জয় হাতছাড়া মোহনবাগানের

কোচের রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজি, প্রথম একাদশ নির্বাচনে গলদ, জেসন কামিন্স, দিমিত্রি পেত্রাতোসদের গোল নষ্টের খেসারত দিয়ে জয় হাতছাড়া মোহনবাগানের।

Must read

চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: যুবভারতীর ভিআইপি গ্যালারির উল্টোদিকের মিডল টিয়ার থেকে ঝুলছিল একটি ব্যানার। তাতে লেখা, ‘এগিয়ে চলেছে নৌকা’। ঠিক তার উপরেই সবুজ-মেরুন সমর্থকদের আরও একটি ব্যানারে জ্বলজ্বল করছিল, ‘পরম্পরা, আবেগ, ঐক্য’। প্রিয় দলের জন্য সমর্থকদের আবেগ, ঐক্য থাকবেই। কিন্তু চলতি মরশুমে সবুজ-মেরুন নৌকার পালে যে এখনও ঝোড়ো হওয়া লাগল না। শক্তিশালী দল নিয়েও বারবার আটকে যাচ্ছে নৌকা। ডুরান্ড ফাইনালের পুনরাবৃত্তি দেখা গিয়েছে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আইএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচে। বুধবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-তেও অপেক্ষাকৃত কমজোরি দল তাজিকিস্তানের রভশান এফসি-কে হারাতে পারল না জোসে মোলিনার দল। ম্যাচ গোলশূন্য ড্র। কোচের রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজি, প্রথম একাদশ নির্বাচনে গলদ, জেসন কামিন্স, দিমিত্রি পেত্রাতোসদের গোল নষ্টের খেসারত দিয়ে জয় হাতছাড়া মোহনবাগানের।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

এই ম্যাচেও মোলিনার রণকৌশল প্রশ্নের মুখে। ম্যাচের শেষ বাঁশি বেজে গিয়েছে। যুবভারতীতে মোহনবাগান কোচের বিরুদ্ধে আছড়ে পড়ে ক্ষোভ। গ্যালারিতে ‘গো ব্যাক মোলিনা’ স্লোগান। গ্রুপে রভশানই সহজ প্রতিপক্ষ। ঘরের মাঠে তাজিক ক্লাবের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ফুটবল দেখতে চেয়েছিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। কিন্তু শুরু থেকে মোলিনার রক্ষণাত্মক রণকৌশল সমর্থকদের হতাশ করল। যুবভারতীতে যে হাজার ১২ সমর্থক সারাক্ষণ দিমিত্রি, মনবীরদের জন্য চিৎকার করে গেলেন, তাঁরা একরাশ হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। বিরক্তির ফুটবলে মোলিনার দলও গ্রুপের বাকি কঠিন ম্যাচের জন্য আতঙ্ক বাড়িয়ে রাখল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-তে যত বেশি বিদেশি খেলানো যায়। জেমি ম্যাকলারেনকে বেঞ্চে রেখেও ব্যবহার করা হয়নি। অনেক পরে ৭৭ মিনিটে যখন গ্রেগ স্টুয়ার্টকে নামানো হল তখনই আক্রমণে ঝাঁজ বাড়ে মোহনবাগানের। একের পর এক সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় গোল হয়নি। তার আগে প্রথমার্ধ জুড়ে বিরক্তিকর ফুটবল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণে জোর দেয় রভশান। মোহনবাগানের অর্ধে আক্রমণ তুলে আনেন। ৬৪ মিনিটে গোল পাওয়ার লক্ষ্যে সাহাল আব্দুল সামাদ ও অনিরুদ্ধ থাপাকে তুলে লিস্টন কোলাসো ও অপুইয়াকে নামান মোলিনা। মাঝমাঠে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আসে। ৭৬ মিনিটে সহজতম সুযোগ নষ্ট করেন কামিন্স। অপুইয়ার ডিফেন্স চেরা থ্রু বল ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার। সামনে বিপক্ষ গোলকিপারকে একা পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি। শেষ লগ্নে পরপর সুযোগ তৈরি হলেও দিমিত্রি, লিস্টনরা হতাশ করলেন। মন্দের ভাল, ম্যাচে ক্লিন-শিট রাখল দল। টম অলড্রেডের নেতৃত্বে রক্ষণ এদিন ভরসা দিল।

আরও পড়ুন-এবার পুজোয় পুরুলিয়ায়

দলকে জেতাতে না পেরে হতাশ দিমিত্রি। রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়েও বিরক্ত বাগানের অস্ট্রেলীয় তারকা। ম্যাচের পর বললেন, ‘আমার পা দিয়ে রক্ত ঝরছে। সবাই দেখেছে কী হয়েছে। রেফারিং নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমরা ফিরে আসব। মোহনবাগান জার্সির সম্মান রাখতেই হবে।’

Latest article