প্রতিবেদন : ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। মন্দিরবাজার এলাকায় ভেঙে পড়ল একাধিক কাঁচা বাড়ি। আশ্রয়হীন বেশ কয়েকটি পরিবার। শুক্রবার ভোররাত থেকে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে একটানা বৃষ্টি শুরু হয় গোটা জেলায়। এরই ফলস্বরূপ মন্দিরবাজার বিধানসভার গাববেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ কয়েকটি কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ে। বাড়িগুলি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ায় ঘরের মধ্যে থাকা আসবাবপত্র সবটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়হীন বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মন্দিরবাজারের বিধায়ক জয়দেব হালদার। গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে পড়ায় গৃহহীন লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-আমাকে খুন করার চক্রান্ত চলছে বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ
সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে ডানার প্রভাবের ঝড় এবং বৃষ্টি চলেছে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দিনরাত। ঝড়ের খুব বেশি প্রভাব না পড়লেও প্রচুর গাছপালা ভেঙেছে। পাথরপ্রতিমা ব্লকের শ্রীধরনগর এলাকায় বাড়ির ছাদের উপর ভেঙে পড়া গাছ সরাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক নাবালকের। মৃতের নাম শুভজিৎ দাস (১৭)। অন্যদিকে, প্রবল বৃষ্টির জল জমে গিয়েছে গঙ্গাসাগরের মেলার মাঠে। পাশাপাশি, উপকূলবর্তী এলাকার ঝোড়ো হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টির ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা প্রতিটি ব্লকের আধিকারিকদের চাষের জমি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই বিষয়ে একটি তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। কত মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে, তা নিয়েও ব্লক প্রশাসনকে তালিকার তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই দুর্যোগের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক হাজার মানুষকে ত্রাণশিবিরে রেখে শুকনো খাবার ও পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। এদিন সকালে গঙ্গাসাগরের একাধিক ত্রাণশিবির ঘুরে দেখেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, সাংসদ বাপি হালদার প্রমুখ। রায়দিঘি, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জের নদীবাঁধও ঘুরে দেখেন তাঁরা। কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার কুলপি, হারা টেংরা চক-সহ বিভিন্ন নদীতীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখেন। কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাও কাকদ্বীপের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যান এবং ত্রাণশিবিরের মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। সব মিলিয়ে ডানার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূল এলাকা ও সুন্দরবনের দুর্গত মানুষের পাশে রয়েছে প্রশাসন।