এবার পুজোয় রাজস্থানে

রাজস্থানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এককথায় অসাধারণ। আছে বেশকিছু দর্শনীয় এবং ঐতিহাসিক স্থান। বিভিন্ন শহরে চোখে পড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড়। পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন। লিখলেন অংশুমান চক্রবর্তী

Must read

স্বপ্নের জায়গা রাজস্থান (Rajasthan)। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। স্থানীয় মানুষের সহজ-সরল জীবনযাপন মন ছুঁয়ে যায়। আছে বেশকিছু দর্শনীয় এবং ঐতিহাসিক স্থান। অক্টোবর থেকে শুরু হয় বেড়ানোর মরশুম। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ে। সমস্ত প্রধান শহর ও পর্যটক গন্তব্যস্থলগুলি পরিদর্শন করতে ১০ দিনের মতো সময় লাগে। পুজোর ছুটিতে সপরিবারে ঘুরে আসতে পারেন। প্রথমে যান রাজধানী জয়পুরে। তারপর অন্যান্য জায়গায়। কী কী দেখবেন?

অ্যালবার্ট হল জাদুঘর
অ্যালবার্ট হল জাদুঘর জয়পুরের রাম নিবাস বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত। লন্ডনের আলবার্ট জাদুঘরের আদলে নির্মিত। ইন্দো-সারসেনিক স্থাপত্য শৈলীর প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।

আম্বার দুর্গ
জয়পুর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে জয়পুর-দিল্লি মহাসড়কের পাশে একটি চূড়ায় অবস্থিত আম্বার দুর্গ। সাদা মার্বেল এবং লালপাথরের মিশ্রণে মুঘল ও রাজপুত স্থাপত্যের একটি সূক্ষ্ম মিশ্রণ দেখা যায়।

সিটি প্যালেস
জয়পুরের সিটি প্যালেস স্থাপত্যের একটি অত্যাশ্চর্য নির্দশন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে অম্বরের কচ্ছওয়াড়া রাজপুত রাজা-মহারাজা দ্বিতীয় জয় সিংহ নির্মাণ করেন। ভিতরে রয়েছে মার্বেলের কারুকাজ।

গালতা মন্দির
গোলাপি শহর জয়পুরের গালতা মন্দির একটি আকর্ষণীয় স্থান। পাহাড়ের চূড়ায় অধিষ্ঠিত এই মন্দিরটি সিসোদিয়া রানি-কা বাগের কাছে অবস্থিত।

হাওয়া মহল
জয়পুরে অবস্থিত হাওয়া মহল। ১৭৯৯ সালে মহারাজা সওয়াই প্রতাপ সিং নির্মিত। সিটি প্যালেসের অংশ। রাজস্থান ও মুঘল স্থাপত্যের বিস্ময়কর মিশ্রণ দেখা যায়। রাজস্থানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং প্রায় পাঁচতলার সমান উচ্চতাবিশিষ্ট এই সৌধে রয়েছে বিভিন্ন বর্ণবিশিষ্ট বেলেপাথরের কারুকাজ।

যন্তর মন্তর
মহারাজা সওয়াই জয় সিংহ নির্মিত পাঁচটি মানমন্দিরের মধ্যে জয়পুরের যন্তর মন্তরটি বৃহত্তম। গোলাপি শহরে অবস্থিত। সারা বিশ্বের শিল্পী, স্থপতি এবং দক্ষ ইতিহাস-রচয়িতাদের মনোযোগ আকৃষ্ট করে।

কুম্ভলগড় দুর্গ
কুম্ভলগড় দুর্গটি উদয়পুরে অবস্থিত। সমরপতি রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষের উপর ১৪৪৫ থেকে ১৪৫৮ সালের মধ্যে নির্মিত বলে মনে করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে এক জৈন রাজা এখানে বসবাস করতেন।

মেহরানগড় দুর্গ
ভারতের অসামান্য এবং ঐশ্বর্যশালী মেহরানগড় দুর্গটি রাজস্থানের যোধপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ১৫০ মিটার উঁচু পাহাড়ের উপর অবস্থিত। বহু মানুষ দেখতে যান।

