প্রতিবেদন : পুজোর আগে বন্যা-পরিস্থিতির তোয়াক্কা না করে লাগাতার জল ছেড়েই চলেছে ডিভিসি। আগের ছাড়া জলই এখনও পুরোপুরি নামেনি। তার মধ্যেই বুধ-বৃহস্পতির পর শুক্রবারও তিন জলাধার থেকে বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ল ডিভিসি। এদিন সকালে পাঞ্চেত থেকে ২০ হাজার কিউসেক, মাইথন থেকে ৬ হাজার কিউসেক এবং দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকেও বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে। ডিভিসি এই দৈনন্দিন জল ছাড়ায় এখনও জলের তলায় দক্ষিণের বিভিন্ন জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
আরও পড়ুন- উত্তরপ্রদেশে কালা জাদুর বলি দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র, গ্রেফতার শিক্ষক-সহ ৫
প্লাবিত হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়া। টানা ১০ দিন ধরে জলমগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল ও ডেবরা ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। জলস্তর বেড়েছে শিলাবতী নদীতে। চন্দ্রকোনার ঘোষকিরা গ্রাম জলে ডুবেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে। অস্থায়ী নড়বড়ে কাঠের সেতুর উপর দিয়েই চলছে ঝুঁকির যাতায়াত। কোথাও হাঁটুজল, আবার কোথাও একগলা জল জমে রয়েছে দিনের পর দিন ধরে।
একরের পর একর চাষের জমিও জলের তলায়। মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে। কোথাও কলার ভেলা তো কোথাও জলের ড্রামকে নৌকা বানিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। হাওড়ার আমতাতেও বিভিন্ন এলাকায় অনেকগুলি বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে। প্রশাসনের তরফে সেগুলি দ্রুত মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে বিধায়ক সুকান্ত পালের তত্ত্বাবধানে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলি সরেজমিনে ঘুরে দেখলেন সেচ দফতরের আধিকারিক-সহ স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ররা। জরুরি ভিত্তিতে কিছু বাঁধ মেরামতির কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জলমগ্ন এলাকাগুলিতে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রশাসনের তরফে।
আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ প্রত্যেকদিন নিজে বন্যা-কবলিত এলাকায় পৌঁছে ত্রাণসামগ্রী ও চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার খাজুরি, বিহারিচক, দামোদরচক-সহ বিভিন্ন জলমগ্ন গ্রামে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন বিধায়ক হুমায়ুন কবির। বীরসিংহপুর, পশ্চিম বৈতা, বাহাদুরপুর এলাকাতেও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয় বিধায়কের উদ্যোগে।