প্রতিবেদন : লোকসভা নির্বাচনের আগে শুধুমাত্র রামমন্দিরই নয়, দেশব্যাপী হিন্দুত্বের জিগির তুলে এবার স্কুলের পাঠ্যবইতেও রাম এবং রামায়ণকে (Ramayana-Mahabharata) অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছে গেরুয়া শিবির। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)-এর উচ্চস্তরের প্যানেলের সুপারিশ অনুসারে রামায়ণ এবং মহাভারতের মতো মহাকাব্য ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকে সংযোজন হতে চলেছে। অধ্যাপক সিআই আইজ্যাকের নেতৃত্বে এনসিইআরটির কমিটি বর্তমান পাঠ্যক্রমের বিভিন্ন পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে ইতিহাসের পাঠ্যক্রমকে চারটি সময়কালে বিভক্ত করা হয়েছে। এগুলি হল শাস্ত্রীয়, মধ্যযুগীয়, ব্রিটিশ এবং আধুনিক ভারত।
ভারতের ইতিহাসকে ঔপনিবেশিকতা-মুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে এনসিইআরটির কমিটি। তার জন্য দেশের নাম ইন্ডিয়া থেকে বদলে দিয়ে ভারত বলে উল্লেখ করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বইয়ের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের হিন্দুত্ববাদী মানসিকতা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে বলে মত শিক্ষাবিদদের একাংশের।
আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই স্কুল পাঠ্যবইতে বিষয়টি যুক্ত হলে বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। এই বিষয়ে কমিটির চেয়ারম্যান সি আই আইজ্যাক সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, বর্তমানে ভারতের যে প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে, সেখানে বেশিরভাগই রয়েছে বৈদেশিক আক্রমণের কাহিনি। দুর্ভাগ্যবশত, সেখানে ভারতে অনুপ্রবেশ, শাসন করা, এসব কাহিনির উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বৈদিক যুগের ইতিহাস পাঠ্যবইতে নেই। ভারতের যে স্বর্ণযুগ ছিল, সেই ইতিহাস আমাদের শিশুরা পড়ে না। পাঠ্যসূচিতে রামায়ণ বা মহাভারতের (Ramayana-Mahabharata) উল্লেখ নেই। আমাদের প্রথম বৈঠকেই আমরা রামায়ণ, রামচন্দ্রের জীবনকাহিনি, উত্তর থেকে দক্ষিণে তাঁর যাত্রা, রামচন্দ্রের শাসনকালে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার কাহিনি পাঠ্যসূচিতে তুলে ধরার প্রস্তাব করেছিলাম। পাঠ্যসূচিতে বেদকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। আয়ুর্বেদের পাঠ্যবই তৈরিও রয়েছে সুপারিশের তালিকায়। সব মিলিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ভাবনায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে জারিত করতে চাইছে মোদির দল। লক্ষ্য অবশ্যই আগামী লোকসভা নির্বাচনে হিন্দুত্বের ধ্বজা তুলে ধরা।
আরও পড়ুন- পর্যটনে বিপুল সম্ভাবনা, শিল্পপতিদের বার্তা হর্ষ নেওটিয়ার