মুড স্যুইং কি ন্যাকামি?
কথায়-কথায় মুড বদলায় পর্ণার। ওর সঙ্গে কথা বলতেই ভয় পায় সবাই। এই খুব ভাল তো এই খারাপ। এই তো সেদিন দেখে হাসল আবার একদিন যেন চিনতেই পারল না। খুব মুডি পর্ণা। অনেকেই এরকম মুড স্যুইংকে মহিলাদের একধরনের ন্যাকামি মনে করেন। ভাবেন বুঝি অহংকার।
আসলেই কি তাই? কখনও মনে অকারণ বিরক্তি, অকারণ দঃখ, কখনও কথা বলতে ভাল লাগে তো কখনও ইচ্ছেই করে না, চেনা মানুষকেও মনে হয় এড়িয়ে যাই, অল্পেই চিৎকার, উত্তেজনা, ঝরঝর করে চোখ দিয়ে জল পড়া, অবসাদ। এমন ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তনকেই মুড স্যুইং বলা হয় যা কিন্তু এক গুরুতর সমস্যা। এই সমস্যা যত বেশি বাড়ে ততই বিপদ। অনেকের ক্ষেত্রে পুরোদস্তুর চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। মুড স্যুইং-এর শারীরিক এবং মানসিক কারণগুলো আলাদা। যদিও সবটাই পারস্পরিক। মেয়েদের বেশি হয় এবং সেটা হয় বয়সের ধাপে ধাপে।
মুড স্যুইং-এর কারণ যখন শরীর
বয়ঃসন্ধির শারীরিক চাপ
বয়ঃসন্ধি মানেই নতুন বিপত্তি। ওভিউলেশনের শুরু আর সেই সঙ্গে শুরু মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল। প্রতি মাসের ঝঞ্ঝাট। পিরিয়ডের সময় শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্সের সঙ্গে বিগড়ে যায় মানসিক ভারসাম্যও। পিরিয়ডের শুরুতে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কম থাকে তারপরে সেটা বাড়তে শুরু করে মিড সাইকেল অর্থাৎ চোদ্দো, পনেরো দিনের মাথায় গিয়ে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা সবচেয়ে বেশি হয় এরপর আবার ধীরে ধীরে কমে যায়। ইস্ট্রোজেন হরমোনের এই বাড়া-কমার নিয়মটা যেমন স্টেডি থাকে না তেমনই মুড স্যুইং কখন হবে তারও কোনও ঠিক থাকে না। সাধারণত ওভিউলেশনের পরেই বেশি মুড স্যুইং হয় অর্থাৎ শেষের পনেরো দিন। ভীষণ ইরিটেশন, রাগ, অবসাদ, কান্না পায়। শুধু ইস্ট্রোজেন নয় এই সময় অন্য গ্রোথ হরমোনেরও প্রভাবও পড়ে শরীরে যে কারণে মুড স্যুইং হয়।
পিএমএস চালু
মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল শুরু হবার এক থেকে দু’বছরের মধ্যে যখন এটা রেগুলার হতে শুরু করল তখনই শুরু হয়ে গেল পিএমএস বা প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম। এবার যত বয়স বাড়তে পিএমএস-ও বাড়তে থাকে। ইমোশনগুলো আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আমি বুঝতে পারছি যে রেগে যাচ্ছি, এ তো সামান্য একটা ব্যাপার ইরিটেড হওয়া উচিত নয় তাও ইরিটেটেড হয়ে যাচ্ছি। প্রচণ্ড কান্না পায়। চিৎকার করে ফেলছি, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে, ভীষণ বিরক্তি। এক্ষেত্রেও ঘুম কমে যায়। বিবাহিত মহিলা যাঁরা ফ্যামিলি প্ল্যানিং করতে গর্ভনিরোধক খান তাঁদের পিএমএসজনিত মুড স্যুইং কম হয়। কারণ ওরাল পিলের কাজ হল একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে ইস্ট্রোজেন শরীরকে সরবরাহ করা। ফলে নির্দিষ্ট পরিমাণে ইস্ট্রোজেনই রোজ শরীরে ঢোকে কোনও ফ্ল্যাকচুয়েশন থাকে না কাজেই মুড সুইং হয় না। অনেক সময় মুড সুইং আটকাতে চিকিৎসক ওরাল পিল প্রেসক্রাইব করেন।
প্রি এবং পোস্ট-ন্যাটাল ডিপ্রেশন
মা হওয়া পরম গর্বের— এই জাতীয় কথাগুলো পড়তে বা শুনতেই ভাল লাগলেও আসলে প্রেগনেন্সি একটা খুব স্ট্রেসফুল কন্ডিশন। একজন মহিলার শরীরের গড়ন বদলে যায়, জীবনযাত্রা বদলে যায়। বাচ্চাকে ফিড করানো খুব স্ট্রেসফুল কাজ ওই সময়। গর্ভস্থ শিশুকে নিয়ে চিন্তা যা শিশুর জন্মের পরে আরও বেশি করে দেখা দিতে থাকে। অ্যাংজাইটিজনিত মুড স্যুইং হয়। একে বলে পোস্টপাটম ডিপ্রেশন বা ব্লুজ। নতুন শিশুকে অ্যাকসেপ্ট করে নিতে অনেক সময় লেগে যায়। শিশু ঠিকমতো খাচ্ছে কি না, ঘুমোচ্ছে কি না, পাশাপাশি মায়ের নিজেকে নিয়েও শুরু ডিপ্রেশন। তখন দেখা গেল চোখ থেকে ঝরঝর করে জল পড়ে যাচ্ছে, অবসাদ হচ্ছে, গুম মেরে বসে আছে, পাগলের মতো চিৎকার করছে, উত্তেজিত হয়ে পড়ছে ইত্যাদি এই সময় মুড স্যুইং এতটা বাড়াবাড়ির পর্যায় যায় যে অনেক মায়ের আত্মহত্যা করতেও ইচ্ছে করে। এক্ষেত্রে কাউন্সেলিং খুব জরুরি।
আরও পড়ুন: রাজ্যের তালিকা মেনে উপাচার্যদের নিয়োগ করতে হবে, বোসকে মনে করালেন ব্রাত্য
মেনোপজ মানেই চাপ
চল্লিশ পেরলেই প্রি মেনোপজাল স্টেজ। মেনোপজের দিকে যত এগোন একজন মহিলা তত বাড়তে থাকে মুড স্যুইং। পনেরো থেকে পঁয়তাল্লিশ বছর যদি কোনও মহিলার রিপ্রোডাক্টিভ এজ হয় তাহলে এতগুলো দিন ধরে সে ইস্ট্রোজেন ফ্ল্যাকচুয়েশনের মধ্যে দিয়ে গেছেন প্রবল মুড স্যুইং হয়েছে এবং তা বেড়েছে। এবার সেটাই ধীরে ধীরে বন্ধের মুখে। দু’মাস পিরিয়ড হল তো একমাস হল না। ইরাটিক ওভিউলেশন হয় ফলে হরমোনাল ইমব্যালেন্স বেড়ে যায়। এতে ইরিটেশন মারাত্মক বাড়ে, মাত্রাতিরিক্ত চিৎকার, অল্পেই রাগ, অকারণ বিরক্তি বাড়াবাড়ির পর্যায় চলে যায়। প্রচণ্ড অবসাদ আসে। পোস্ট মেনোপজে মুড স্যুইং মারাত্মক আকার নেয়। হট ফ্লাশ যাঁদের বেশি তাঁদের মুড স্যুইংও অনেকটাই বেশি হয়। হঠাৎ ভীষণ ঘাম হতে থাকে, খুব রাগ, অকারণ চিৎকার, মাথা আনচান, প্রয়োজনের অতিরিক্ত তর্ক-বিতর্ক, যেটায় রি-অ্যাক্ট করার কথা নয় তাতেও চরম রি-অ্যাকশন। বাড়াবাড়ি হলে কাউন্সেলিং আর হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি একমাত্র গতি।
প্রচুর আয়রন ক্ষয়
