কোচবিহারের মাথাভাঙা কলেজ মাঠ উপচে পড়ল জনস্রোতে

তার মাঝেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে ডেকে নিলেন বিএসএফের গুলিতে নিহত প্রেমকুমারের বাবা-মাকে

Must read

প্রতিবেদন : কয়েক লক্ষ মানুষ। যতদূর চোখ যায় শনিবার মাথাভাঙা কলেজ ময়দানে শুধু কালো-কালো মাথা। তার মাঝেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে ডেকে নিলেন বিএসএফের গুলিতে নিহত প্রেমকুমারের বাবা-মাকে। কান্নায় ভেঙে-পড়া বাবা-মাকে পরিবারের বড় ছেলের মতো সান্ত্বনা দিলেন (চোখের জল মুছিয়ে দিলেন)। শুধু তা-ই নয়, বিএসএফ কী নৃশংসভাবে প্রেমকুমারকে খুন করেছে তার চিত্র তুলে ধরেন। বলেন, এই মা-কে দেখে মনে হয় এঁর গর্ভে জঙ্গি জন্মাতে পারে! গোটা মাঠে তখন পিন-পতনের স্তব্ধতা।

আরও পড়ুন-২০ মার্চ দিল্লিতে ফের কৃষক আন্দোলন

অভিষেক বললেন, যতদূর যেতে হয় যাব কিন্তু আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। আজই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলব। হাইকোর্টে যাব, প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাব কিন্তু শেষ দেখব। আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিক নিশীথ প্রামাণিক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক! তোপ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ তাঁর সংযোজন, রাজবংশী বলে রাজনীতির মায়াকান্না কাঁদবে আর পরিবারটাকে ভাসিয়ে দিয়ে যাবে? এ আমি হতে দেব না। অভিষেকের মুখে একথা শোনার পর গোটা মাঠ হাততালি-উচ্ছ্বাসে ভেসে গেল।
কোচবিহারের রাজবংশী পরিবারের ছেলে দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের প্রেমকুমার বর্মন বেঙ্গালুরুতে কাজ করতেন। চার বছর পরে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে সকালে গিয়েছিলেন চাষের জমিতে। কিন্তু আচমকাই বিএসএফ গুলি করে প্রেমকুমারকে। নিজের চাষের জমিতেই লুটিয়ে পড়েন হতভাগ্য এই যুবক।

আরও পড়ুন-পড়ুয়াদের দেওয়া ট্যাব হঠাৎই ফেরত চাইছে হরিয়ানার বিজেপি সরকার

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রেমকুমারের দেহে ১৮০টি গুলির টুকরো পাওয়া গিয়েছে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসও এই বীভৎসতা দেখে শিউরে উঠেছেন, এ কথা জানিয়ে অভিষেক বলেন, কাশ্মীরে জঙ্গিদের মারার বন্দুক দিয়ে প্রেমকুমারকে মারা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তরক্ষণেই মৃত্যু হয়েছে ওই রাজবংশী যুবকের। অথচ তাঁর কাছ থেকে গরু, সোনা, গুলি-বন্দুক, বোমা কিছুই পাওয়া যায়নি। তাহলে, কেন তাঁকে গুলি করা হল? তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করা হল না কেন! প্রশ্ন অভিষেকের। এরপরেই তীব্র ধিক্কারে বিজেপিকে বিঁধে বলেন, যারা সবসময় রাজবংশী-দরদি সাজে। বাংলা ভাগ চায়। তারা একবারও প্রেমকুমার বর্মনের বাড়িতে গিয়ে খোঁজটুকুও নেয়নি! এমনকী বিএসএফের পক্ষ থেকেও কেউ যায়নি। অভিষেকের বক্তৃতার পুরো সময়টাই মঞ্চে ছিলেন প্রেমকুমারের মা-বাবা ও ভাই। এই পরিবারকে আশ্বস্ত করে অভিষেক বলেন, চিন্তা করবেন না আমি আপনাদের পাশে আছি।

Latest article