রাজ্যের সীমানা পেরিয়ে মায়ের কাছে তরুণীকে ফিরিয়ে দিল মঙ্গলকোট থানার পুলিশ

Must read

কলেজ থেকে ফেরার পথে কান্না জড়ানো গলায় মাকে ফোন করে বলেছিলেন, “আমি ফিরে আসছি।” তারপরে কেউ একজন হাত থেকে ফোনটা নিয়ে আশ্বাস দেন “আপকা লেড়কি মেরে সাথ হ্যায়, ও ঠিক হ্যায়”। তারপর আর মেয়ের কোনও হদিশ পাননি মঙ্গলকোটের (Mongalkote) ধারসোনা গ্রামের বাসিন্দা ফরিদা বিবি। পুলিশে (Police) অভিযোগ জানান তিনি। কিন্তু সেই অভিযোগ ছিল নিতান্তই মিসিং ডায়েরি। সেইমতো তদন্ত শুরু করে মঙ্গলকোট (Mongalkote) থানার পুলিশ। কিন্তু খোঁজ মিলছিল না। এরপর মেয়ে আজমিরা খাতুন ওরফে মালা কেমন আছে? কোথায় আছে? জানতে আকুতি জানান ফরিদা। দায়ের করেন অপহরণের অভিযোগ। চারিদিকে খোঁজ শুরু করে পুলিশ। অবশেষে পুলিশের তৎপরতায় ওড়িশার বালাসোর থেকে সন্ধান পাওয়া যায় ‘হারিয়ে যাওয়া’ আজমিরার। তবে কোনও অপহরণ বা নারী পাচার নয়, নিতান্তই প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছেন তরুণী। সংসার পেতেছেন প্রিয়জনের সঙ্গে।

তবে তাঁকে পূর্ব বর্ধমানের ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ। কাটোয়ার এসডিপিও কৌশিক বসাক (Katwa SDPO Kaushik Basak) জানান, মেয়ে হারিয়ে গিয়েছে বলে প্রথমে মিসিং ডায়েরি করিয়েছিলেন ফরিদা বিবি। কিন্তু পরে তিনি অপহরণের লিখিত অভিযোগ জানানোয় সেইমতো তদন্ত শুরু হয়। মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে ওড়িশার থেকে সন্ধান পাওয়া যায় তরুণীর। সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে পাঠানো হয় কোইচর ফাড়ির ভারপ্রাপ্ত অফিসার লাল্টু পান্ডেকে। সঙ্গে ছিলেন আর একজন মহিলা পুলিশ কর্মী। আজমিরা তাঁদের জানান, কেউ তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়নি। তিনি স্বেচ্ছায় বলরামগাদি এলাকার বাসিন্দা শেখ ঈদুল কাদরির সঙ্গে ঘর ছেড়েছেন। বলরামগাদি বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, মেয়েটি স্বেচ্ছায় সেখানে গিয়ে বিয়ে করে, সংসার করছেন। মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই তরুণীকে পূর্ব বর্ধমানের ফিরিয়ে এনেছেন।

কাজটা পুলিশের কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ প্রথমে হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়। এরপর অপহরণের অভিযোগ। অপহরণ বা নারী পাচার- কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া যায়নি। সে কারণে আটঘাট বেঁধে নেমেছিলেন তদন্তকারীরা। এখানে সময় একটা বড় বিষয় ছিল। কারণ, সত্যিই যদি অপহরণ বা পাচারের মতো কোনও ঘটনা ঘটে থাকত, তাহলে দেরি হয়ে গেলে বড় বিপদ হওয়ার আশঙ্কা ছিল। সেই কারণেই অত্যন্ত সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করে গোটা টিম। আজমিরাকে দ্রুত ফিরিয়ে আনা হয় মঙ্গলকোটে। আদালতে তোলা হলে সেখানেও আজমিরা জানান তিনি স্বেচ্ছায় গিয়েছিলেন। তাঁকে তাঁর গন্তব্য ঠিক করতে বলে আদালত। আপাতত মায়ের কাছে ফিরে গিয়েছেন আজমিরা। পুলিশের তৎপরতায় মেয়ের হদিশ পেয়ে আপ্লুত মা ফরিদা।

Latest article