প্রতিবেদন: দীর্ঘ টালবাহানার পর তদন্ত শেষ হয়েছিল। প্রায় ১১ বছর পরে মহারাষ্ট্রের সমাজকর্মী নরেন্দ্র দাভোলকরের খুনের ঘটনায় দোষীদের সাজা শোনাল পুনের স্পেশাল কোর্ট। দাভোলকরের উপর গুলি চালানোয় অভিযুক্ত দুজনকে যাবজ্জীবনের সাজা শোনায় আদালত। তবে সিবিআইয়ের তদন্তে প্রমাণের অভাবের কারণে মুক্তি পেয়ে যায় আরও তিন অভিযুক্ত। রায়ের পরই দাভোলকরের পরিবারের দাবি, গুলি চালানোয় দুজনের শাস্তি হলেও তাদের পিছনে যারা প্রকৃত চক্রান্তকারী, তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তিন অভিযুক্তর মুক্তির ঘটনায় কার্যত সিবিআইয়ের ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুন-গোধরা-পুলওয়ামার কথা শুনেছি দেখলাম সন্দেশখালি : অভিষেক
অভিযোগ, হিন্দুত্ববাদী শক্তি এই বিখ্যাত সমাজকর্মীর হত্যাকাণ্ডের পিছনে মূল চালিকাশক্তি ছিল। পরিকল্পিতভাবে বর্তমান বিজেপি জমানায় সিবিআই তদন্তকে ভুল পথে চালিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি লঘু করার চেষ্টা হয়েছে। ২০১৩ সালে নিজের বাড়ির কাছে হাঁটতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন মহারাষ্ট্র অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতির প্রধান নরেন্দ্র দাভোলকর। এরপরেই মহারাষ্ট্রে অন্ধবিশ্বাস বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত গোবিন্দ পানসারে, এমএম কালবুর্গি ও সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশও খুন হন ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে। দাভোলকারের মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে পুনে সিটি পুলিশ। ২০১৪ সালে বম্বে হাইকোর্টের একটি নির্দেশে সিবিআই এই খুনের তদন্ত শুরু করে। দাভোলকারের খুনের সঙ্গেই পরের তিনটি খুনের তদন্তও যুক্ত হয়।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে নাম উঠে আসে শরদ আন্দুরে, শচীন কালাসকার, দন্ত বিশেষজ্ঞ তাওড়ে, সঞ্জীব পুনালেকর ও বিক্রম ভাবের। এরা সবাই উগ্র সনাতন ধর্মীয় সংগঠন সনাতন সংস্থার সক্রিয় সদস্য। তবে শুক্রবারের রায়ে গুলি চালানোয় অভিযুক্ত আন্দুরে ও কালাসকারকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা ও ৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেয় আদালত। অন্যদিকে বাকি তিনি অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়ে যাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন দাভোলকারের পরিবার। তাঁদের দাবি, যদি মূল ষড়যন্ত্রকারীদের না ধরা যায় তবে এরপরে যারা খুন হয়েছেন তাঁদের মৃত্যুর তদন্তও অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। অভিযোগ উঠছে, হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসের পাণ্ডাদের রক্ষা করতেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তদন্ত পরিচালিত হয়েছে।