কলকাতার মা, টেরিজা

পৃথিবীর যাবতীয় দুঃখ মোচনের স্বপ্নকে রূপ দেবার জন্য নিজের জীবনকেই উৎসর্গ করেছিলেন মাত্র আঠারো বছর বয়সেই। সেবাব্রত নিয়ে পা রেখেছিলেন ভারতে মাটিতে। কলকাতাই ছিল তাঁর ধ্যান, জ্ঞান, জীবন। এই শহর থেকেই গোটা পৃথিবীকে বিলিয়েছেন দয়া আর করুণা। নিজে দরিদ্র থেকে সেবা করে গেছেন আর্তের। তিনি কলকাতার মা— আমাদের মাদার টেরিজা। আগামী ২৬-এ সেই মায়ের জন্মদিন। তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানালেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

সন্তায়ন
ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যার।
লক্ষাধিক মানুষের একটা ভিড়। যেখানে একটা আলাদা সাদা অংশে যাজকদের আর মাদারের ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’-র সন্ন্যাসিনীদের আসন।
উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে একটি সুসজ্জিত মঞ্চ। সামনে সারি বাঁধা দর্শকাসন। সকাল ১০টা থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল প্রার্থনা। থেকে থেকেই ঘণ্টাধ্বনি। সেখানে উপস্থিত দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিদল বিশেষ করে ভারতীয় প্রতিনিধি দল। পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রয়েছেন সেখানে। কিন্তু কী কারণে এত মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গের সমাগম!

আরও পড়ুন-কুস্তির বিজয়কেতন

কিছুক্ষণ পরেই শোভাযাত্রা-সহ এলেন পোপ ফ্রান্সিস। যাজকদের সমবেত মন্ত্রোচ্চারণে শুরু হল মূল অনুষ্ঠান। ২০১৬-র ৪ সেপ্টেম্বর। সেদিন সেখানে কলকাতার মা, মাদার টেরিজার সন্তায়ন অনুষ্ঠান। তিনি ‘সেন্ট’ বা সন্ত উপাধিতে ভূষিত হবেন। পোপের কাছে মাদার টেরিজাকে ‘সেন্ট টেরিজা অব ক্যালকাটা’ হিসেবে গণ্য করার আর্জি পেশ করলেন ‘প্রিফেক্ট’ কার্ডিনাল অ্যাঞ্জেলো আমাতো। লাতিন ভাষায় মাদারের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করলেন তিনি। জীবনী পাঠের পর আবার প্রার্থনা। তার পরেই সেই বহুপ্রতীক্ষিত সেই মুহূর্ত। ‘দ্য ফরমুলা অব ক্যাননাইজেশন’ পাঠ করলেন পোপ। যার মর্মার্থ— আজ থেকে ‘সন্ত’ বা সেন্ট হলেন কলকাতার মাদার। সমবেত কণ্ঠে ধ্বনিত হল ‘আমেন’। এক মুহূর্ত সব চুপ। তার পরেই সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারে হাততালির কলরোল। ঠিক তার পরেরদিন ছিল মাদার টেরিজার ১৯তম মৃত্যুদিন।
‘সন্তায়ন’ বা ‘ক্যাননাইজেশন’ বহু প্রাচীন এক খ্রিস্টধর্মীয় পরম্পরা। এখনও পর্যন্ত সন্ত হয়েছেন ৮১০ জন। এক-এক জনের সন্ত হতে অনেক সময়— এক শতাব্দীও কেটে যেত। কিন্তু সন্ত হওয়ার প্রক্রিয়াতেও এসেছে নানা সংস্কার। মাদার সন্ত হলেন মৃত্যুর মাত্র ২০ বছরে।
মাদারের ‘সন্তায়ন’ অনুষ্ঠানের শেষে নিজের বক্তৃতায় পোপ ফ্রান্সিস বললেন, ‘‘আমরা তো এখন ওঁকে ‘মা’ বলেই ডাকতে পারি। হয়তো অনেকের ওঁকে ‘সন্ত’ বলতে অসুবিধে হবে। উনি আমাদের এতই আপন যে, আমরা তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ‘মা’ বলেই ডেকে যাব।’’
এটা খুব সত্যি কথা যে মাদার টেরিজা সন্তের চেয়েও বেশি সবার মা। যিনি ঈশ্বরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে একদিন ঘর ছেড়েছিলেন। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই অপার দয়া ও করুণা বিলিয়ে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন-দেশে নিষিদ্ধ হল ১৫৬ ককটেল ওষুধ

