সংবাদদাতা, কালনা ও কাটোয়া : শনিবারও পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে জলযন্ত্রণা অব্যাহত। কাটোয়ার দুটি ব্লক, কেতুগ্রাম ২ ও মঙ্গলকোট-সহ জেলার ১২ ব্লক কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত বলে জেলা প্রশাসনের খবর। ক্ষতিগ্রস্ত বাকি ব্লকগুলি হচ্ছে বর্ধমানের দুটি, রায়নার দুটি, মেমারি ২, আউশগ্রাম ২ ও জামালপুর। কাটোয়া থেকে মেমারি রাজ্য সড়ক কামাল মোড়ের কাছে ভেঙে পড়েছে। কাটোয়া থেকে করুইগামী রাস্তার উপর পঞ্চাননতলার কাছে নদীর সেতুর উপর দিয়ে জল বইতে থাকায় যোগাযোগ বন্ধ। জেলার ১৫০টি গ্রাম কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ৭২টি বাড়ি পুরোপুরি ও ৪১০টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। খোলা হয়েছে ত্রাণশিবির।
আরও পড়ুন-নিয়ম মেনেই শিল্পগোষ্ঠীকে জমি
প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার ত্রিপল বিলি হয়েছে। মন্তেশ্বরের জামনায় জলবন্দি ৫০ জনকে উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। কালনার চকবাজারে একটি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। ভাগীরথী লাগোয়া ১০ নং ওয়ার্ডে প্রায় ৬০ মিটার এলাকাজুড়ে লম্বা ফাটল দেখা দিয়েছে। ভাগীরথীর জল বাড়ায় নাদনঘাটের ডাঙাপাড়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নসরতপুর জেটিঘাটের কাছে প্রায় ৩০ ফুট এলাকা ভেঙেছে। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মোবিন হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়টি সেচ দফতরের নজরে আনা হয়েছে।’ কাটোয়ার দাঁইহাট ও নদিয়ার মাটিয়ারির মধ্যে যোগাযোগের ফেরিঘাট প্লাবিত। শনিবারও কাটোয়া, কালনা ও দাঁইহাট শহরের বহু এলাকা জলমগ্ন। কালনার মহকুমা শাসক শুভম আগরওয়াল ও কাটোয়ার মহকুমা শাসক অর্চনা ওয়াংখেড়ে নিজের নিজের এলাকার জলস্ফীতি ও ত্রাণশিবিরগুলি সরেজমিনে দেখেন। বহু জায়গায় জমা জল সরাতে রাস্তা কাটা হয়েছে। সেগুলি সংস্কার করা হবে বলে আশ্বাস দেন জেলা সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার। তিনি জানান, ভাগীরথী-সহ বহু নদীবাঁধ, রাস্তা, সেতু, কালভার্ট, বাড়ি ও চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রাথমিকভাবে দ্রুত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হচ্ছে। জল নামলেই মেরামতিতে হাত দেওয়া হবে। কালনার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-দিন বদল, খাদিতে এবার যুক্ত হল ছোটরাও
অন্যদিকে, কাটোয়া, আউশগ্রাম ও গুসকরায় ইতিমধ্যে ত্রাণসামগ্রী দিয়েছে প্রশাসন। বর্ধমান, গুসকরা ও মেমারি পুর অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩৩ গ্রাম, ১৩৬১টি আংশিক বাড়ি ও ২১২ ক্ষতি হয়েছে। ফসল নষ্ট হয়েছে ৫১১০ হেক্টের জমির। দেওয়া হয়েছে ২৭৭৬টি ত্রিপল। এদিকে শনিবার রাতে পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে নতুন করে ডিভিসি ৯০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দামোদরের নিম্ন তীরবর্তী এলাকায়। ফলে প্রশাসন জারি করে কমলা সতর্কতা।