প্রতিবেদন: কোনও দেশের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ কতটা সঙ্কট ডেকে আনতে পারে অর্থনীতিতে, কীভাবে বাড়তে থাকে সামাজিক অবক্ষয়, তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ ভারতের প্রতিবেশী মায়ানমার। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ব্যক্তিগত বা পারিবারিক অর্থসঙ্কটের মোকাবিলায় যৌন-ব্যবসায় নামছেন সেদেশের মহিলা চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স, এমনকী স্কুল- কলেজের শিক্ষিকারাও। স্বাভাবিকভাবেই গত কয়েকবছরে মায়ানমারে যৌনকর্মীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। বেশি রোজগারের আশায় অনেকেই এখন আংশিক সময়ের পেশা হিসাবে বেছে নিচ্ছেন যৌনবৃত্তিকে। কোনও মনগড়া গল্প নয়,মার্কিন মিডিয়ায় প্রকাশিত সমীক্ষা রিপোর্টেই উঠে এসেছে এই ভয়াবহ অবক্ষয়ের ছবি।
আরও পড়ুন-প্রতিবাদীদের লাঠিপেটা করল পুলিশ
প্রশ্ন হচ্ছে , সামরিক জুন্টা সরকারের কি এই প্রবণতার কথা অজানা? সমাজতত্ববিদদের একাংশ বলছেন, জেনেও না জানার, দেখেও না দেখার ভান করছে তারা। আসলে বাস্তব পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ব্যাপারটা নিয়ে ঘাঁটাতে চাইছে না তারা। কারণ সমীক্ষা রিপোর্টের দাবি, সেনা বা পুলিশের গুলিতে নিহত অসহায় পরিবারগুলোই মূলত বেঁচে থাকার তাগিদে এই ব্যবসায় নামতে বাধ্য হচ্ছে। সেনা অভ্যুত্থানের পরে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন অনেক নিরীহ মানুষ। তাঁদের অনেকের ঘরের মহিলা-শিশুরাই পেটের জ্বালায় দীর্ঘদিন ধরে চোখের জল ফেলেছেন নীরবে। ফিরেও তাকায় নি সামরিক জুন্টা সরকার কিংবা বিদ্রোহীরা। শিশুদের মুখে সামান্য খাবার তুলে দিতে জায়গাজমি, ঘটিবাটি বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হতে হয়েছে তাঁদের। দেওয়ালে পিঠ যাওয়ায় আদিমতম ব্যবসায় নামতে বাধ্য হয়েছেন ওই মহিলারা।
আরও পড়ুন-দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করার চক্রান্ত করছে বিজেপি, বিস্ফোরক কেজরিওয়াল
আসলে গৃহযুদ্ধ আর কোভিডের চোখরাঙানি –এই দ্বিমুখি আক্রমণে গত ৩ বছরে মায়ানমারে দ্রুতগতিতে নেমে যাচ্ছে অর্থনীতির সূচক। মুদ্রাস্ফীতি পৌঁছে গিয়েছে ২৬ শতাংশে। ফলে আগুন লেগেছে বাজারদরে। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে ৪১৫ ডলারও পকেট থেকে উবে যাবে এক পলকে। ফলে অন্ধকারে হাতড়ে মরছেন অসহায় মানুষ।