মানস দাস,মালদহ: অন্ধকার নেমে এসেছে মহানন্দার পাড়ে। বিসর্জনের আগে আবছা মা দুর্গার মুখ। মনখারাপে চোখে জল বাদল, রহিম, নয়না, সাবিনাদের চোখে। গ্রামের মেঠো পথে আলো নেই। বিদায় বেলায় মায়ের মুখ দর্শণ করতে লন্ঠন হাতে দাঁড়িয়ে রহিম। দশমীর গোধূলি লগ্নে সম্প্রীতির ছবি ধরা পরল চাঁচলের পাহাড়পুরের মহানন্দার ঘাটে।
আরও পড়ুন-সক্রিয় প্রশাসন, রায়গঞ্জে নির্বিঘ্নে বিসর্জন
প্রায় সাড়ে তিনশ বছরের পুরনো রীতি মেনে আজও দেবী দুর্গার বিদায়বেলায় লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে বিদায় জানান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। চাঁচোলের রাজা রাম চন্দ্র রায় বাহাদুর আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে এই শুরু করেন। ৩৫০ বছরের পুরনো পুজো। বর্তমানে রাজা নেই, নেই তার রাজত্ব। কিন্তু রয়ে গিয়েছে রাজ আমলের প্রবর্তিত রীতি। আর রীতি মেনেই দশমীর দিন গোধূলি লগ্নে চাঁচল পাহাড়পুরের চন্ডী মন্দিরের মহানন্দা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয় দেবীপ্রতিমাকে। আর এই বিসর্জনের সময় নদীর পাড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ লণ্ঠনের আলো জ্বালিয়ে মা কে বিদায় জানান। কথিত আছে চাঁচলের মহানন্দা নদীর তীরবর্তী এলাকার বিদ্যানন্দপুর গ্রামে ভয়াবহ মহামারী দেখা দেয়।
আরও পড়ুন-সিঁদুরখেলার মধ্যে দিয়ে এই বছরের মত শেষ হল সাউথ মাদ্রাজ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গোৎসব
মহামারি থেকে মুক্তি পেতে পাহাড়পুরের চন্ডী মন্দিরের দেবী স্বপ্নে হারিকেনের আলো দেখাতে বলেন। সেই থেকেই ওই এলাকার মানুষেরা আজও মাকে লন্ঠনের আলো জ্বালিয়ে দশমীর দিন বিদায় জানান। শুক্রবার ঠিক গোধূলি লগ্নে মরা মহানন্দার ওই পাড় থেকে দেবী কে বিদায় জানান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে আস্তে হারিকেলেনর আলো এখন অনেকটাই ম্লান। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আলোতেও লেগেছে বিজিচালের ছোঁয়া। অনেকে মোবাইলের ফ্লা?শ লাইট জ্বালিলেও দেবীকে আলো দেখান। তবে বদলায়নি আলো দেখানোর রীতি।