মুক্তিযুদ্ধের সব স্মৃতি মুছতে চাইছে বাংলাদেশের (Bangladesh) তদারকি সরকার। ‘জাতির পিতা’-র পরে এবার ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটিও বাদ দেওয়া হল মুজিবুর রহমানের নাম থেকে। তাঁর নামের আগে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি বাদ দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে পাঠ্যবইয়ে একের পর এক পরিবর্তন এনেছে। গত বছর ‘জাতির পিতা’ শিরোপা বাতিল করে দিয়েছিল তদারকি সরকার। নতুন নোট থেকেও মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০২৬ শিক্ষাবর্ষের অষ্টম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পাঠ্যবইের ২১ নম্বর পাতায় ৭ মার্চের ভাষণের কথা বলা আছে। সেইখানে মুজিবুর রহমানের আগে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি ব্যবহার নেই। একই ভাবে ক্লাস টেনের পাঠ্যবই ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’- এ নেই ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি। তবে এই একই পাঠ্যবইয়ে এর আগে মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ বলা হলেও এই বারের বইয়ে তার কোনও উল্লেখ নেই।
তবে এনসিটিবি সূত্র এর পাল্টা দাবি করেছে, “পাঠ্যবইয়ে ‘শিরোনাম’ কিংবা ‘উপাধি’ হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ‘বঙ্গবন্ধু’ দেওয়া হলে সেটি সংশোধন করা হয়নি। তবে শুধু নাম বলার বা বোঝানোর ক্ষেত্রে ‘বঙ্গবন্ধু’ থাকলে সেখানে সংশোধন করে ‘শেখ মুজিবুর রহমান’ করা হয়েছে।”
১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তি লাভ করেন শেখ মুজিবুর। ২৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঢাকার রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক জনসভার আয়োজন করে। সেখানে তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়। তবে ‘বঙ্গবন্ধু’ তাঁর রাষ্ট্রীয় শিরোপা ছিল না। এই উপাধির কথা ঘোষণা করেছিলেন তখনকার ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ।
এর আগে বাংলাদেশ সরকারের আদালত জানিয়েছে, তারা মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা বলে মানবে না। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে ১৭ মার্চ ছুটি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ইউনূস সরকার। তবে শেখ মুজিবুর রহমানকে এখনও ‘জাতির পিতা’ বলে উল্লেখ করা আছে বাংলাদেশের সংবিধানে। এছাড়া সরকারি ভাবেও এই শিরোপা বাতিল করার নির্দেশ নেই।

