প্রতিবেদন: বিরাম নেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে ধর্ষণ এবং যৌননির্যাতনের ঘটনায়। ঘটেই চলেছে একের পর এক ন্যক্কারজনক ঘটনা। ওড়িশা, যোগীরাজ্য, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র – কোথাও ধর্ষণ, কোথাও বা আবার ধর্ষণের পরে খুনও। ফুটে উঠেছে মধ্যযুগীয় নৃশংসতার ছবি। সবচেয়ে অমানবিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে মহারাষ্ট্র। আবার সেই মহারাষ্ট্রই। ১৩ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে পাথর দিয়ে থেঁতলে। মহারাষ্ট্রের জলগাঁওয়ের ঘটনা। এই ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়েন মহিলারা। পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নির্যাতিতা চোপড়ার বাসিন্দা। বাড়িতে একা থাকার সুযোগ নিয়ে তাকে ডেকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্ত। তারপরে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করে ধর্ষণকারী। শেষে প্রচণ্ড জনরোষের চাপে পড়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ। শুরু হয়েছিল বদলাপুরের কিন্ডারগাটেন স্কুলে ২ শিশুকে যৌননির্যাতনের ঘটনায়। তারপরে একের পর এক ঘৃণ্য ঘটনা ঘটেই চলেছে বিজেপির মহারাষ্ট্রে।
আরও পড়ুন-নিষেধাজ্ঞা, তবুও ঘুরপথে পদ্মার ইলিশ
একইভাবে এক দলিত কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ইট দিয়ে থেতলে খুন করার চেষ্টা হয় যোগীরাজ্যে। ঘটনাটি ঘটেছে লখনউয়ের গ্রামাঞ্চলে, শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, অন্ধকার রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ২ কিশোরী। সুযোগ বুঝে তাদের পিছু নেয় ২ দুস্কৃতী। নির্জন জায়গায় টেনে নিয়ে গিয়ে এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ব্যাপক মারধর করে। দলিত পরিচয় নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে, গালিগালাজও করে। জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে এরপরে ইট দিয়ে মুখ থেতলে দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলারও চেষ্টা করে দুই ধর্ষণকারী। অচেতন অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে যায় নির্যাতিতা। তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে চম্পট দেয় ২ দুস্কৃতী। জ্ঞান ফেরার পরে বাড়িতে এসে সব জানায় সে। এফ আই আর করা হয় পুলিশে। এক অভিযুক্ত ধরা পড়লেও অন্যজন এখনও ফেরার।
যোগীরাজ্যেরই গোন্ডায় চলন্ত গাড়িতে ১৭ বছরের এক দলিত নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে দুই যুবক। মোবাইল দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মেয়েটিকে গাড়িতে তোলে তারা। নিয়ন্ত্রয় হারিয়ে গাড়িটি গোন্ডা-অযোধ্যা জাতীয় সড়কে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা মারলে নেমে চম্পট দেয় দুই যুবক। পরে অবশ্য গ্রেফতার করা হয় তাদের।
এদিকে হরিয়ানার দিল্লি লাগোয়া গুরগাঁওতে একটি গেস্ট হাউসে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। মৃত তরুণী পেশায় মাসাজকর্মী বলে জানা গিয়েছে। বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। মাসাজ করার জন্য বুক করা হয়েছিল তাঁকে। শনিবার গভীর রাতে ২৩ বছরের ওই তরুণীর সঙ্গে বছর চল্লিশের এক ব্যক্তির প্রচণ্ড কথা কাটাকাটি হয় বন্ধ ঘরের মধ্যে। তারপরেই তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করে ওই ব্যক্তি। গ্রেফতার করা হয়েছে আততায়ীকে।
আরও পড়ুন-বেলুড় হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য হচ্ছে ডিউটিরুম
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে গেরুয়া-শাসিত ওড়িশার ঢেঙ্কানলে। ৭ মাস ধরে একটি পরিত্যক্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছাদে নিয়ে গিয়ে নিয়মিতভাবে গণধর্ষণ করা হত। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরেও রেহাই মেলেনি ২২ বছরের ওই তরুণীর। শেষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে খবর পৌঁছায় স্থানীয় এক মানবাধিকার কর্মীর মাধ্যমে। তারাই বিষয়টি জানায় পুলিশকে। তারই ভিত্তিতে রবিবার গ্রেফতার করা হয় ৭ অভিযুক্তের মধ্যে ৪ জনকে। এভাবেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠছে যৌন নির্যাতককারীদের।