বিভাজনের রাজনীতি করে পদমর্যাদা ধুলোয় মিশিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, খোলা চিঠিতে নিশানা মনমোহনের

Must read

প্রতিবেদন: দেশের শেষ দফার লোকসভা ভোটের আগে বর্তমানকে বিঁধে প্রাক্তন বললেন, তিনি রাজধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে কুৎসিত বিভাজনের রাজনীতি করা চরম দুর্ভাগ্যজনক। খোলা চিঠিতে নরেন্দ্র মোদির নিন্দা করে ড. মনমোহন সিং (Manmohan Singh) বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজের পদমর্যাদাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: মা-বোনেরা দিচ্ছে ডাক মিথ্যুক স্বৈরাচারী নিপাত যাক

লোকসভা নির্বাচনের শেষদফার আগে মুখ খুলে বিদ্বেষ ও বিভাজনের রাজনীতির তীব্র নিন্দা করে মনমোহন সিং বলেছেন, মোদিই দেশের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি নিজের পদ ও চেয়ারের মর্যাদাকে মাটিতে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন। লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বের আগে দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে লেখা ওই খোলা চিঠিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, আমি এই নির্বাচনী প্রচারের সময় রাজনৈতিক আলোচনাগুলিকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছি। মোদিজি জঘন্য ‘ঘৃণামূলক’ বক্তৃতা দিয়েছেন, যার মধ্যে বিভাজনের রাজনীতির ছাপ স্পষ্ট। তিনিই হলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি তাঁর পদমর্যাদাকে নষ্ট করেছেন এবং এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের গুরুত্বকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। সমাজের কোনও বিশেষ শ্রেণি বা বিরোধী দলকে টার্গেট করার জন্য পূর্ববর্তী কোনও প্রধানমন্ত্রী এমন খারাপ, অসংসদীয় ও নিম্নরুচির ভাষা ব্যবহার করেননি। মোদি আমার বক্তব্যকে নিয়েও দেশবাসীর কাছে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আমি আমার জীবনে কখনওই এক সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায় থেকে আলাদা করিনি। এটা বিজেপির বিশেষ অভ্যাস এবং ঘোষিত অ্যাজেন্ডা। কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং খোলা চিঠিতে লিখেছেন, পাঞ্জাবে ৭৫০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখে সে প্রসঙ্গে কোনও কথা শোনা যায়নি। অথচ আন্দোলনকারীদের তিনি পরজীবী বলে কটাক্ষ করেছেন। মনমোহনের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে ৩০ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে। কিন্তু ১০ বছরে মোদি সরকার তা পূরণ করেনি। উল্টে সেনাবাহিনীতে অস্থায়ী নিয়োগ করেছে। যা থেকে বিজেপির জাতীয়তাবাদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। খোলা চিঠিতে সেনাবাহিনীতে পাঞ্জাবের ভূমিকার ইতিহাসও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। লিখেছেন, লোকসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবের ভোটারদের কাছে ভালবাসা, শান্তি, ভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতির সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানাই। পাঞ্জাবিদের উচিত উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির পক্ষে ভোট দেওয়া। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে শুধুমাত্র কংগ্রেসই একটি উন্নয়নমুখী প্রগতিশীল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে, যেখানে গণতন্ত্র এবং সংবিধান সুরক্ষিত থাকবে।
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিং বিজেপিকে কড়া আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, গত দশ বছরে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক উত্থান-পতন ঘটেছে। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন নোটবন্দি, জিএসটি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিজেপি সরকারের অধীনে বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যেখানে ইউপিএ সরকারের সময় এটি ছিল প্রায় ৮ শতাংশ। মোদি জমানায় সামগ্রিক ভাবে গৃহস্থের সঞ্চয় এবং আমজনতার ক্রয় ক্ষমতাও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে দাবি করেছেন মনমোহন সিং। সার্বিকভাবে এই ১০ বছরে ভারত সবদিক থেকেই নিম্নগামী হয়েছে বলে দাবি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর।

Latest article