প্রতিবেদন : বর্তমানের কাজকর্মে সরব প্রাক্তন। মালদ্বীপের বর্তমান সরকারের ভারত বিরোধী অবস্থানকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করলেন মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ। দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর চিনঘেঁষা অবস্থান ও ভারত বিরোধী পদক্ষেপে আখেরে মালদ্বীপের ক্ষতি হচ্ছে বলে সরব হলেন তিনি। একইসঙ্গে নিজের দেশের মানুষের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।
আরও পড়ুন-মহাকাল পুজোয় ঢাকি উদয়ন
ভারত সফররত মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ বলেছেন, ভারতীয়রা মালদ্বীপকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে। তাতে আমাদের দেশের পর্যটনশিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। আমি এখন ভারতে রয়েছি। আমি খুবই চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন। আমি বলতে চাই, যা কিছু ঘটছে তাতে মালদ্বীপবাসী দুঃখিত।
মালদ্বীপের সর্বশেষ নির্বাচনে চিনপন্থী হিসেবে পরিচিত মহম্মদ মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হন। এর পর থেকে ভারতের সঙ্গে সেদেশের সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটেছে। মুইজ্জু সরকারের মন্ত্রিসভার তিন সদস্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কটূক্তি করেছিলেন। চাপে পড়ে তাঁদের বরখাস্ত করা হলেও মুইজ্জু সরকারের অবস্থান বদলায়নি। ক্রমাগত ভারত-বিরোধিতা ও চিনের পক্ষে সুবিধাজনক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মুইজ্জু ইদানীং ঘরে-বাইরে সমালোচিত হচ্ছেন। এই অবস্থায় ভারতীয়দের একাংশ মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দেয়। বিশেষ করে ভারতীয় পর্যটকদের সে দেশে যেতে বারণ করে সমাজমাধ্যমে প্রচার চলে। এই ঘটনার পর মালদ্বীপের পর্যটনশিল্প সংকটে পড়েছে। নাশিদের ক্ষমাপ্রার্থনা মূলত এ কারণেই। দুঃখ প্রকাশ করে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমরা চাই ভারতীয়রা যেন মালদ্বীপে যাওয়া বন্ধ না করেন। ছুটিছাটায় তাঁরা যেমন আসছিলেন, তেমনই আসুন। আমাদের আতিথেয়তায় কোনও ত্রুটি পাবেন না। মালদ্বীপের ভারতপন্থী অংশ ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর চিনপন্থী নীতি প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে। যদিও তারপরেও অনড় মুইজ্জু। চিনের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি করেছে মালদ্বীপ। এ বিষয়ে নাশিদ বলেছেন, মনে হয় না এটি কোনও প্রতিরক্ষা চুক্তি। মুইজ্জু শুধুই কিছু অস্ত্র পেতে চান। উনি রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিচ্ছেন বলে শোনা গিয়েছে। দুঃখের বিষয়, বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস দিয়ে মুইজ্জু সরকার মালদ্বীপ শাসন করতে চাইছে। কিন্তু বন্দুকের নল দিয়ে শাসন হয় না। এদিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু জানিয়েছেন, মালদ্বীপে অবস্থান করা ভারতীয় সেনাদের আগামী ১০ মের মধ্যে দেশে ফিরে যেতে হবে। এরপর সাদাপোশাকেও কোনও ভারতীয় সেনা মালদ্বীপে থাকতে পারবেন না। ভারতের পক্ষ থেকে মালদ্বীপকে যে দুই হেলিকপ্টার ও ডর্নিয়ার বিমান দেওয়া হয়েছিল, তা ফেরত দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন মুইজ্জু। তিনি জানান, সেগুলোর কর্তৃত্ব থাকবে মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে। তবে সেগুলি চালাবেন ও রক্ষণাবেক্ষণে যুক্ত থাকবেন ভারতীয় বেসামরিক লোকেরা। দুই দেশের সম্পর্ক কবে ও কীভাবে স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।