াতেও তৃণমূল কংগ্রেসের উপর হামলার অভিযোগ। কর্মসূচি বানচাল করে দেওয়া হয়েছে। নেত্রী বলেন, আমরা সর্বভারতীয় দল। অথচ সর্বত্র ওরা আটকাচ্ছে। এভাবে পারবে তৃণমূলকে আটকাতে? উত্তরপ্রদেশে আমি যাব, দলের নেতার যাবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করব। তৃণমূল কংগ্রেসকে মানুষ বিশ্বাস করে। বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। পরিবারের মতো হয়ে কাজ করতে হবে। জয় হবে আমাদের।