খনির কর আদায় রাজ্যের অধিকার, রায় সুপ্রিম কোর্টের

সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, যেসব রাজ্যে খনি কিংবা খনিজ পদার্থ আছে, সেখানে জমির উপর কর আরোপের অধিকার রয়েছে সেইসব রাজ্যের।

Must read

প্রতিবেদন : শীর্ষ আদালতে জোর ধাক্কা খেল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, যেসব রাজ্যে খনি কিংবা খনিজ পদার্থ আছে, সেখানে জমির উপর কর আরোপের অধিকার রয়েছে সেইসব রাজ্যের। অর্থাৎ খনি ও খনিজ পদার্থের উপর কর বা সেস আরোপে রাজ্যের অধিকারকে স্বীকৃতি দিল শীর্ষ আদালত। যা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিঃসন্দেহে এক বড় ধাক্কা। রায়ে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, খনি ও খনিজ পদার্থের উপর সেস ধার্য করার সাংবিধানিক অধিকার আছে রাজ্যের। খনিজের উপরে রাজ্য সরকারগুলোর সেস বসানোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র এবং খনির মালিকরা।
তৃণমূলের প্রবীণ রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় শীর্ষ আদালতের রায় ব্যাখ্যা করে জানান, ১৯৫৭ সালের কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী খনি ও খনিজ সম্পদ (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) রাজ্যের ক্ষমতা। সংবিধানের বিভিন্ন ধারা এবং উপধারা বিশ্লেষণ করে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, সংবিধানের রাজ্য তালিকায় ৫০ নম্বর সংযোজনীতে খনিজ সম্পদে কর বসানোর অধিকার দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে সংসদ ‘অবশিষ্ট ক্ষমতা’ এই বিষয়ে প্রয়োগ করতে পারে না। কর ধার্য করার যাবতীয় ক্ষমতা রাজ্যগুলোর অধিকারের আওতায় পড়ে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন তৈরি করতে পারবে রাজ্য বিধানসভা।

আরও পড়ুন-ভোটে হারতেই শুরু বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি, বাংলা ভাগের চক্রান্ত

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, খনি অপারেটররা কেন্দ্রকে যে রয়্যালটি দেয় তা আদৌ কোনও কর নয়। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বিচারপতি হৃষীকেশ রায়, অভয় এস ওকা, বি ভি নাগারত্ন, জে বি পারদিওয়ালা, মনোজ মিশ্র, উজ্জল ভূঁইয়া, সতীশ চন্দ্র শর্মা এবং অগাস্টিন জর্জ মসিহ’র বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছে। তবে এই রায় কিন্তু সর্বসম্মত ছিল না। বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন ভিন্নমত পোষণ করেন ৮ বিচারপতির সিদ্ধান্তের সঙ্গে। শীর্ষ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, রয়্যালটির সঙ্গে করের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে স্বত্ব থেকে আয়ের (রয়্যালটি) যে অংশ দেয়, তা কর বলে বিবেচনা করা যেতে পারে না। রাজ্যগুলির তাদের ভৌগোলিক পরিসীমার মধ্যে উত্তোলিত খনিজ পদার্থের উপর স্বত্বাধিকার রয়েছে। তাই তারা করের হার স্থির করার অধিকারী। ন’জন বিচারপতির মধ্যে আটজনই এই রায়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। একমাত্র বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন ভিন্নমত প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতি তাঁর রায়ে বলেছেন, ১৯৮৯ সালে রয়্যালটিকে ট্যাক্স হিসেবে আখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল তা ভুল। রয়্যালটি আদৌ ট্যাক্সের মধ্যে পড়ে না।

Latest article