প্রতিবেদন : মার্কিন মহাকাশবিজ্ঞান গবেষণায় জোর ধাক্কা! একসঙ্গে এই অগ্রণী সংস্থার প্রায় ২০ শতাংশ কর্মী চলতি বছরের মধ্যেই ছাঁটাই হতে চলেছেন। কর্মী ছাঁটাইয়ের এই ঘটনা শুধু অভ্যন্তরীণ রদবদল নয়, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক মদতে বিজ্ঞানবিরোধী মনোভাব ও অপেশাদার নেতৃত্বের চাপ বিশ্বের শীর্ষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণা সংস্থাকে গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। চলতি বছরেই ৩৮৭০ কর্মীছাঁটাইয়ের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। এরপর নাসায় ১৪ হাজার কর্মী অবশিষ্ট থাকবেন।
সম্প্রতি নাসার অন্তর্বর্তী প্রধান নিযুক্ত হয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান ও ডোনাল্ড ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ শ্যন ডফি। যাঁর মহাকাশবিজ্ঞান বা প্রযুক্তিগত বিষয়ে কোনও বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই বলে মত মার্কিন বিশ্লেষকদের। বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশ একে ‘রাজনৈতিক নিয়োগের বিপজ্জনক উদাহরণ’ বলে মনে করছেন।
নাসার এক অভ্যন্তরীণ চিঠিতে কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, নতুন নেতৃত্ব গবেষণার স্বাধীনতা খর্ব করছে এবং মহাকাশ মিশনগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। কর্মীদের মতে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, যেমন মঙ্গল গ্রহে স্যাম্পল রিটার্ন মিশন বা লুনার গেটওয়ের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।
আরও পড়ুন-ডায়মন্ড হারবার লালপোল সেতুর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী
বিশ্বজুড়ে যখন মহাকাশ গবেষণায় প্রতিযোগিতা বাড়ছে, তখন নাসার মতো সংস্থায় বিজ্ঞান নয়, বরং রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা মহল নাসার এই হঠাৎ রূপান্তরকে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য আক্রমণ বলে বর্ণনা করছে। ওয়াশিংটনের এক বিজ্ঞাননীতি গবেষক বলেন, নাসা শুধুমাত্র একটি মহাকাশ সংস্থা নয়, এটা আমেরিকার ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতীক। আর এই প্রতীককেই এখন দলীয় স্বার্থে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
যখন চিন, ইউরোপ এবং ভারত মহাকাশ অভিযানে অভাবনীয় অগ্রগতি করছে, তখন নাসার মতো একটি সংস্থায় অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের হঠাৎ ছাঁটাইয়ে আমেরিকা মহাকাশ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজ্ঞানকে রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি বানালে তা শুধু সংস্থার ক্ষতি নয়—দেশের ভবিষ্যতের জন্যও বড় বিপদ।