আইনের ঘাটতি নেই দেশে। দরকার তার সদ্ব্যবহার। ন্যায়বিচারের স্বার্থে বন্ধ হোক মিডিয়া ট্রায়াল। মঙ্গলবার লোকসভায় একটি বিলের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বললেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন লোকসভায় পাশ হয়ে গেল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা দুর্নীতি ঠেকানোর জন্য পাবলিক এগজামিনেশন বিল। এরপর বিলটি রাজ্যসভায় পাশ করানো হবে এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মুর স্বাক্ষর পেলেই আইনে পরিণত হবে বিলটি।
আরও পড়ুন- মধ্যপ্রদেশে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে হত ১১, এনআইএ তদন্ত চায় তৃণমূল
বিল নিয়ে মঙ্গলবার আলোচনায় তৃণমূলের তরফে বক্তব্য রাখেন লোকসভার মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, যে সমস্ত ধারার কথা বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সবগুলিরই উল্লেখ রয়েছে আগের ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং সম্প্রতি পাশ হওয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতায়। তাঁর মতে, আমাদের দেশে আইনের কোনও ঘাটতি নেই। তবে সেগুলি কার্যকর করার মধ্যে ঘাটতি রয়েছে। সংসদ আইন তৈরি করে। কেন্দ্রীয় সরকারকে তিনি প্রশ্ন করেন, গত ৫ বছরে এই ক্ষেত্রে কতগুলি অপরাধের ঘটনায় এই আইন কার্যকর করা হয়েছে, কতজনের বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে? কল্যাণ বলেন, আজ আমাদের দেশে সবকিছুতেই মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হোন বা রাজ্যের মন্ত্রী, সবাইকেই আজ মিডিয়া ট্রায়ালের সম্মুখীন হতে হচ্ছে যেকোনও স্পর্শকাতর ঘটনায়। কেন্দ্রীয় সরকারকে তাঁর পরামর্শ, যে কোওরকম অপরাধ, যা আদালতে বিচারাধীন, সেখানে মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ করতে হবে। ন্যায়বিচার দিতে হবে, যা হচ্ছে না।
মিডিয়া ট্রায়ালের প্রসঙ্গের মধ্যেই বাংলায় শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, অসফল ব্যক্তিরা সফল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এটাই প্রকৃত চিত্র। ৪, ৫, ৬ বছর পর তাঁরা আসছেন মামলা করতে। কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতি একটি রায়ের মাধ্যমে ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় খারিজ করে দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে শুধুমাত্র মিডিয়া ট্রায়ালের কারণে। তিনি আরও বলেন, একই বিচারপতি ১৫ হাজার জনের চাকরি বাতিল করেছেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় খারিজ করে দিয়েছে। কারণ, সেখানে আইনের মূল নীতি অনুসরণ করা হয়নি। তাঁর কথায়, যে কোনও নিয়োগের পরীক্ষায় এক বা দুই শতাংশের দ্বারা কোনও অন্যায় হতে পারে, সেক্ষেত্রে সবাইকে অপরাধী বলে চিহ্নিত করা চলবে না। আমাদের তরুণ সম্প্রদায় বুদ্ধিমান এবং তাঁরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। ফলে এক বা দুই জনের জন্য সকলকে দোষী বলা চলবে না।