মধ্যমগ্রামে ট্রলি ব্যাগ কাণ্ডে যাবজ্জীবন সাজা মা-মেয়ের

Must read

সংবাদদাতা, বারাসত : খুন করে দেহ ট্রলি ব্যাগে (Madhyamgram trolley bag case) ভরে পাচার করার চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে পুলিশে জালে মা ও মেয়ে। মধ্যমগ্রামের এই হাড়হিম করা ট্রলি ব্যাগ খুন কাণ্ডের রায় ঘোষণা করল বারাসত আদালত। সোমবার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক প্রজ্ঞাগার্গী ভট্টাচার্য (হুসেন) মা আরতি ঘোষ এবং মেয়ে ফাল্গুনি ঘোষকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, দু’জনকেই এক লক্ষ টাকা করে জরিমানার সাজা শোনানো হয়েছে। পিসি শাশুড়ি সুমিতা ঘোষ খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল আরতি ও ফাল্গুনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সুমিতার মৃতদেহ ট্রলি ব্যাগে ভরে কলকাতার গঙ্গার ঘাটে ফেলে আসার চেষ্টা করেছিল তারা। সন্দেহের বশে স্থানীয়দের নজরে পড়ে যায় ঘটনাটি। এরপরই উত্তর বন্দর থানার পুলিশ ট্রলি উদ্ধার করে এবং মা-মেয়েকে গ্রেফতার করে।

তদন্তে জানা যায়, বিবাহবিচ্ছেদের পর সুমিতা অসমে ভাইয়ের বাড়িতে থাকতেন। পরবর্তীতে তাঁর ভাইপো ফাল্গুনিকে বিয়ে করে। বিয়ের কয়েকমাস পর থেকেই শুরু হয় পারিবারিক কলহ। ফাল্গুনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে মায়ের কাছে মধ্যমগ্রামের দক্ষিণ বীরেশপল্লিতে থাকতে শুরু করে।

আরও পড়ুন-পাড়ায় পাড়ায় উৎসব, কেক কেটে উদযাপন, সোনার মেয়ে রিচার অপেক্ষায় শিলিগুড়ি

খুনের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে সুমিতাকে হত্যা (Madhyamgram trolley bag case) করে মৃতদেহ ঘরে রেখেই কলকাতায় আসে মা ও মেয়ে। বড়বাজার থেকে কেনে ট্রলি ব্যাগ এবং বউবাজারের একটি সোনার দোকানে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকার গয়নার অর্ডার দেয়। গয়নার বিল করা হয় নিহত সুমিতার নামেই। নিহতের মোবাইল থেকে অনলাইনে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিমও দেয় ফাল্গুনি। বাড়ি ফিরে পিসি শাশুড়ির মৃতদেহ হাতুড়ি দিয়ে পা ভেঙে ট্রলিতে ভরে ফেলার চেষ্টা করে তারা। পরদিন সকালে ভ্যানে করে দোলতলা পর্যন্ত নিয়ে যায়, সেখান থেকে ট্যাক্সিতে চেপে পৌঁছয় কলকাতার গঙ্গার ঘাটে। কিন্তু সন্দেহ জাগতেই স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ এসে রহস্যভেদ করে।

মামলার তদন্তভার নেয় মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। তদন্তে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয় বাড়ির সামনের পুকুর থেকে। ৩২ জন সাক্ষীর বয়ান এবং ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশের চার্জশিট জমা পড়ে বারাসত আদালতে। মাত্র আট মাসেই শেষ হয় বিচারপ্রক্রিয়া। সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা চেয়েছিলাম দ্রুত বিচার হোক, আদালতও সেই অনুযায়ী রায় ঘোষণা করেছেন। সোমবার রায়ের সময় আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।

Latest article