নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Manipur Violence- Narendra Modi) দীর্ঘ নীরবতা এবং বিজেপির নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে কড়া তোপ দাগলেন রাজ্যের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। তাঁদের অভিযোগ, অগ্নিগর্ভ মণিপুর নিয়ে কুরুক্ষেত্রে ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকা পালন করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলা হয়েছে, প্রকৃত পরিস্থিতি জেনেও শুধুমাত্র ভোট-রাজনীতির কথা মাথায় রেখে মণিপুর নিয়ে মৌনব্রত ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী (Manipur Violence- Narendra Modi)। ভারতীয় ক্যাথলিক বিশপ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ফাদার জ্যাকব জি প্যালাকাপিলি মণিপুরের ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টানা দু’মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। অসংখ্য মানুষ মারা গিয়েছেন। কয়েক হাজার ঘরছাড়া। যা ঘটছে সেটা আদৌ কোনও গোষ্ঠী সংঘর্ষ নয়। এটি পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সমস্ত জেনেও না বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। গোটা সম্প্রদায়কে শেষ করে দেওয়ার চক্রাম্ত হচ্ছে। অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রী এনিয়ে একটি শব্দও ব্যয় করেননি।
ক্যাথলিক বিশপ কাউন্সিলের আবেদন, সংখ্যালঘু মানুষের জীবন বিপন্ন। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী জোটের নেতারা মণিপুরের শান্তি ফেরাতে সামনে এগিয়ে আসুন। ফাদার প্যালাকাপিলি বলেন, বাংলার নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব এই পরিস্থিতিতে আপনি এগিয়ে আসুন। কারণ মণিপুরের মহিলারাও এখন সুরক্ষিত নয়। এই জটিল রাজনৈতিক আবর্ত থেকে মণিপুরবাসী এবং সেখানকার ৪১.২৯ শতাংশ খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে উদ্ধার করতে তৃণমূলনেত্রীর কাছে আবেদন জানান তিনি। তাঁর ক্ষোভ, ২ মাসের বেশি সময় ধরে একটা রাজ্য জ্বলছে অথচ কোনও তাপউত্তাপ নেই কেন্দ্রীয় সরকারের! এই পরিস্থিতিতে বিরোধী নেতারা এগিয়ে আসুন। জ্যাকব জি প্যালাকাপিলির মন্তব্য, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি শুধুমাত্র নির্বাচিত কয়েকটি জায়গায় মুখ দেখিয়ে চলে আসেন। তাঁর সফরের পরও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেনি মণিপুর। তাহলে ডবল ইঞ্জিনের সরকার কী করছে মণিপুরে? সংখ্যালঘু খ্রিস্টান কাউন্সিলের ক্ষোভ, দেশের প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র একটি দলের এবং একটি রাজ্যের হয়ে থেকে গিয়েছেন, গোটা দেশের প্রধানমন্ত্রী তিনি এখনও হতে পারেননি।
এদিকে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কেরলের ক্যাথলিক চার্চের প্রধানরা প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, এই গণহত্যার দায় তাঁদের উপরেই বর্তায়। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কীভাবে হামলাকারীরা সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের ইউনিফর্মে প্রবেশ করেছিল? মণিপুরের প্রকৃত পরিস্থিতির তথ্য ধামাচাপা দিতে চাইছে সরকার।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে পাওয়ার বনাম পাওয়ার