প্রতিবেদন: অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে অতিসক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় জাতীয় মহিলা কমিশনকে। অথচ বিজেপি-শাসিত মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো এবং তাঁদের ধর্ষণ করার ঘটনা জানার পরেও তা বেমালুম চেপে গিয়েছে গেরুয়া দলের ঘনিষ্ঠ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। যা চরম লজ্জার বিষয়। জানা গিয়েছে, ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশন নামে মণিপুরের একটি সংগঠন বিবস্ত্রকাণ্ড নিয়ে কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরেই জাতীয় মহিলা কমিশনকে নিজেদের তাঁবেদারে পরিণত করেছে মোদি সরকার। সে কারণেই কমিশন মণিপুরের এই নারকীয় ঘটনার কথা জানার পরেও তা বেমালুম গোপন রাখে।
আরও পড়ুন-শেষ চারে গেল সাত্ত্বিক-চিরাগ জুটি
জানা গিয়েছে, মণিপুরে দুই মহিলার চরম লাঞ্ছনার ঘটনাটি ১২ জুন মহিলা কমিশন জানতে পেরেছিল। মৌখিকভাবে নয়, রীতিমতো চিঠি লিখে কমিশনকে ওই ঘটনার কথা জানিয়েছিল ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি নিজেদের দাবির সপক্ষে দুই মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানোর ভিডিও পাঠিয়েছিল কমিশনে। কিন্তু তার পরেও বিজেপির দয়ায় জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়া রেখা শর্মা কোনও পদক্ষেপই করেননি। শুক্রবার ওই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রেখা। তিনি বলেছেন তাঁদের কাছে মণিপুর থেকে একাধিক অত্যাচারের খবর এসেছিল। মণিপুরের ঘটনা সম্পর্কে জানতে তিনি তিনবার রাজ্যের মুখ্যসচিব বিনীত জোশীকে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের তরফে কোনও জবাব আসেনি। এত বড় ঘটনার পরেও কেন মণিপুরের ডিজি কিংবা মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে তলব করা হল না, তার কোনও উত্তর দিতে পারেননি কমিশনের চেয়ারপার্সন।
আরও পড়ুন-ঘরের মাঠে জুয়ানের ক্লোজড ডোর প্রস্তুতি
মণিপুরে যাবেন ১০ মুখ্যমন্ত্রী : এদিকে সংসদে বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ-বিজেপি রাজ্যগুলির পক্ষ থেকে ১০ জন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি দল মণিপুরের ভয়াবহ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেই রাজ্যে যেতে পারে।
আরও পড়ুন-রোহিতদের পাশে খেলে ধন্য যশস্বী
বিস্ফোরক মন্তব্য বীরেন সিংয়ের : দুই মহিলাকে চরম নিগ্রহের ঘটনাটি সামনে আসতেই দেশ জুড়ে প্রবল নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। ওই ঘটনার কথা স্বীকার করতে গিয়ে কার্যত আরও বেফাঁস মন্তব্য করে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি বলেছেন গত আড়াই মাসে রাজ্যে এ ধরনের শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। দায়ের হয়েছে শয়ে শয়ে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে সভ্যসমাজ। সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছেন যে, এ ধরনের ঘটনা ঘটছে জানার পরও আড়াই মাস ধরে নির্বিকার রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সব জেনে, সব দেখেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনওরকম আইনি ব্যবস্থা নেননি। কোনও সভ্য দেশে যে এটা হতে পারে সেটা কেউই যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। রাজ্যে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার পরেও এই ভিডিও ফাঁস হওয়ার জন্য কেন্দ্র সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্যুইটারকেই দায়ী করেছে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, এভাবে ট্যুইটারের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে ডবল ইঞ্জিন সরকার নিজেদের দায় এড়াতে চাইছে।