আরও পড়ুন- বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বাঁচাতে নবান্নে জরুরি বৈঠক কৃষিমন্ত্রীর

রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান
ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য অভয়ারণ্য রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান। আরাবল্লি পর্বতমালা এবং বিন্ধ্য পর্বতের মালভূমির মধ্যে অবস্থিত। জলাভূমি ও হ্রদের কাছাকাছি অঞ্চলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখা যায়। অতীতে এলাকাটি জয়পুরের মহারাজাদের শিকারের স্থান হিসাবে চিহ্নিত ছিল।

সরিস্কা জাতীয় উদ্যান
সরিস্কা জাতীয় উদ্যানটি আরাবল্লি পর্বতমালায় শায়িত ও আলওয়ার জেলার মধ্যে অবস্থিত। ১৯৫৮ সালে অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষিত হয়। ১৯৭৯ সালে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে উদ্যানটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিভিন্ন উদ্ভিদকুল, প্রাণিকুল এবং বিভিন্ন পাখিদের গৃহস্থল। ঘুরে দেখা যায় আরও কয়েকটি শহর।

ঝুনঝুনা
ঐতিহাসিক শহর ঝুনঝুনা। জয়পুর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। চৌহান রাজবংশের সময়কাল থেকে একটি বাণিজ্যিক এবং লেনদেনের স্থান হিসাবে পরিচিত। শহরটি ধর্মীয় ভাবাবেগের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় রানি সতী মন্দির।

আলসিসার
ঝুনঝুনু জেলার ছোট্ট শহর আলসিসার। থর মরুভূমি দিয়ে ঘেরা। এখানকার আলসিসার মহল রাজপুত স্থাপত্য এবং সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন। এছাড়াও কেজরিওয়াল হাভেলি, রামদাস ঝুনঝুনওয়ালা কি হাভেলি লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির এখানকার দ্রষ্টব্য স্থান।

বারমের
থর মরুভূমির মধ্যে সেরা অফবিট শহর বারমের। এখানকার মহাবীর টিলাগুলো আশ্চর্যজনক। এছাড়াও সিওয়না ফোর্ট, যোগমায়া মন্দির, ব্রহ্মামন্দির পর্যটকদের কাছে বিশেষ গুরুত্বের।

নওয়ালগড়
শেখাওয়াটি অঞ্চলের এক ছোট্ট শহর নওয়ালগড়। একের পর এক হাভেলির জন্য দারুণ জনপ্রিয়। এক কালে উত্তর-পশ্চিম ভারতের ঐতিহ্যবাহী সামন্ত প্রভুরা তাঁদের আত্মীয়স্বজন, এমনকী কর্মচারীদের বসবাসের জন্য পাথরের তৈরি দুর্গের মতো যে প্রাসাদোপম বাড়িগুলো বানাতেন। সেগুলোকেই বলা হয় হাভেলি।

লঙ্গেওয়ালা
রাজস্থানি (Rajasthan) গ্রাম লঙ্গেওয়ালা। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এই গ্রামেই হয়েছিল। ভারত-পাক যুদ্ধের প্রেক্ষিতে তৈরি সুপার হিট বলিউড সিনেমা ‘বর্ডার’-এর আউটডোর শ্যুটিং প্রায় পুরোটা লঙ্গেওয়ালা গ্রামে হয়। থর মরুভূমির একেবারে মাঝখানে অবস্থিত।

বুন্দি
জায়গাটা কোটা-র কাছে অবস্থিত। শুধু বুন্দিতেই ৫০টা কূপ আছে। অনেকে একে লম্বা সিঁড়িময় পুষ্করিণীও বলে থাকে। উপর থেকে সিঁড়ি নেমে গিয়েছে পুকুরের জলস্তর অবধি। এ ছাড়াও রানি জি কি বাওরি, বুন্দিপ্রাসাদ, তারাগড় দুর্গ, সুখমাহল ইত্যাদি দেখার মতো।

Latest article