কলকাতার সঙ্গে জুড়লেন
কলকাতার সঙ্গে মাদারের ছিল আজন্মের আত্মিক বন্ধন। স্কোপজের পাবলিক স্কুলে পড়বার সময়েই সোডালিটি সংঘের মিশনারিদের কাজকর্মের প্রতি তাঁর মন আকৃষ্ট হয়। তিনি তখন অ্যাগনেস গোনক্সহা বোজাক্সহিউ। সংঘের পত্রপত্রিকাগুলি নিয়মিত পড়তেন। ওই পত্রিকাতেই ভারতের অনেক খবর প্রকাশিত হত। স্কোপজে পাবলিক স্কুলের ক্লাসে যুগোস্লাভিয়ার জেসুইটদের চিঠি পড়ে শোনানো হত। ওই সব চিঠিতেও কলকাতার কথাও বিশেষভাবে থাকত। সেগুলো শুনে শুনেই কলকাতার প্রতি এক তীব্র টান তৈরি হয়েছিল তাঁর মনে। খবর নিয়ে জানলেন আয়ারল্যান্ডের লরেটো সংঘ ভারতে কাজ করছে। তখন লরেটো সংঘের প্রধান কার্যালয় ডাবলিনে যোগাযোগ করলেন। তারপর মায়ের অনুমতি নিয়ে আয়ারল্যান্ডের বাথার্নহামে গিয়ে লরেটো সংঘে যোগ দিলেন। সিস্টারস অফ লরেটোতে কয়েক মাস প্রশিক্ষণের পরে ভারত-ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
অ্যাগনেস
যুগোস্লাভিয়ার দক্ষিণ অঞ্চলের একটি ছোট্ট গ্রাম স্কোপজে। সেখানকার এক আলবেনীয় রোমান ক্যাথলিক কৃষক নিকোলাস বোজাক্সহিউ এবং তাঁর স্ত্রী দ্রোনাফাইল কোনও দিন ভাবতে পারেননি তাঁদের অতি-শান্ত কন্যাটি একদিন পৃথিবীর যাবতীয় দুঃখ মোচনের কান্ডারি হবেন! মানবসেবায় নিজের জীবনকেই উৎসর্গ করবেন। বোজাক্সহিউ পেশায় ছিলেন মুদি। বাবাই মেয়ের নামকরণ করেন অ্যাগনেস গোনক্সহা বোজাক্সহিউ। সহজ ছিল না তাঁর জীবন। তাঁরা দুই বোন ও এক ভাই। অ্যাগনেসের একটা পা একটু কৃশ ছিল তাই একটা লজ্জা, সংকোচ তাঁকে তাড়া করে বেড়াত। মাত্র সাতবছরে পিতৃহারা হলেন। তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। মা খুব কষ্ট করে বড় করে তোলেন তাঁদের। অল্প বয়স থেকে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস, দরিদ্র আর্তের প্রতি দয়ার মনোভাব মা-ই তাঁর মধ্যে প্রোথিত করেন।

আরও পড়ুন-কৃষি দফতরের পোর্টালে আবেদন নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু, ৭৫ হাজার কৃষককে আধুনিক সরঞ্জামে বরাদ্দ ২৫০ কোটি টাকা

এলেন প্রাণের শহরে
অ্যাগনেস প্রথম বাংলার মাটি ছুঁলেন ১৯২৮ সালে।তখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ভারত। মাত্র ১৮ বছর বয়সে মিশনারির সেবাব্রত নিয়ে চলে এলেন কলকাতায়। প্রথমবার পা রাখলেন কলকাতায়। এখানে এসে তাঁর মনে হল এ তো তাঁরই জায়গা। এখানকার মানুষজন সব তাঁর আপনজন। সেই থেকেই অ্যাগনেস হয়ে গেলেন মনেপ্রাণে বাংলার মানুষ। তখনও পুরোপুরি সন্ন্যাসিনী হননি। আয়ারল্যান্ডের অধিবাসিনী মহীয়সী নারী সেবিকা-সন্ন্যাসিনী লরেটার জন্যেই তিনি ভারতে এসে সেবাব্রতে আত্মনিয়োগ করতে পেরেছিলেন। অ্যাগনেসের জীবনে তাঁর অনেকটাই প্রভাব ছিল। লরেটার জীবনদর্শনে অনুপ্রাণিত করে তাঁকে।
এরপর তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় দার্জিলিংয়ে কারণ তখনও তাঁর শিক্ষানবিশি পর্ব শেষ হয়নি। দু’বছরের পাঠক্রম শেষ করে সেখানে তিনি গ্রহণ করলেন সন্ন্যাসিনী ব্রত। সিস্টার অ্যাগনেস হয়ে ফিরে এলেন কলকাতায়। এখানে ফিরে এন্টালি সেন্ট মেরিজ স্কুলের বাংলা বিভাগে শিক্ষয়িত্রী হিসেবে নিযুক্ত হলেন। তাঁর পড়াবার বিষয় ছিল ভূগোল ও ইতিহাস। কুড়ি বছর তিনি ওই স্কুলের শিক্ষয়িত্রী ছিলেন। এরপর সেই স্কুলের অধ্যক্ষা হন। সময়টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। এক অস্থির পরিস্থিতি। দুর্ভিক্ষ চলছে। দু’মুঠো ভাতের আশায়, একবাটি ফ্যানের আশায় গ্রামগঞ্জের মানুষ ভিড় করছে কলকাতায়। অনাহারে মৃত্যু হচ্ছে বহু মানুষের। কাছেই মতিঝিলের দরিদ্র বস্তিবাসীর ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের, শিশুদের কষ্ট তাঁকে খুব বিচলিত করত। মাদার সেদিন উপলব্ধি করেন আর্তের সেবা করতে হলে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে হলে চার দেওয়ালের নিশ্চিন্ত গণ্ডি পেরিয়ে তাঁকে বেরিয়ে আসতে হবে।

