শাড়ি পরে ঘোমটা দিয়ে বুড়িমাকে বরণ করেন পুরুষরা

পুজোর উদ্যোক্তারা বলছেন, প্রতিবছরই চতুর্থ পঞ্চমীর দিনে মাকে কাপড় পড়ানো হয়। ভক্তদের দান করা শাড়ি পড়ানো হয় মাকে।

Must read

সংবাদদাতা, হুগলি : ভদ্রেশ্বরের হৈমন্তিকা প্রসিদ্ধ বুড়িমা নামে। ২৩২ বছরের পুরনো ভদ্রেশ্বর তেঁতুলতলা বারোয়ারির পুজোয় জড়িয়ে রয়েছে এক অভিনব রীতি। এই পুজোয় শাড়ির বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশ্বাস করা হয় ঠাকুরকে যে শাড়ি পরানো হয় সেই শাড়ি যদি কোনও অবিবাহিত মেয়ে পায় তাহলে তার খুব দ্রুত বিয়ে হয়ে যায়। এমনকী কেটে যায় নানান বাধা বিঘ্ন। এখানে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, দশমীতে পুরুষরা শাড়ি পড়ে ঘোমটা দিয়ে বরণ করেন দেবীকে। পুজোর আগে বুড়ি মাকে শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে তোলেন পুজো উদ্যোক্তারা, সেই দৃশ্য দেখার জন্য ভিড় জমে যায় মন্দির প্রাঙ্গণে। অতীতে ফিরে গেলে জানা যায়, কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারাম সুর গৌরহাটিতে বাস করতেন। তিনি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অনুমতি নিয়ে দুই বিধবা কন্যাকে নিয়ে বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো করেন। পরবর্তীতে ব্যক্তিগত পুজো হয়ে যায় তেঁতুলতলা বারোয়ারি। এখানে দেবী পূজিত হন তন্ত্রমতে। প্রতি বছর পুজো শুরুর আগে প্রতিমা তৈরি হয়ে গেলে প্রতিমাকে কাপড় পরানো হয়। বেনারসি শাড়িতে সাজিয়ে তোলা হয় বুড়িমাকে। কয়েক হাজার শাড়ি পরে মাকে সাজানোর জন্য। এই বছরও ঘটেনি তার ব্যতিক্রম। প্রায় ২২৫টি বেনারসি শাড়িতে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে তেঁতুলতলা বুড়িমাকে।

আরও পড়ুন-তন্ময়ের পর সোমনাথ বহিষ্কারেই মুখরক্ষা

পুজোর উদ্যোক্তারা বলছেন, প্রতিবছরই চতুর্থ পঞ্চমীর দিনে মাকে কাপড় পড়ানো হয়। ভক্তদের দান করা শাড়ি পড়ানো হয় মাকে। বেনারসিতে সাজিয়ে তোলা হয় প্রিয় বুড়িমাকে। প্রত্যেক বছর প্রায় বেনারসি ছাপা শাড়ি ও অন্যান্য শাড়ি মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজারের এর কাছাকাছি শাড়ি থাকে মায়ের জন্য। মানুষের বিশ্বাস, তেঁতুলতলা বুড়িমায়ের যে শাড়ি সেই শাড়ি পড়লেই নাকি অবিবাহিতদের বিয়ে হয়। সেই কারণে ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে বুড়িমায়ের শাড়ি নেওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকেন। মায়ের পরনে যে বেনারসি
থাকে সেগুলি মূলত গরিব মেয়েদের বিয়েতে দিয়ে দেওয়া হয়।

Latest article