যদি ধরে নিই একজন পুরুষের মাসে ৩০ মিলিগ্রাম আয়রনের দরকার পড়ে তাহলে মেয়েদের সেটা ৬০ মিলিগ্রাম দরকার। কারণ পিরিয়ডে তাঁদের প্রচুর আয়রন ক্ষয় হয়। আর প্রেগনেন্সির সময় দরকার হাজার মিলিগ্রাম আয়রনের। এই আয়রনের ঘাটতি থেকে ইরিটেশন বাড়ে। প্রচণ্ড মুড স্যুইং হয়। আমাদের দেশের স্কুল গোয়িং মেয়েদের আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এত বেশি যে কারণে স্কুলে স্কুলে আয়রন ট্যাবলেট দেওয়ার নিয়ম চালু রয়েছে। বয়ঃসন্ধি থেকে মেনোপজের আগে পর্যন্ত প্রতিটা বয়সের মহিলার আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া উচিত যাতে কোনওভাবেই মুড স্যুইং না বাড়ে নচেৎ খুব বিপদ।
ভিটামিন ডি একদম নেই শরীরে
এদেশের মহিলাদের একাংশ বাড়ি থেকেই বেরন না, সূর্যের আলো তাঁদের শরীরে লাগে না। দুধ খাবার অভ্যেস নেই। তাই এখানে মেয়েদের ভিটামিন ডি-র অভাব লক্ষণীয় ভাবে বেশি। আর মুডের গোলমাল করতে ভিটামিন ডি-এর জুড়ি নেই। এর অভাবে মুড স্যুইং হবেই। প্রচণ্ড ডিপ্রেশন হয়, কিছু ভাল লাগে না। কখনও ভীষণ উত্তেজনা কখনও অবসাদ। এক্ষেত্রে ভিটামিন ডি চেক করতে হবে প্রয়োজনে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে হবে।
থাইরয়েড ডিজর্ডার সাঙ্ঘাতিক!
থাইরয়েড বা হাইপোথাইরয়েডিজম এমন একটা রোগ যা মাথা থেকে পা পর্যন্ত এফেক্ট করে। মুড স্যুইংয়ের একটা বড় কারণ হাইপোথাইরয়েডিজম। এতে অবসাদ এবং সিভিয়র মুড স্যুইং হয়। ঠেলে তোলা যায় না পেশেন্টকে। দিন-রাত শুয়েই থাকে, মুখ ফুলে যায়, একটা বিরক্তি কাজ করে, কিছু ভাল লাগে না তাই সময় সময় থাইরয়েড টেস্ট ভীষণ জরুরি।
মুড স্যুইং-এর কারণ যখন মনে
বয়ঃসন্ধির সামাজিক চাপ
পিরিয়ড হওয়ার আগে পর্যন্ত সব ঠিক ছিল কিন্তু পিরিয়ড শুরু হওয়ার পরেই হঠাৎ সব বদলে গেল। বাবা-মা দাদা-দিদিদের নজরদারিতে চলে আসে বাড়ির মেয়েরা। আজকের দিনে কিছুটা হলেও এই অবস্থার উন্নতি হয়েছে কিন্তু পুরোটা নয়। বাড়ির ছেলেটির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি মেয়েটির চেয়ে অনেক আলাদা। মেয়েদের জন্য সোশ্যাল কিছু ট্যাবু রয়েছে। এই সময় মেয়েদের চেহারা নিয়ে ক্রিটিসিজম শুরু হয়। মোটা, কালো, মুখে ব্রণ— ইত্যাদি শোনে তাঁরা ফলে লজ্জায় পড়তে হয়। পিরিয়ডস লুকিয়ে গোপন করে চলতে হয়। তাকে পদে পদে বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে বড় হয়ে গেছে। পুরুষের সঙ্গে তফাতে চলতে হবে। বেশি রাত করে বাড়ি ফেরা তার জন্য অপরাধ। এই ভাবে একটা সামাজিক চাপ তৈরি হয় মেয়েদের মধ্যে। এই চিন্তাভাবনা থেকেই অবসাদ আসে এবং ভীষণ মুড স্যুইং শুরু হয়। কিছুই ভাল লাগে না, একটা অস্বস্তি কাজ করে, কখনও ভয় আবার কখনও উত্তেজনা, কখনও রাগ-বিরক্তি, কখনও গুম হয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করে।
