প্রতিবেদন : আর চব্বিশ ঘণ্টাও নেই। কলকাতা হবে মেসিময় (Lionel Messi)। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ফুটবলার কলকাতায় পা রাখার আগেই কার্যত মেসি-আবেগে ভাসছে গোটা বাংলা। মেসির সম্মানে যুবভারতীতে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের ‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর ২০২৫’-এর কলকাতা পর্ব নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে শহরের ফুটবলপ্রেমীদের। নিজের উপস্থিতির কথা ঘোষণা করে উন্মাদনার পারদ বৃহস্পতিবার আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন শাহরুখ কিং খান। স্বাভাবিকভাবেই টিকিটের জন্য হাহাকার অব্যাহত। প্রায় ১৪ বছর আগে (২০১১) এই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পা পড়েছিল ফুটবলের নয়া ঈশ্বরের। সেবার তিনি মাঠে নেমে খেলেছিলেন। ভেনেজুয়েলার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল আর্জেন্টিনা। জিতেছিল ১ – ০ গোলে। সেবারও তাঁর আসার অপেক্ষায় রাত জেগেছিল কলকাতা। এবারও রাতের কলকাতায় জনসমুদ্রের মধ্যে দিয়ে হবে মেসি বরণ। এবার তাঁর সঙ্গে থাকবেন আরও দুই পৃথিবী বিখ্যাত খেলোয়াড় লুই সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল কে।
এয়ারপোর্ট থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম লাগোয়া বেসরকারি বিলাসবহুল হোটেল পর্যন্ত গোটা যাত্রাপথে মেসির কনভয়ের সঙ্গী হতে তৈরি হয়ে আছেন হাজার হাজার যুবক-যুবতী।
আগামী কাল শনিবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাদশা শাহরুখ খান নিজেই এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন— তিনিও থাকছেন। থাকবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ফলে গত কয়েকমাস ধরে ঢিমেতালে বাজতে থাকে মেসির জয়গান এখন কয়েক হাজার ভোল্টের ডিজে হয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে দিচ্ছে। আগামী কাল কলকাতার সব রাস্তা শেষ হবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। ক্রিসমাসের আগেই উৎসবের চেহারা নিয়েছে কলকাতা।
মিয়ামি থেকে সরাসরি কলকাতায় আসছেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। মাঝে জেট ল্যাগ কাটানোর জন্য কিছুটা সময় তিনি দুবাইয়ে কাটাবেন। মেসি কলকাতায় নামছেন রাত দেড়টা নাগাদ। এরপর শনিবার সকাল সাড়ে ন’টা থেকে বেলা দুটো পর্যন্ত তাঁর ঠাসা প্রোগ্রাম শহরে। দেখা করবেন শহরের মান্যগণ্যদের সঙ্গে। তার মধ্যে আছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
কলকাতায় সকাল সাড়ে ন’টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত হবে মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠান। এরপর সাড়ে দশটা থেকে সওয়া এগারোটা পর্যন্ত মেসির মূর্তির ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠান। বেলা এগারোটা পনেরো থেকে এগারোটা পঁচিশ মিনিটের মধ্যে তিনি যুবভারতীতে পা রাখবেন। মেসি স্টেডিয়ামে আসার পর সাড়ে এগারোটায় তাঁর সঙ্গে যোগ দেবেন শাহরুখ খান। বারোটায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যুবভারতীতে আসবেন। থাকবেন লিয়েন্ডার পেজ ও বাইচুং ভুটিয়াও।
আরও পড়ুন- ৩ বছরে তিনবার, মোদি-রাজ্যে ফের সেতু-বিপর্যয়
বারোটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী ম্যাচ, সংবর্ধনা ও কথোপকথন। যুবভারতীর দর্শকাসন বাড়িয়ে ৭৫ হাজার করা হয়েছে। বহুমূল্যের টিকিটও শেষ মুহূর্তে কাউন্টার থেকে কাটার ধুম ছিল গত কয়েক দিনে। যুবভারতীতে মেসির সামনে মোহনবাগান মেসি অল স্টার্স ও ডায়মন্ড হারবার মেসি অল স্টার্সের মধ্যে একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। সেই ম্যাচের পর আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির হাতে বিশেষ উপহার তুলে দেবে মোহনবাগান ও ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাব। মোহনবাগান ১৯১১-র ঐতিহাসিক অমর একাদশের জার্সি মেসির হাতে তুলে দেবে। জার্সিতে লেখা থাকবে মেসির নাম ও জার্সি নম্বর ১০। ডায়মন্ড হারবার জার্সির পাশাপাশি দেবে নানা উপহারের ডালি নিয়ে গিফট বক্স। প্রীতি ম্যাচে মোহনবাগানের হয়ে খেলবেন ব্যারেটো, দীপেন্দু বিশ্বাস, শিলটন পালেরা। কোচ মানস ভট্টাচার্য। ডায়মন্ড হারবারের হয়ে বিক্রমজিৎ সিং, অভিষেক দাসদের সঙ্গে খেলবেন কিট ম্যান, ট্রেনার, ফিজিও, টিম ম্যানেজারও।
বেলা দুটোয় তিনি হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা হবেন।
কলকাতা পর্ব মিটিয়ে শুক্রবার দুপুরে হায়দরাবাদে পোঁছনোর পর সেখানে সেভেন আ সাইড ফুটবলে অংশ নেবেন মেসি। রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বিশিষ্টদের অনেকেই এই ম্যাচে খেলবেন। অতঃপর মেসির সম্মানে হায়দরাবাদে একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। হায়দরাবাদের পর মেসির গন্তব্য হল মুন্বই। ১৪ সেপ্টেম্বর সেখানে বেলা সাড়ে তিনটেয় ক্রিকেট ক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় প্যাডেল কাপে অংশ নেবেন আর্জন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। বেলা চারটেয় সেলিব্রিটি ফুটবল ম্যাচ। পরের অনুষ্ঠান বিকেল পাঁচটায় ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। সেখানে চ্যারিটি ফ্যাশন শোয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। পর দিন, ১৫ ডিসেম্বর দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর মেসি মিনার্ভা অ্যাকাডেমির খেলোয়াড়দের সঙ্গে মিলিত হবেন।

