প্রতিবেদন : ব্যক্তিগতভাবে ইস্তফা না দিলে, তা পদত্যাগ হিসাবে গৃহীত হয় না। সিনিয়র চিকিৎসকদের গণ-ইস্তফা সম্পর্কে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-নারীর সুরক্ষায় দশভুজা রূপে রাজ্য পুলিশ, হাতিয়ার ১০ প্রকল্প
শনিবার দুপুরে নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি জানান, এইসব গণ-ইস্তফা সরকারের কাছে কোনও গ্রাহ্য পদত্যাগ নয়। তাঁর বক্তব্য, প্রতিটি ক্ষেত্রেই গণ-ইস্তফার কথা উল্লেখ রয়েছে। সার্ভিস রুল অনুসারে, ইস্তফাপত্র অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে দিতে হয়। না হলে সেটি পদত্যাগপত্র নয়। এই বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে রাজ্য সরকারের তরফে স্পষ্টভাবে তা জানিয়ে দেওয়া হল। তিনি জানান, বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে জমা পড়েছে এগুলি। সঙ্গে তিনি এটাও জানিয়েছেন, আরজি কর এবং অন্যান্য হাসপাতালগুলি মিলিয়ে একাধিক গণ-ইস্তফার চিঠিতে এখনও পর্যন্ত দু’শোর কিছু কম সই জমা পড়েছে।
উল্লেখ্য, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থনের বার্তা দিতেই কিছুদিন আগে একাধিক সরকারি হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারেরা গণ-ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। গণ-ইস্তফার এই নাটক প্রথম শুরু হয়েছিল আরজি কর হাসপাতাল থেকেই। পরে কলকাতার অন্যান্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে গত বুধবার সরকার পক্ষ আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি বলেই দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার নতুন কিছু বলছে না। শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়ে অনশন তুলে নেওয়ার কথা বলছে। যদিও অনশন যে এভাবে উঠবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের অনশন কর্মসূচির শনিবার অষ্টম দিনে পা রেখেছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
শুক্রবার রাতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ জানান অনশন প্রত্যাহার করার জন্য। পুলিশের তরফে একটি চিঠিও পাঠানো হয় অনশন তোলার অনুরোধ করে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভবনের তরফেও শুক্রবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জুনিয়র ডাক্তারের দাবির তালিকায় থাকা বিভিন্ন কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হয়। দেড় পাতার ওই বিবৃতি জানাচ্ছে, চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যিল কলেজ জুড়ে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। বসানো হচ্ছে মোট ৭,০৫১টি সিসিটিভি। তৈরি করা হচ্ছে ৮৯৩টি নতুন ডিউটি রুম এবং ৭৭৮টি ওয়াশরুম। পাশাপাশি, যথাযথ আলোর ব্যবস্থা, অ্যালার্ম সিস্টেম এবং বায়োমেট্রিক অ্যাক্সেস কন্ট্রোল রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলিতে বসানো হচ্ছে। রাজ্য সরকার শুধুমাত্র এই প্রকল্পগুলির জন্য ১১৩ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করেছে। আরজি কর ছাড়া অন্য হাসপাতালগুলিতে কাজ ৯০ শতাংশ শেষ। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে বাকি কাজও শেষ হয়ে যাবে বলেও আশা স্বাস্থ্য ভবনের।