প্রতিবেদন : ডেল্টা আর ওমিক্রনকে সঙ্গে নিয়েই ইংরেজি নতুন বছরে (New Year) পদার্পণ বাংলার। একদিকে সতর্কতা, অন্যদিকে উচ্ছ্বাস। তবে প্রশাসন, বিশেষত পুলিশের সৌজন্যে সবটাই নিয়ন্ত্রিত। নতুন বছর (New Year)। নতুন প্রত্যাশা। তার মাঝে কিছুটা আশা-আশঙ্কার দোলাচল থেকেই গেল।
মেজাজেই ছিল পার্ক স্ট্রিট। তবে ছিল নো ওয়াকিং। পুলিশে ছয়লাপ। সাড়ে ৩ হাজার পুলিশ। ১১টি ওয়াচ টাওয়ার। ২টি ক্যুইক রেসপন্স টিম। তদারকিতে ৮ জন ডেপুটি কমিশনার। সঙ্গে ১৩ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। বাইক বাহিনী। শুধু কলকাতা নয়, জেলায় জেলায় এই দৃশ্য। নিশ্চিতভাবে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পুলিশবাহিনী।
সকাল থেকেই চিত্রটা বছর তিনেক আগেকার মতোই ছিল। দার্জিলিং, ভিক্টোরিয়া, চিড়িয়াখানা থেকে দিঘার সৈকতে দলে দলে ভিড় জমিয়েছিলেন মানুষ। তবে সব জায়গাতেই পুলিশের কড়া নজরদারি। মাস্ক না পরে কাউকে ঘোরাঘুরি করতে দেখলেই পুলিশ কর্মীরা তাঁকে মাস্ক পরতে বাধ্য করেছেন। কোথাও মাস্ক বিলি করা হয়েছে। কখনও কোভিড বিধি অমান্যকারীদের পুলিশ ধমকও দিয়েছে। মাইকে টানা চলেছে প্রচার। বেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয় সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ। চিড়িয়াখানার ভিড় এড়াতে সেখানেও তালা পড়ে। ভিড় এড়াতে আজ, শনিবার দক্ষিণেশ্বর মন্দির ও বেলুড় মঠও বন্ধ। কাশীপুর উদ্যানবাটিতে কল্পতরু উৎসবেও দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন-নতুন বছরে নয়া বস্ত্রনীতি রাজ্যে
চিন্তা বাড়াচ্ছে কোভিড আর ওমিক্রন। বিদেশ ফেরত পাঁচজনের শরীরে মিলেছে এই স্টেন। রাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্ত ১৬। শুক্রবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করে কলকাতা পুরসভা। কলকাতার ১৭টি পয়েন্টকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করার ভাবনায় পুরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, সংক্রমিতদের মধ্যে ৮০ শতাংশই উপসর্গহীন। আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ৩% হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কোনও এলাকায় ৫ জন ওমিক্রন আক্রান্ত হলেই সেটিকে কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হবে। কনটেনমেন্ট জোনে বন্ধ থাকবে ক্লাব, সুইমিং পুল ও জিম। কোনও ফ্ল্যাটে যদি করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলে, সেক্ষেত্রে পুরসভার তরফ থেকে গোটা আবাসন জীবাণুমুক্ত করা হবে। লিফটের আশপাশে রাখতে হবে স্যানিটাইজেশনের বন্দোবস্ত। পুরসভার কোনও কর্মীদের জ্বর, সর্দি, কাশি হলে ৫ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করাতে হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ার পরই কাজে যোগ দিতে পারবেন তাঁরা। ফের সেফ হোমগুলি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পর মেয়র পার্ক স্ট্রিটে গিয়ে মাস্ক বিলি করেন।
এর মধ্যে করোনা আতঙ্ক বাড়িয়েছে শিয়ালদহের ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল। দু’দিনে মোট ২৭ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ, একজন হস্টেল সুপারও এই তালিকায় আছেন। বাকিদের অধিকাংশই চিকিৎসক। বর্ষবরণের রাতে মানুষকে সতর্ক করতে পথে নামেন কলকাতার নতুন নগরপাল বিনীত গোয়েল। অনুরোধ করেন, সবাই কোভিড প্রোটোকল মেনে চলুন। মাস্ক পরুন।
এদিকে কয়েকদিন টানা তাপমাত্রা বাড়ার পর শুক্রবার থেকে তা কমতে শুরু করেছে। কারণ পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাব কেটেছে। আগামী ৪ তারিখ উত্তর- পশ্চিম ভারতে আরও একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ঢুকতে চলেছে। ফলে আগামী ৫ জানুয়ারি থেকে ফের রাতের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে।