প্রতিবেদন : ইস্টবেঙ্গলের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে আইএফএ-র বিরুদ্ধে একজোট ময়দানের বাকি ক্লাবগুলো। কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়নের দৌড়ে থাকা ডায়মন্ড হারবার এফসি সুপার সিক্সে তাদের বাকি দু’টি ম্যাচ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লিগ থেকে দল প্রত্যাহারের চিঠি দিয়ে বুধবার আইএফএ-কে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লাব জানিয়ে দিয়েছে, তারা লিগ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। ডায়মন্ড হারবারকে না জানিয়ে মহামেডান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের পুরো পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলকে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের ফুটবলারদের ছুটি ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। তাই ১৪ অক্টোবরের ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ খেলা সম্ভব হচ্ছে না। ডায়মন্ড হারবার নাম তুলে নেওয়ায় সাত বছর পর কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হল ইস্টবেঙ্গল।
তার আগে মঙ্গলবারই আইএফএ-র বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ইস্টবেঙ্গলের লিগ জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ইস্টবেঙ্গলকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে মোহনবাগানও আইএফএ সভাপতি ও সচিবের পদত্যাগ দাবি করেছে। ডায়মন্ড হারবারের তরফে ক্লাবের সহ-সভাপতি আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইএফএ-র শীর্ষ পদে বসে যিনি বা যাঁরা একটি ক্লাবের প্রতি দিনের পর দিন ন্যক্কারজনকভাবে পক্ষপাতিত্ব করে চলেছে, তাঁদের প্রতি আমাদের ধিক্কার। আমরা সুপার সিক্সের বাকি দু’টি ম্যাচ না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি আইএফএ-কে। বাংলার ফুটবলের অভিভাবক আইএফএ। এই কি তার নমুনা! একটি ক্লাবকে লিগ চ্যাম্পিয়ন করার জন্য এতটা নীচে নামতে পারেন যে সংস্থার কর্তারা, তাঁদের অধীনে লিগ বা টুর্নামেন্ট খেলে লাভ কী? অনৈতিকভাবে একটি বড় ক্লাবকে পয়েন্ট দেওয়া হচ্ছে, সূচিও হচ্ছে তাদের দাবি মেনে। বলতে দ্বিধা নেই, আইএফএ মনে হচ্ছে দত্তক নিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের মতো ছোট ক্লাবগুলোকে। আমাদের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসটাই ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে কলকাতা লিগ আমরা খেলব কি না, ভাবতে হবে।’’
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার আইএফএ-র শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি মহামেডান ম্যাচের পুরো পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলকে দেওয়া নিয়ে। অভিযোগ, প্রিমিয়ার ডিভিশনের সুপার সিক্সে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে মিনি ডার্বিতে ভূমিপুত্র খেলানোর নিয়ম ভেঙেছে মহামেডান। লিগের নিয়মানুযায়ী, ম্যাচের পুরো সময় চারজন ভূমিপুত্র খেলানো বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রথমার্ধে কিছু সময়ের জন্য তিনজন ভূমিপুত্র ছিলেন মাঠে। আইএফএ-র দাবি, প্রতিপক্ষ অভিযোগ করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজার টাকা দিয়ে করতে হয়। তা না হওয়ায় ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্টকে গুরুত্ব দিয়ে সংবিধান মেনে ইস্টবেঙ্গলকে পুরো পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ডায়মন্ড হারবারের (১৫ ম্যাচে ৩৯) সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান বাড়িয়ে ইস্টবেঙ্গলের (১৫ ম্যাচে ৪৩) লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। তাছাড়া ভবানীপুরও ইস্টবেঙ্গলকে ওয়াকওভার দিয়েছে অন্যায়ভাবে ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ায়।
মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত আইএফএ-কে তোপ দেগে বলেন, ‘‘আমরা শিল্ড খেলব না, এটা জানিয়ে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছি। এবার আমরা আইএফএ-র সভাপতি ও সচিবের পদত্যাগ চাইছি। বাংলার ফুটবলের স্বার্থে আইএফএ-তে শুদ্ধীকরণ প্রয়োজন।’’
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় ডোমজুড়ে প্রমীলা-বাহিনীর পুজোর আয়োজন