প্রতিবেদন : ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর নোটবন্দি থেকে রাফায়েল, সরকারি সংস্থা বিক্রি করে দেওয়া থেকে ব্যাঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন অসংখ্য ব্যবসায়ী। আষ্টেপৃষ্টে দুর্নীতির গহ্বরে মোদি সরকার। এবার আরও বড় দুর্নীতি প্রকাশ্যে এল স্বাধীনতা দিবসের আগেই। ক্যাগ অর্থাৎ সিএজি রিপোর্টেই বিরাট দুর্নীতির তথ্য। দুর্নীতি হয়েছে রামমন্দির তৈরির প্রকল্পে। দুর্নীতি হয়েছে অযোধ্যা উন্নয়ন প্রকল্পে। দুর্নীতি হয়েছে স্বদেশ দর্শন প্রকল্পে। সিএজির রিপোর্ট নিঃসন্দেহে লোকসভা ভোটের আগে মোদি সরকারের (Modi government- CAG report) আসল রূপটা সামনে নিয়ে এল।
১. ২০১৫-২০২২-এর মার্চ। স্বদেশ দর্শন প্রকল্পে সিএজি রিপোর্ট বলছে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। আর এই দুর্নীতির কথা উত্তরপ্রদেশের পর্যটন ও সেচদফতরও স্বীকার করেছে। প্রায় ২০০ গুণ টাকা কোনও কারণ ছাড়া ব্যায় করা হয়েছে।
২. ৬টি প্রকল্পে ঠিকাদারদের ঘুষ দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি টাকার বেশি। যার মধ্যে অযোধ্যার আধুনিকীকরণও রয়েছে। পারফরম্যান্স গ্যারান্টি মানি কোনও কারণ না দেখিয়েই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। গুপ্তার ঘাট এলাকায় ঠিকাদারদের সঙ্গে দুর্নীতি করে ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকা।
৩. অযোধ্যার উন্নয়নে কমিটি গঠন করার কথা ছিল। দিল্লি-গুরুগ্রাম ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়ক যানজটমুক্ত করতে ১৪ লেনের রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। আর এখানেই হয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। কথা ছিল কিলোমিটার প্রতি খরচ হবে ১৮.২০ কোটি টাকা। কিন্তু দেখানো হয়েছে কিলোমিটার প্রতি রাস্তা তৈরিতে খরচ ২৫০.৭৭ কোটি টাকা। সিএজি আরও একধাপ এগিয়ে বলেছে ভারতমালা প্রকল্পে রাস্তা তৈরিতে যে অর্থ অনুমোদন করা হয় তার চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি খরচ হয়েছে।
আরও পড়ুন- এজেন্সির তৎপরতা, তামিলনাড়ুতে ফের ধৃত
কয়েক হাজার কোটি টাকার এই দুর্নীতি সিএজি প্রকাশ্যেই আনতেই সরব বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেস আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বলেছে, মোদি জমানায় (Modi government- CAG report) দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের খরচ ১৪ গুণ বেড়ে হয়েছে ২৫০.৭৭ কোটি টাকা প্রতি কিলোমিটার। এই টাকা ভারতমালাকে দেওয়ার জন্য অন্যান্য প্রকল্প থেকে ১.৫৭ লক্ষ কোটি টাকা সরানো হয়েছে। মিথ্যা রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকল্পের দরদাতাদের নির্বাচন করা হয়েছে। তৃণমূলের কটাক্ষ, নিউ ইন্ডিয়ার প্রতি ভারতের পদক্ষেপ কি এমনই দুর্নীতিময়? এদিকে ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, বিজেপির দুর্নীতি এবং লুঠ দেশকে জাতীয় সড়ক থেকে নরকে নিয়ে যাচ্ছে। মোদি সরকারের সমালোচনা করে ভারতমালা নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে সিএজি। বিরোধীদের দিকে দুর্নীতির আঙুল তোলার আগে প্রধানমন্ত্রীর নিজের দিকে আগে দেখা দরকার। কারণ, এটির তত্ত্বাবধান করছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। ক্যাগ রিপোর্টে আরও যে পাঁচটি প্রকল্পের দুর্নীতির কথা তুলে ধরা হয়েছে সেগুলি হল, সিঙ্কেরিম-আগুয়ারা প্রকল্প, গোয়া হিমালয়ান সার্কিট, হিমাচল প্রদেশ হেরিটেজ সার্কিট, রংপো-সিংটামের উন্নয়ন এবং মধ্যপ্রদেশের বৌদ্ধ সার্কিট উন্নয়ন। ২০২৪-এ ইন্ডিয়ার হাতে বিজেপি সরকারের পতন যে অবসম্ভাবী তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।