প্রতিবেদন : রাজ্যকে কোনওরকম খবর না দিয়েই লক্ষ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। তার জেরে রাজ্যের দক্ষিণে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যাপরিস্থিতি (Bengal Floods) তৈরি হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেই সমস্ত এলাকায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক-সহ জেলা তৃণমূল ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় আরামবাগ, খানাকুল, আমতা, বাগনান, উদয়নারায়ণপুর, পুরশুড়া, ঘাটাল, ডেবরা-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গত দু’দিন ধরে জলবন্দি রয়েছেন মানুষ। নেই পানীয় জল, বিদ্যুৎ। অসহায় দুর্গতদের সাহায্যে সেইসব এলাকায় ত্রিপল, পানীয় জল, শুকনো খাবার নিয়ে ছুটে গিয়েছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। শুক্রবার সকাল থেকেই হাওড়ার আমতায় দুর্গত মানুষদের ত্রাণ বিতরণ করলেন সাংসদ সাজদা আহমেদ। তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে আমতার কুলিয়াঘাটে গিয়ে বন্যাকবলিত মানুষদের হাতে বিভিন্ন শুকনো খাবার, ফল, পানীয় জলের বোতল, বেবি ফুড তুলে দেন সাংসদ। অন্যদিকে, খানাকুলের ঘোষপুর, কিশোরপুর ১, বন্দিপুর, কুলগাছি, কুলাট-সহ বিভিন্ন বন্যাকবলিত গ্রামে নৌকোয় করে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগ। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের জোতহাড়ো, করন্ডা এলাকায় স্পিড বোটে করে জল, মুড়ি, বিস্কুট, দুধ, মোমবাতি-সহ ত্রানসামগ্রী বিলি করেন বিধায়ক হুমায়ুন কবির, বিডিও প্রিয়ব্রত রাড়ি, খড়্গপুরের মহকুমাশাসক যোগেশ পাতিল, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সিতেশ ধাড়া-সহ অন্যরা। ডেবরার ২নং ভরতপুর পঞ্চায়েত এবং ১নং ভবানীপুর পঞ্চায়েত এলাকার ত্রাণশিবিরগুলি ঘুরে দেখেন প্রশাসনিক কর্তারা। পাশাপাশি, এদিনও তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে আমতা ও উদয়নারায়ণপুরে দুর্গতদের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় মন্ত্রী পুলক রায়ের তত্ত্বাবধানে। ত্রাণশিবিরগুলি পরিদর্শন করেন জেলাশাসক পি দীপাপপ্রিয়া। ঘাটালেও বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ করেন জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। ভুটভুটি করে ঘাটালের মনসুকা এলাকায় শুকনো খাবার, ত্রিপল, ত্রাণ কিট-সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, পিএইচ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি সুরেন্দ্র গুপ্তা, ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকরা। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার রাতভর কাজ করে আমতা ও বাগনানের একাধিক জায়গায় জল ঢোকা রুখলেন সেচ দফতরের কর্মীরা। আমতা-২ নম্বর ব্লকের রামপুর খালের জলবাঁধ উপচে নারিট-মনসাতলা রোড ভাসিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে রাতেই পৌঁছন সেচ দফতরের অফিসার ও কর্মীরা। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা জলমগ্ন (Bengal Floods) এলাকায় গিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহের কাজ করছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বিভিন্ন জলমগ্ন এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করছে। আবার হুগলি জেলা পরিষদের তরফে আরামবাগ, খানাকুল, গোঘাট, তারকেশ্বর, জাঙ্গিপাড়া প্রভৃতি এলাকায় দুর্গত মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টে জোড়া ভর্ৎসনা সিবিআই-ইডির