বাড়ি আর বাইরের চাপে জেরবার
আজকের যুগে ঠিকমতো সংসার চালাতে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই চাকরি করতে হয়। সেখানে মহিলাদের ফ্যামিলি লাইফ এবং ওয়র্ক লাইফ দুটোর ব্যালান্স করতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেতে হয় রোজ। একদিকে ওয়র্ক প্রেশার, ডেডলাইন মিস করে ফেলার চাপ, কম্পিটিশন, ঊর্ধ্বতনের ক্রমাগত হিউমিলিয়েশন অন্যদিকে বাড়ির হাজার দায়-দায়িত্ব। সংসার বেসামাল হলে আজও মেয়েদেরই কথা শুনতে হয়। চাকরিরতা বলে ছাড় পান না তাঁরা। এর ফলে ঘন ঘন মেজাজ বদলায়। অল্প খুশি, অনেকটা অখুশি, অকারণ ইরিটেশন, রাগ, উত্তেজনা, কান্না, অবসাদ— সব একসঙ্গে উড়ে এসে জুড়ে বসে।
বাড়ছে বয়স তাই ভাল লাগে না কিছুই
বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে। চুলে ধরেছে পাক। ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে গেছে তাদের একটা আলাদা জগৎ। স্বামীও নিজের কাজের জগতে। হঠাৎ করেই মনে হয় যেন সব ব্যস্ততা শেষ। সময় কাটে না, বইয়ে মন বসে না। এই সময় মহিলাদের ভীষণ মুড স্যুইং হতে শুরু করে। এটা মূলত আসে অবসাদ এবং একাকিত্ব থেকে। মাথার মধ্যে একটা আনচান ভাব হয়, অকারণে চিৎকার করে ফেলছে আবার কখনও কারণ ছাড়াই চুপচাপ বসে কাঁদছে। রাগে মনে হচ্ছে ফেটে পড়বে। বাড়ির লোক বুঝতে পারেন না। এইসব মানসিক সমস্যা থেকেই শারীরিক জটিলতা আসতে শুরু করে, ডায়াবেটিস, হাই ব্লাডপ্রেশার হয়, ওজন বেড়ে যায়। এই অবস্থায় কাউন্সেলিং করা খুব জরুরি। মেনোপজের পর এই মুড স্যুইং আরও বাড়ে। এই সময় চেহারাতে একটা বড় পরিবর্তন আসে। ত্বক বুড়িয়ে যেতে থাকে। ফলে আমি আর আগের মতো নই চেহারা নিয়ে এই ভাবনা থেকে একটা হীনমন্যতা আসে। সেই সঙ্গে ফুরিয়ে যাওয়ার অনুভূতিতে ফ্রাস্টেশন আসে এবং রাগ, বিরক্তির মুড স্যুইং চলতেই থাকে।
পান আর ভোজন দুই বিপজ্জনক
অনেকেরই খাদ্যাভাস খুব খারাপ। কাজের প্রচণ্ড চাপের কারণে খুব বেশি পরিমাণে কফি বা চা খান, রাত জাগেন। খুব কম ঘুম হয়। চা-কফি বেশিও খাওয়া, গাদা গাদা মিষ্টি খেয়ে ফেলা সঙ্গে তেল ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুডে আসক্তি ভীষণ মুড স্যুইং করায়। মিষ্টি বেশি খেলে সুগার লেভেলের ফ্ল্যাকচুয়েশন হয়। অনেক গ্যাপের পর প্রচুর খেয়ে ফেলা ক্ষতিকর। অল্প করে বারে বারে খেতে হবে। এতে সুগার লেভেল স্টেডি থাকবে। মুড স্যুইং কমবে। অ্যালকোহলের অভ্যেস থাকলে মুড স্যুইং অবধারিত। অনেকেই স্ট্রেস কমাতে পান এবং ভোজন দুই বেশি করেন— ভাবেন স্ট্রেস কমবে, ঘুম ভাল হবে আসলে ফল হয় উল্টো। মুড স্যুইং মারাত্মক বাড়ে মদ্যপানে এবং স্মোকিং বা ধূমপানে। এই জেনারেশনের প্রায় সবাই কমবেশি ড্রিঙ্ক করেন, ধূমপানে মেয়েরাই এগিয়ে যেটা মুড স্যুইং প্রচণ্ড বাড়িয়ে দেয়।
