প্রতিবেদন : গোটা বিশ্বে পাঁচ কোটি মানুষ এখনও আধুনিক দাসত্বের অধীনে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। আধুনিক দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দি শ্রমিক রয়েছে এমন দেশগুলির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মোদির ভারত। মানবাধিকার সংগঠনের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, জোর করে শ্রমে ইন্ধন জোগাচ্ছে বিশ্বের ২০টি ধনী দেশ। ‘ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশন’ নামে মানবাধিকার সংস্থা এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন-রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে আপত্তি, বাংলা-বিরোধী মনোভাব নীতি আয়োগের নীতিতে
এই রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ২০টি ধনী দেশের মধ্যে ছ’টি দেশে আধুনিক দাসত্বের হার সব থেকে বেশি। এই দেশগুলিতে সাধারণ গরিব মানুষকে জোর করে শ্রমে নিয়োগ করা হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে জোর করে বিয়ে করতেও বাধ্য করা হয়। ভারতে এক কোটি ১০ লক্ষ মানুষ জোর করে কাজ করতে বাধ্য হন। তাই আধুনিক দাসত্বের তালিকায় ভারত রয়েছে শীর্ষে। তার পরেই রয়েছে চিন। সেদেশে আধুনিক দাসত্বের মধ্যে থাকা মানুষের সংখ্যা ৫৮ লক্ষ। রাশিয়ায় এই সংখ্যাটি ১৯ লক্ষ। পরবর্তী দেশগুলির মধ্যে আছে ইন্দোনেশিয়া ১৮ লাখ, তুরস্ক ১৩ লাখ এবং আমেরিকা ১১ লাখ।
আরও পড়ুন-ওয়েবে ভিন্ন স্বাদ, দর্শক মাত
সমীক্ষা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, জাপান এবং ফিনল্যান্ডে আধুনিক দাসপ্রথা সবথেকে কম। এইসব দেশগুলিতে আর্থিক উন্নয়ন যথেষ্টই হয়েছে। লিঙ্গ সমতা, সামাজিক উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। তবে তারপরও কিছু মানুষ আধুনিক দাসত্বে জড়িয়ে পড়ছেন। রাষ্ট্রসংঘের ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন এবং ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড ওয়ার্ক ফ্রি-র রিপোর্ট বলছে, গোটা বিশ্বে পাঁচ কোটি মানুষ আধুনিক দাসত্বের শিকার। এর যার মধ্যে ২ কোটি ৮০ লক্ষ জোরপূর্বক কাজে বাধ্য হচ্ছেন। ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দাসত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করা হয়েছে। ২০২১ সালের শেষের দিকে আধুনিক দাসপ্রথার সবচেয়ে বেশি প্রবণতা দেখা গিয়েছিল উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, তুরস্কের মতো দেশে।
আরও পড়ুন-দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে মোদি সরকার, বর্ষপূর্তিতে কড়া আক্রমণ ডেরেকের
২০১৫ সালে রাষ্ট্রসংঘ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে আধুনিক দাসপ্রথা বা ফোর্সড লেবার ব্যবস্থার অবসান ঘটানো হবে। কিন্তু তারপরেও আধুনিক দাসত্বের মধ্যে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব যখন আজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে তখন আর্থিক-সামাজিক দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে বহু মানুষকে দাসত্বের শৃঙ্খলে জড়িয়ে দেওয়ার এই প্রবণতা ভয়ঙ্কর ও উদ্বেগজনক।