প্রতিবেদন : রাস্তার ধারে এক বাতিস্তম্ভ থেকে অন্যের গায়ে, এপার থেকে ওপারে মাথার উপর তাকালেই তারের জটলা। বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে কেবল টিভি-টেলিফোন-ইন্টারনেটের তারের জটলায় যেন মাকড়সার জাল! এর জন্য কলকাতার মতো ঐতিহ্যবাহী ও পর্যটকবান্ধব শহরের সৌন্দর্য তো নষ্ট হয়ই, সমস্যা হয় নাগরিক পরিষেবাতেও। তাই শহরকে আরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ও সৌন্দর্যায়নে জোর দিতে বছরখানেক ধরেই উদ্যোগী হয়ে কাজ করছে কলকাতা পুরসভা। দফায় দফায় সেই তারের জঞ্জাল সরিয়ে ফুটপাথের নিচে কেবল ডাক্ট বসাচ্ছে পুর-কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই শহরের ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় বা ফুটপাথের নিচে ডাক্ট বসিয়ে মাথার উপর থেকে তারের জটলা সরানো হয়েছে। এবার শহরের আরও ৪০ কিলোমিটার রাস্তাকে তারের জঞ্জালমুক্ত করার কাজ শুরু করছে পুরসভা। চলতি অর্থবর্ষ শেষের আগেই তিলোত্তমার আরও ১০টি রাস্তায় মাথার উপর থেকে উধাও হবে এই তারের সাম্রাজ্য।
আরও পড়ুন-ফের রবিবার বন্ধ বিদ্যাসাগর সেতু
কিছুদিন আগেই বড়বাজারে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে রাস্তার ধারে তারের জঞ্জাল নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই এই কাজে ফের তৎপরতা বাড়িয়েছে কলকাতা পুরসভা। সোমবার সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় আধিকারিকদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন পুর-কমিশনার সুমিত গুপ্তা। পুর-কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, মার্চের মধ্যে আরও ৪০ কিমি পথে এই কাজ সেরে ফেলার টার্গেট নেওয়া হচ্ছে। ইলেকট্রিক, ইন্টারনেট ও কেবল তারের সঙ্গে পুরসভা চাইছে ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে শুরু করে পুলিশের সিসি ক্যামেরার তারও যেন এই কেবল ডাক্টের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। পুরসভার তরফে এই নিয়ে লালবাজারকে শীঘ্রই চিঠি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন-ডব্লুবিসিএস ২০২৬ : আবেদন করা যাবে ১৮ নভেম্বর থেকে
পুরসূত্রে খবর, প্রথমবার হরিশ মুখার্জি রোডে এই কাজ হয়েছিল। দু’দিকের ফুটপাথ মিলিয়ে ৩-৩.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে কেবল ডাক্টের পাইপলাইন পাতা হয়েছে। তারপর ধাপে ধাপে আরও পাঁচটি রাস্তায় এই কাজ হয়েছে। সব মিলিয়ে দু’দফায় ৩০ কিমি অংশে ডাক্ট বসানো হয়েছে। এবার নতুন করে ১০টি রাস্তা চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে হাজরা রোড, এসপি মুখার্জি রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড, শেক্সপিয়র সরণি, ক্যামাক স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোড, পার্ক স্ট্রিট, চেতলা সেন্ট্রাল রোড, চৌরঙ্গী রোড এবং ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যাভিনিউ। ধাপে ধাপে শহরের ১৬০ কিমি রাস্তায় কেবল ডাক্ট বসানো হবে। প্রথম দুই ধাপে ৩০ কিমি রাস্তায় এই কাজের জন্য সাড়ে চার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। এবার খরচের পরিমাণ ৮ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