আরও পড়ুন-দায়িত্ব নেওয়ার পর সূত্র হাতড়ে বেড়াচ্ছে, আর কারা জড়িত জানাতে ব্যর্থ এজেন্সি

মহামানবীতে উত্তরণ
১৯৪৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর দার্জিলিং যাবার সময়ই তাঁর এই উপলব্ধি আরও গভীর হয়। তিনি যেন যিশুর আদেশ শুনতে পেলেন। ফাদার সেলেস্তে ভ্যান এক্সেমকে খুব মানতেন অ্যাগনেস। ফাদার ছিলেন তাঁর আধ্যাত্মিক গুরু। তাঁকে বললেন নিজের মনের সেই গোপন ইচ্ছের কথা। ফাদার চমকে গেলেন, বললেন— কী বলছ টেরেসা! শিক্ষকতার মতো নিশ্চিন্ত লোভনীয় একটা পেশা ছেড়ে গরিব, দুঃখী, আর্তের সেবা করবে? সন্ন্যাসিনী হবে? তাঁর উত্তরে টেরেসা সেদিন বলেছিলেন, সব প্রভু যিশুর ইচ্ছে।
ফাদার একটু চুপ থেকে তারপর বললেন, ভাল লাগল তুমি গুড সামারিটন হতে চাও। কিন্তু কাজটা খুব কঠিন। ভ্যাটিকানের পোপের অনুমতির প্রয়োজন। অবশেষে অনেক চেষ্টার পর পোপের অনুমতি মিলল। ১৯৪৮ সালের ১৭ অগাস্ট লরেটো কনভেন্ট ছেড়ে মানবসেবার কাজে আত্মনিয়োগ করলেন। হয়ে উঠলেন সবার মাদার টেরিজা। গরিবের সেবা করতে হলে গরিব হয়ে তাদের মধ্যে থেকেই তা করতে হবে। ঈশ্বরের এই আদেশ পাবার দিনটিকে আমৃত্যু স্মরণ করতেন মাদার। তিনি বলতেন দ্য ডে অব ডিসিশন— অনুপ্রেরণার দিন। মাদারের ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’ এই দিনটিকে অনুপ্রেরণার দিবস হিসেবে পালন করেন।
এক সাধারণ নারী থেকে উত্তরণ হল এক মহামানবীতে। কলকাতার এন্টালি এলাকার বস্তির দুঃস্থ অসহায় মানুষ, শিশুদের সেবার মধ্যে দিয়ে শুরু হল তাঁর জয়যাত্রা। এই সময় থেকেই লরেটোর সন্ন্যাসিনীদের পোশাক ছেড়ে পরলেন সাদা ধবধবে নীল পাড়ের শাড়ি। সেদিন তাঁর সম্বল ছিল পাঁচ টাকা, একটা বাইবেল, একটা ক্রস গাঁথা জপমালা। আর ছিল অদম্য মনোবল।
পুরোপুরিভাবে কাজে নামার আগে নিজেকে তৈরি করে নিতে পাটনায় দি সোসাইটি অব ক্যাথলিক মেডিক্যাল মিশনারিজ পরিচালিত একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিলেন। আবার ফিরলেন কলকাতায়।
থাকতেন মতিঝিলেরই একটা ছোট বস্তির ভাড়া ঘরে। গ্রহণ করলেন ভারতীয় নাগরিকত্ব। শুরু হল দুর্গতদের জন্য তাঁর কঠোর সংগ্রাম। গাছতলায় চালু করলেন ছোটদের স্কুল। সারাদিন মানুষের সেবা করতেন, অসুস্থদের শুশ্রূষা করতেন তারপর রাতে শুতে যেতেন লোয়ার সার্কুলার রোডে সেন্ট যোশেফ হোমে। এই আশ্রমটি ছিল বৃদ্ধাদের, সেখানেও তিনি সেবা করতেন।

