প্রতিবেদন : আরজি কর-কাণ্ডের (R G Kar Case) প্রতিবাদে রাজ্য তথা দেশ জুড়ে চলছে আন্দোলন। যার জেরে ব্যাহত চিকিৎসা-পরিষেবা। হাহাকার রোগীদের মধ্যে। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকেরা কর্মবিরতির ডাক দেওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে রোগী-পরিষেবা। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে স্বাস্থ্য সচিব নির্দেশ দিয়েছেন আন্দোলন চলুক তবে পরিষেবা সচল রাখতে হবে। আন্দোলনের জেরে যাতে কোনও প্রাণহানি না ঘটে সেই বিষয়ে নজর রাখতে হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ পাননি। অন্য দিকে, বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি বিভাগ সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন একজন মাত্র চিকিৎসক। রোগীর ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। যথাযথ পরিষেবা পাচ্ছেন না সঙ্কটাপন্ন রোগীরাও। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজেও বন্ধ রয়েছে বহির্বিভাগ। কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারের গ্রিল আটকে রেখেছেন। ফলে চিকিৎসার জন্য এসেও ফিরে যেতে হচ্ছে হাজার হাজার রোগীকে। দেখা যাচ্ছে, সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও আউটডোর, ইমারজেন্সি অপারেশন থিয়েটার সব জায়গাতেই থমকে পরিষেবা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং বালুরঘাটে সোমবার দুই রোগীর মৃত্যু ঘটে বিনা চিকিৎসায়। একদিকে যখন চিকিৎসকরা বসে ‘নো সেফটি নো ওয়ার্ক’ স্লোগান তুলে প্রতিবাদ দেখাচ্ছে ঠিক সেই সময় মুমূর্ষু রোগীদেরকে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাসপাতাল ছাড়ছেন তাঁর পরিজনেরা। উদভ্রান্তের মতো দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন কোথায় স্বজনের একটু চিকিৎসা হবে সেই আশায়। আরজি করে সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ এমার্জেন্সি বিভাগে এক রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যান। আবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে খড়দহ থেকে আসা ৮০ বছরের এক বৃদ্ধর প্রেসক্রিপশন এবং টিকিট ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় আন্দোলনের জেরে। রোগীর পরিবারেরা জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের আন্দোলন যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত তবে আন্দোলনের জেরে বাকি রোগীদের যে হয়রানি হচ্ছে তা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। চিকিৎসকদের এই আন্দোলনে পরিষেবা যেভাবে ব্যাহত হচ্ছে তাতে ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবাররা। ন্যায় বিচার অবশ্যই প্রয়োজন কিন্তু তার জন্য বাকি প্রাণ প্রশ্নের মুখে পড়বে সেটা কখনওই কাম্য নয়।