ঝড়ের সঙ্গে লড়াই করেই টিকে আছে সুন্দরবন। আয়লা থেকে আমফান। একের পর এক ঝড় আছড়ে পড়েছে বাদাবনে। তছনছ করে দিয়েছে দ্বীপের পর দ্বীপ। প্রকৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার রাশ আছে প্রশাসনেরই হাতে। আর সেখানেই ফারাকটা চোখে পড়ছে। আয়লার সময়ে যা হয়নি, আমফানে তা ঘটেছে। গতিশীল প্রশাসনকে সঙ্গী করে সুন্দরবনের ধ্বংস আটকাতে পদক্ষেপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। লিখছেন মণীশ কীর্তনীয়া। আজ শেষ কিস্তি।
আরও পড়ুন-বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ দেখতে এল বিশ্বব্যাঙ্ক
দীর্ঘ বঞ্চনার দিনলিপি আজ অতীত। অবশেষে দিন বদলাচ্ছে সুন্দরবনের। দিগন্তে দেখা যাচ্ছে ঘুরে দাঁড়ানোর রুপোলি রেখা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে৷ সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথনের সঙ্গে আলোচনা করে গোটা সুন্দরবনের উন্নয়নে সার্বিক ভাবে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প চূড়ান্ত হলেই মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্যে নবান্নে ফাইল পাঠানো হবে। তিনি সম্মতি দিলেই অর্থ বরাদ্দ হবে। পুরো প্রক্রিয়াটিই চলছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। এই মাস্টারপ্ল্যানে একদিকে যেমন সুন্দরবনকে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা রয়েছে, তেমনই রয়েছে পর্যটনকে সামনে রেখে হোটেল, জল-স্থল পরিবহণ সহ একাধিক মাধ্যমে রোজগারের উপায়। লক্ষ্য, বিকল্প অর্থনীতি তৈরি করা।
আরও পড়ুন-
যাতে স্থানীয় মানুষগুলোর হাতে থাকে কাজ। থাকে সুনিশ্চিত রোজগারের ভরসা। ভাবা হয়েছে, পরিস্রুত পানীয় জলের আলাদা প্রকল্পও। আয়লা-আমফান-বুলবুল-হুদহুদের মতো পরের পর ঝড়ে নোনা জল আছড়ে পড়ে চাষের জমি হয়েছে বন্ধ্যা। তাই এই সব পতিত জমিতে বিকল্প চাষের চিন্তা চলছে। লক্ষ্য, মানুষগুলোর গ্রাসাচ্ছাদনের পাকা বন্দোবস্ত। গোটা বিষয়টি নিয়ে লাগাতার কাজ করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক পর্যায়ে ১৫০ কোটির প্ল্যান তৈরি হলেও পরবর্তী পর্বে আর্থিক বরাদ্দ বাড়বে। সরকার চায় সুন্দরবনে বড় বড় সংস্থা বিনিয়োগ করুক পর্যটনে। রাজ্য সবরকম সহযোগিতা করবে। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের অভিমত, শুধু পর্যটনকে আঁকড়ে ধরে যদি উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে বিকল্প রোজগার ও অর্থনীতি তৈরি হতে পারে, তাহলে সুন্দরবন পারবে না কেন!