আরও পড়ুন-৪০ জন যাত্রী নিয়ে নেপালের নদীতে বাস, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

মিশনারিজ অফ চ্যারিটি
অবশেষে মাত্র আটজন সন্ন্যাসিনীকে নিয়ে লোয়ার সার্কুলার রোডে শুরু করলেন ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’। এখন এই রাস্তাটির নাম আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোড। মাত্র পাঁচ টাকা মূলধন নিয়ে তিনি যে ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’ গড়ে তুলেছিলেন তা আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। মানবসেবা ও শিক্ষার সম্প্রসারণের জন্য তিনি বহুদেশে, শিশুদের হোম, মহিলা কর্মকেন্দ্র, ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্র, খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ কেন্দ্র এবং কুষ্ঠাশ্রম স্থাপন করেছেন। পৃথিবীর প্রায় ৫২টা দেশ জুড়ে রয়েছে মাদার টেরিজার সেবাকেন্দ্র। ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’তে রয়েছে পুরুষ কর্মীরাও যাঁদের বলা হয় ‘ব্রাদার অব মিশনারিজ’। একই আদর্শ এবং বিশ্বাসে তাঁরাও সন্ন্যাসিনীদের সঙ্গে সমানভাবে কাজ করে চলেছেন। প্রথমে এই প্রতিষ্ঠান ছিল কলকাতার আর্চ বিশপের অধীন। তারপর থেকে তা ভ্যাটিকানের পোপের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রতিষ্ঠানের নিয়মকানুন বেঁধে দিয়ে গেছেন মাদার নিজেই। অন্যান্য রোমান ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনীদের মতো এই সংগঠনের সদস্যরাও দারিদ্র, সততা এবং নিয়মানুবর্তিতার শপথ গ্রহণ করেন।
মাদার সেবার কাজ করতেন সবসময় পায় হেঁটেই। ১৯৬৪ সালে তাঁর ব্যবহারের জন্য পোপ ষষ্ঠ পল ভারতে এলে নিজের সাদা লিমুজিন গাড়িটি মাদারকে দান করেন। তিনি সেই গাড়ি ব্যবহার করেননি। সেটাকে নিলামে বিক্রি করে কুষ্ঠরোগীদের আবাস নির্মাণ করেছিলেন। কলকাতার বাইরে তাঁর প্রথম আশ্রমটি ছিল ‘সিস্টার্স অব চ্যারিটি’। এরপর মুম্বইয়ে। তারপর একে একে ভেনেজুয়েলা, রোম, কলম্বিয়া, বলিভিয়া, ব্রাজিল, লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ, অস্ট্রেলিয়া, জর্ডন, ইয়েমেনে তৈরি করলেন নিজের সেবাকেন্দ্র, শিশুহোম।
দীন দরিদ্রের মা
তিনি ছিলেন দীন দরিদ্রের মা। নিজে জীবনধারণ করতেন তাঁদের মতো করেই। মাদারের ভাষায়—
“to be able to love the poor and know the poor we must be poor ourselves.”
মাদারের মতোই বাকি সন্ন্যাসিনীদেরও সম্বল নীলপাড় মোটা শাড়ি, একটি প্রার্থনার বই এবং একটি ক্রুশ। তাঁরা আত্মীয়স্বজনের কোনও সাহায্য নেন না, প্রতিটি কাজ নিজের হাতেই করেন। মাদার হাউসে কোনও বৈদ্যুতিক পাখা ছিল না। কেবল অতিথিদের জন্য ছাড়া।
ছোট্ট অপরিসর একটি ঘরে মাটিতে পাতা বিছানায় মাদার ঘুমোতেন। তখন নিজের জন্য মাসে ব্যয় করতেন মাত্র ষাটটি টাকা। এর মধ্যেই খাওয়া, পরা, ওষুধ ইত্যাদি। মানবসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ শান্তির জন্য মাদার টেরিজা পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার। পেয়েছেন ভারত সরকারের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ভারতরত্ন। এছাড়াও বহু পুরস্কার আর সম্মান পেয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই সম্মাননা তাঁর সুবিশাল কর্মযজ্ঞের কাছে খুবই ক্ষুদ্র। পুরস্কারের সব অর্থই তিনি মানবসেবায় দান করে গেছেন।

Latest article