৩ বাহিনীর সমন্বয়ে জোর সেনার জন্য নতুন নিয়ম

সন্ত্রাস ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে চূড়ান্ত সংঘাতের পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের তিন বাহিনীর সমন্বয় বাড়াতে নতুন পদক্ষেপ নিল

Must read

প্রতিবেদন : সন্ত্রাস ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে চূড়ান্ত সংঘাতের পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের তিন বাহিনীর সমন্বয় বাড়াতে নতুন পদক্ষেপ নিল। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর মধ্যে আরও সুসংহত সমন্বয় গড়ে তুলতে এবং আন্তঃবাহিনী সংস্থা বা আইএসওর কার্যকারিতা জোরদার করতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে। অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যে ও অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে ২৭ মে থেকে কার্যকর হওয়া একগুচ্ছ নতুন নিয়মের মাধ্যমে আইএসও কমান্ড কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার পথ প্রশস্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ, দুর্যোগের আশঙ্কায় সতর্ক রাজ্য প্রশাসন

এই নিয়মগুলি ‘আন্তঃবাহিনী সংস্থা (কমান্ড, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা) আইন, ২০২৩’-এর অধীনে বিজ্ঞাপিত হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নতুন বিধান সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে কার্যকর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করবে, পাশাপাশি আইএসওর প্রশাসনিক শৃঙ্খলা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমন্বয়কে আরও মজবুত করবে। ২০২৩ সালের বাদল অধিবেশনে সংসদের উভয়কক্ষে আইনটি পাশ হওয়ার পর ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতির সম্মতির মাধ্যমে এটি আইনি বৈধতা পায়। সরকারি গেজেট অনুসারে, ১০ মে ২০২৪ থেকে আইনটি কার্যকর হয়েছে, এবং তার পরবর্তী পর্যায়ে ২৭ মে থেকে সংশ্লিষ্ট নতুন নিয়মগুলি কার্যকর করা হয়েছে। নতুন নিয়মগুলির আওতায় আইএসওর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সিনিয়র অফিসারদের অধীনস্থ বাহিনী ও কর্মীদের নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণে পূর্ণাঙ্গ অধিকার দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর স্বতন্ত্র নিয়ম ও চুক্তি বজায় রেখে শৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে। আইনের ১১ নম্বর ধারার অধীনে ঘোষিত এই নিয়মগুলি আইএসওর দৈনন্দিন পরিচালনার দিক নির্দেশিকা প্রদান করে। শৃঙ্খলা রক্ষা, অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং বাহিনীর মধ্যে পরস্পর বিনিময়যোগ্য কমান্ড কাঠামো গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এই নিয়মগুলি বিশেষভাবে প্রণীত।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সময়ে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তখন এই ধরনের কাঠামোগত সংস্কার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের প্রস্তুতি ও কৌশলগত সমন্বয় সক্ষমতার পরিচায়ক। সীমান্তে কিংবা যৌথ অভিযানে আইএসও-র কার্যকারিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই আইন ও নতুন নিয়মগুলি একটি শক্ত ভিত হিসেবে কাজ করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএসও-র নেতৃত্ব কাঠামো এখন আরও স্পষ্ট এবং দায়বদ্ধতায় বাধ্য। শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুনরাবৃত্ত অপরাধ প্রতিরোধের পথও এতে সুসংহত হয়েছে। এই নিয়ম কার্যকরের মাধ্যমে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ত্রিপাক্ষিক সমন্বয় ও যৌথ প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা এক নতুন যুগে প্রবেশ করল, যা আধুনিক যুদ্ধ কৌশল ও প্রতিরক্ষা প্রশাসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে।

Latest article