প্রতিবেদন : মন খারাপের দশমীতে বিষাদের সুরে উমাকে বিদায় জানাল বাঙালি। কলকাতার একের পর এক গঙ্গার ঘাটে হল কয়েকহাজার প্রতিমার নিরঞ্জন। আর শহর জুড়ে হাজারও শোভাযাত্রা আর প্রতিমা বিসর্জনের আয়োজন-পরিচালনায় ফুলমার্কস পেল পুরসভা ও পুলিশ প্রশাসন। প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবছরও গঙ্গার ঘাটগুলির ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তায় বাড়তি নজর রয়েছে রাজ্যের। পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে খবর, খিদিরপুরের দইঘাট থেকে শুরু করে জাজেস ঘাট, বাবুঘাট, বাজেকদমতলা, নিমতলা, কুমোরটুলি, আহিরীটোলা ও বাগবাজার ঘাটে বৃহস্পতিবার বনেদিবাড়ি, বারোয়ারি কিংবা আবাসনের পুজো মিলিয়ে প্রায় হাজার পাঁচেক প্রতিমার নিরঞ্জন সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন-বেঙ্গালুরুর পালবাড়ির পুজোয় বাঙালি সংস্কৃতির সেতুবন্ধন
এদিকে দুর্যোগের আশঙ্কা থেকে বুধবার বিশেষ জরুরি বৈঠক ও ঘাট পরিদর্শনের পর দশমীর সন্ধ্যায় পুর-কমিশনার ধবল জৈনকে সঙ্গে নিয়ে ফের বাজে কদমতলা ঘাটে হাজির হন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থাপনা তদারক করেন মহানাগরিক। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, পুরসভা সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলও প্রস্তুত রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও যাতে প্রতিমা বিসর্জনে কোনও অসুবিধা না হয়, সে বিষয়ে আমাদের বিশেষ নজর আছে। আবার প্রতিমার রঙের কেমিক্যাল মিশে যাতে গঙ্গাদূষণ না হয়, সেদিকেও নজর থাকছে। দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে একজন করে এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিযুক্ত রেখেছে পুরসভা।
এছাড়াও বিসর্জনের প্রস্তুতিতে গঙ্গার ঘাটগুলির জন্য আলাদা আলাদা স্বেচ্ছাসেবকদল মোতায়েন করা হয়েছে। তারা দিনরাত ঘাটগুলিতে টহল দেবে। প্রতিটি ঘাটে ক্রেন, অস্থায়ী আলোকসজ্জা, লাইফবোট, ডুবুরিদল ও বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বড় পুজোগুলির পাশাপাশি ছোট বারোয়ারি পুজো বা বাড়ির ঠাকুরের বিসর্জনেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জনে নিরাপত্তা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে স্থানীয় প্রশাসন ও ক্লাব কর্তাদের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, নির্বিঘ্নভাবে বিসর্জনের শোভাযাত্রা পরিচালনায় বিশেষ রুট ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। মোট ২৩৮টি রুটকে নজরদারি রুট হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় হাজার-হাজার পুলিশকর্মী ডিউটিতে রয়েছেন। আবার শহরের ১৩টি বড় মণ্ডপে প্রতিমার গায়ে থাকা সোনা-রুপোর গয়নাগুলি রক্ষার জন্য আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রতিটি মণ্ডপে দু’জন রাইফেলধারী পুলিশকর্মী এবং অন্তত দু’টি সিসিটিভি ক্যামেরা রাখা হয়েছে।