দমকলের আধুনিকীকরণে মাস্টারপ্ল্যান

রাজ্যের দমকল দফতর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও কার্যকর করতে এক সর্বাঙ্গীন মাস্টার প্ল্যান হাতে নিয়েছে।

Must read

প্রতিবেদন : রাজ্যের দমকল দফতর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও কার্যকর করতে এক সর্বাঙ্গীন মাস্টার প্ল্যান হাতে নিয়েছে। সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানির পর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনো এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কার্যকর অগ্নিনির্বাপণই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

আরও পড়ুন-বাবা ও স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক! মৃত্যুর আগে ভিডিওতে বিস্ফোরক অভিযোগ পুত্রের, খুনের মামলা দায়ের হল প্রাক্তন ডিজি ও প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার ইঞ্জিন দ্রুত যাতে পৌঁছতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার আদলে ‘গ্রিন করিডর’ চালুর প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট নম্বর চালু করে পুলিশের ধাঁচে একটি ‘ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোল রুম’ স্থাপন করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। ওই কন্ট্রোল রুম থেকে রাজ্যের যে কোনও অংশে জরুরি ভিত্তিতে নির্দেশ পাঠানো সম্ভব হবে।
প্রযুক্তি-নির্ভর এই মাস্টার প্ল্যানের ড্রোন ব্যবহারের ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিশেষত ঘিঞ্জি ও সরু গলির এলাকায় যেখানে বড় গাড়ি ঢোকানো কঠিন, সেখানে ড্রোনের মাধ্যমে আগুনের উৎস চিহ্নিত করা, উদ্ধারকাজে সহায়তা করা এবং পাইপ সংযুক্ত করে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া চালুর পরিকল্পনা চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইরাইজ় ভবন, বস্তি এলাকা ও দুর্গম স্থানে এই ব্যবস্থা অগ্নিনির্বাপণে বড় ভূমিকা নিতে পারে। এর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আরও ২৫টি নতুন দমকলকেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্তও হয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং-সহ একাধিক জেলায় ঘনবসতিপূর্ণ ও বাণিজ্যিক এলাকায় এই নতুন কেন্দ্রগুলি তৈরি করা হবে। সরু গলিতে পৌঁছনোর সুবিধার জন্য ছোট ফায়ার ভেহিকল ও মোটরবাইকও কেনা হচ্ছে।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে দেখা গিয়েছে—বাণিজ্যিক ভবনগুলিতে প্রায়শই ‘ফায়ার এগজ়িট’ বন্ধ, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র অকেজো এবং দাহ্য পদার্থের অযথা মজুত থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতি এড়াতে বাণিজ্যিক কেন্দ্র ও বাজারগুলিতে ‘ফায়ার অডিট’ প্রক্রিয়া কঠোরভাবে চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দমকল দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, শুধুমাত্র প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, নাগরিক ও ব্যবসায়িক সচেতনতা বাড়ানোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই মাস্টার প্ল্যান কার্যকর হলে আগুন নেভানোর গতি, দক্ষতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা— সবই এক ধাপ এগোবে বলে আশা দফতরের।

Latest article