পরিবার কীভাবে সাহায্য করবে
সদ্য মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল শুরু হয়েছে এটা মেয়েটির কাছে নতুন অভিজ্ঞতা তাই পরিবারকে বোঝাতে হবে যে এটা একটা স্বাভাবিক প্রসিডিওর। এটা নিয়েই কীভাবে সে চলবে। পিএমএস শুরু হলে একটু লক্ষ্য রাখতে হবে কতটা পরিমাণে মুড স্যুইং হচ্ছে। এই সময় সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। কাউন্সেলিং করানো যেতে পারে।
নতুন মাকে সঙ্গ দিন
যিনি সদ্য মা হয়েছেন তাঁর কাছে এই অভিজ্ঞতা নতুন তাই পরিবারে যাঁরা আছেন তারাই একমাত্র পারেন নতুন মাকে সাহায্য করতে। তাঁকে সঙ্গ দিতে হবে। শিশু তো তার একার নয়, পরিবারের তাই সেই শিশুর টেক কেয়ার করতে হবে পরিবারকেও। সমস্যা হলে কথা বলতে হবে। অনেক ফ্যামিলিতে শ্বশুর-শাশুড়ি বা বাবা-মা মনে করেন মা হয়েছে তাই তাকেই এক্সপার্ট হতে হবে বাচ্চার দেখাশোনায়। না হলেই কথা শুনতে হবে। বাড়ির বড়রা শিশুটির দেখভাল তো করেনই না উল্টে নানারকম চাপ দিয়ে মেয়েটির জীবন দুর্বিষহ করে তোলেন। তাই প্রচণ্ড মুড ফ্ল্যাকচুয়েট করে। এই সময় মা শিশুকে ফিড করান যা খুব কঠিন তাই মায়ের পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। অনেক মা বাচ্চার জন্য সারারাত জেগে থাকেন। এতে ধীরে ধীরে মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটে। মা হয়েছে বলেই বাড়ি থেকে বেরবে না, কোনও আনন্দ করবে না এটা খুব ভুল। এর মাঝেই তাঁকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে হবে। প্রচণ্ড মুড স্যুইং হলে কাউন্সিলিং করাতে হবে প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে ওষুধ খেতে হতে পারে।
লাইফস্টাইল বদলান
লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্টেই জব্দ হবে মুড স্যুইং। অর্থাৎ প্রপার ডায়েট এবং এক্সারসাইজ সঙ্গে মেডিটেশন। ব্যায়াম বা যোগাসন করলে মস্তিষ্কে এন্ডরফিন ক্ষরণ হয় এই হরমোন আমাদের মুডকে এলিভেট করে ফলে মুড স্যুইং কমতে থাকে। যোগা, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, জুম্বা, মর্নিংওয়াক— এগুলো খুব ভাল। নিয়মিত ওয়র্ক আউটে সঙ্গে বাড়ির পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া জরুরি। কার্বোহাইড্রেট যতটা সম্ভব কম খাওয়া, প্রোটিন খেতে হবে বেশি করে। সয়ামিল্ক বা সয়াবিন বেশি করে খাওয়া— এতে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে ফলে মুড স্যুইং কমবে অনেকটাই।