প্রতিবেদন : ওয়াকফ (WAQF) আইন নিয়ে আরও ব্যাকফুটে পড়ল মোদি সরকার৷ এই আইন পুরোপুরি স্থগিত না করেই নতুন আইনের ডানা ছাঁটার কাজ শুরু করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত৷ বৃহস্পতিবার ওয়াকফ আইনকে চ্যালেঞ্জ জানানো ৭২টি মামলার শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যেই ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ হিসেবে চিহ্নিত সম্পত্তিগুলির চরিত্র কোনওভাবেই বদল করা যাবে না৷ একইসঙ্গে শীর্ষ আদালতের তরফে এদিন জানানো হয়, বিভিন্ন রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ড বা ওয়াকফ (WAQF) কাউন্সিলে কোনও অমুসলিম সদস্য নিয়োগ করা যাবে না৷ ৫ মে তাঁরা ওয়াকফ আইন চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মামলাগুলির পুনরায় শুনানি করবেন৷ ততদিন পর্যন্ত এই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না নিজেই৷ সুপ্রিম কোর্টের চাপের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে জানাতে বাধ্য হন যে, তাঁরা সুপ্রিম নির্দেশ মেনে চলবেন৷ আগামী সাতদিনের মধ্যে সব রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে হলফনামা সহযোগে ওয়াকফ আইন নিয়ে তাদের অবস্থান জানাতে হবে শীর্ষ আদালতে, বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না৷ ৫ দিনের মধ্যে হলফনামা সহযোগে নিজেদের অবস্থান জানাবেন ওয়াকফ আইনকে চ্যালেঞ্জ জানানো মামলাকারীরা৷ যেভাবে শীর্ষ আদালতের তরফে এদিন মোদি সরকার প্রণীত ওয়াকফ আইনের দুটি ধারায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে এবং আইনের অধিকার খর্ব করা হয়েছে, তা দেখার পরে দেশের শীর্ষ আদালতের আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টের এদিনের অবস্থানের পরে আরও বেশি চাপে পড়ল কেন্দ্রীয় সরকার৷ ওয়াকফ আইন বাতিল না হলেও আইনের দুটি ধারার উপরে সুপ্রিম স্থগিতাদেশ প্রমাণ করল, বিরোধীদের আপত্তি অমূলক নয়৷ মোদি সরকার অসাংবিধানিক আইন প্রণয়ন করেছে৷
দেশের শীর্ষ আদালতের এদিনের অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার ডেপুটি লিডার সাগরিকা ঘোষ৷ ট্যুইটে সাগরিকা বলেন, অমুসলিমদের সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের আপাতত সদস্য করা যাবে না৷ এই সংক্রান্ত কোনও নিয়োগও করা যাবে না৷ পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত বহাল থাকবে এই নির্দেশ৷ একইরকমভাবে শীর্ষ আদালতের এদিনের অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি৷ তাঁর কথায়, দেড়শো বছর ধরে আইনি বৈধতা পেয়েছে ওয়াকফ বাই ইউজার৷ মুসসিমদের এই অধিকার শতাব্দীপ্রাচীন৷ দেশের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারকে কোনওভাবেই ক্ষুণ্ণ করা যায় না৷ ওয়াকফ আইন পুরোপুরি অসাংবিধানিক৷
আরও পড়ুন- মানুষের সেবার কোনও সময়সীমা থাকে না, কেন্দ্রকে বার্তা অভিষেকের