সম্প্রতি ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এক যুগান্তকারী ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান (ফিলাডেলফিয়ার চিলড্রেনস হসপিটাল, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া-বার্কলে এবং পেন মেডিসিন)-এর বিজ্ঞানী, চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা একসাথে কাজ করে একটি বিরল জেনেটিক ডিসঅর্ডার নিয়ে জন্মগ্রহণকারী কে. জে. (K. J.) নামের এক নবজাতকের জীবন সফলভাবে বাঁচিয়ে তুলেছেন। এই অবিশ্বাস্য চিকিৎসা সাফল্য অর্জন করতে, ডাক্তাররা বিশ্বের প্রথম ইন ভিভো CRISPR জিন থেরাপি প্রয়োগ করেছেন অর্থাৎ শরীরের ভিতরে থাকা অবস্থায় কোষগুলির জিন সারাইয়ের কাজ করেছেন, যা কিনা এতদিন ইন ভিট্রো পদ্ধতিতে ল্যাবরেটরিতে এসমস্ত কাজ হত তারপর তা শরীরে প্রয়োগ করা হত। চিলড্রেনস হসপিটাল অফ ফিলাডেলফিয়া-র রেবেকা আহরেন্স-নিকলাস, যিনি এই গবেষণার সহ-লেখক, একটি প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জিন এডিটিং-এ বছরের পর বছর ধরে অগ্রগতি এবং গবেষক ও চিকিৎসকদের মধ্যে সহযোগিতাই এই মুহূর্তকে সম্ভব করেছে। যদিও কে. জে. (K. J.) শুধুমাত্র একজন রোগী, আমরা আশা করি তিনি এমন একটি পদ্ধতির সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রথম, যা একজন রোগীর ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুসারে প্রয়োগ করা যেতে পারে।’
আরও পড়ুন-দেবী যাচ্ছেন কৈলাসে, থমকে যায় ট্রেন
কে. জে.-বেঁচে ওঠার গল্প
কে.জে.-এর জন্মের এক সপ্তাহ পর ডাক্তাররা লক্ষ্য করেন যে তার দেহে অস্বাভাবিকরকম ভাবে কার্বামোইল ফসফেট সিন্থেটেজ ১ (CPS1)-এর ঘাটতি রয়েছে, যা একটি বিরল জিনগত ত্রুটি। এই রোগ প্রতি ১৩ লক্ষ শিশুর মধ্যে মাত্র একজনের দেখা যায়। এই ব্যাধিটি শরীরের অ্যামোনিয়া (প্রোটিন বিপাকের একটি উপজাত)–কে দেহ থেকে নির্গত হতে দেয় না। আসলে এই অ্যামোনিয়া উক্ত উৎসেচক কার্বামোইল ফসফেট সিন্থেটেজ ১-এর সাহায্যে ইউরিয়াতে পরিণত হতে পারে, যা মূত্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায় ও দেহ রোগমুক্ত থাকে। আর যদি তা না হয় তাহলে এই অ্যামোনিয়া রক্তে জমতে থাকে, যার পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। এর ফলে মস্তিষ্কের বিকাশ প্রভাবিত হতে পারে এবং যকৃতের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত, এই ধরনের ব্যাধির চিকিৎসা হল যকৃৎ প্রতিস্থাপন, কিন্তু যকৃৎ প্রতিস্থাপনের জন্য রোগীদের চিকিৎসাগতভাবে স্থিতিশীল হতে হয় এবং এই ধরনের একটি বড় অস্ত্রোপচারের ধকল সামলানোর মতো রোগীকে যথেষ্ট বয়সিও হতে হয়। এই সময়ের মধ্যে, অ্যামোনিয়ার মাত্রা বৃদ্ধির কারণে রোগীদের সারা জীবনের জন্য স্নায়বিক ক্ষতির ঝুঁকি থাকে, এমনকী এটি মারাত্মক পর্যায়েও পৌঁছতে পারে। যা সারাজীবন শিশুটিকে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। গবেষকরা জানতেন যে, শিশুটি যকৃৎ প্রতিস্থাপনের জন্য খুবই ছোট, তাই তার জন্য নতুন চিকিৎসার দিশা খুঁজে বের করাই ছিল ডাক্তারদের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
সুতরাং, রোগ নির্ণয়ের পর, আহরেনস-নিকলাস পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন-এডিটিং বিশেষজ্ঞ কিরণ মুসুনুরু-এর সাথে যোগাযোগ করেন। এইসময় কে.জে.-কে হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল এবং তার অবস্থা আরও খারাপ হওয়া এড়াতে তাকে প্রোটিন-মুক্ত খাদ্য খাওয়ানো হচ্ছিল। আহরেন্স-নিকলাস এবং মুসুনুরু কে.জে.-র জন্মের পরপরই চিহ্নিত করা তার নির্দিষ্ট CPS-কে লক্ষ্য করেন। ছয়মাসের মধ্যে, তাদের দল কে.জে.-র ত্রুটিপূর্ণ এনজাইম সংশোধন করার জন্য লিভারে চর্বি কণার (lipid nanoparticles) মাধ্যমে জিন সংশোধনের জন্য সরবরাহযোগ্য একটি বেস এডিটিং থেরাপি তৈরি করে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে, কে.জে. এই পরীক্ষামূলক থেরাপির প্রথম ডোজ গ্রহণ করে এবং তারপর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ ও এপ্রিল মাসে তাকে ফলো-আপ ডোজ দেওয়া হয়। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এর গবেষণাপত্রে গবেষকরা কে.জে.-র জন্য ব্যবহৃত কাস্টমাইজড CRISPR জিন এডিটিং থেরাপির বর্ণনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-ট্রফি জয়ের স্বাদ চান অধিনায়ক, ফাইনালে বৃষ্টির পূর্বাভাস, চিন্তায় দু’দল
২০২৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত, কে.জে. থেরাপির তিনটি ডোজ গ্রহণ করে এবং তার ফলে তার দেহে কোনও গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। চিকিৎসার পর অল্প সময়ের মধ্যেই সে বেশি পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সহ্য করতে পেরেছে এবং তার কম ওষুধের প্রয়োজন হয়েছে। এ ছাড়াও, সে রাইনোভাইরাসের মতো কিছু সাধারণ শৈশবের অসুস্থতা থেকে সেরে উঠতে সক্ষম হয়েছে তার শরীরে অ্যামোনিয়া জমার কোনও লক্ষণ পাওয়া যায়নি। যদিও ডাক্তারের মতে এই থেরাপির সম্পূর্ণ সুবিধাগুলি মূল্যায়ন করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি ফলো-আপ প্রয়োজন। ক্রিস্পার/ক্যাস-৯ ভিত্তিক জিন এডিটিং মানব জিনোমের রোগ সৃষ্টিকারী জিনগুলিকে সুনির্দিষ্টভাবে সংশোধন করতে পারে। জিন এডিটিং টুলগুলি অবিশ্বাস্যভাবে জটিল এবং সূক্ষ্ম এবং এখনও পর্যন্ত গবেষকরা এগুলিকে এমন সাধারণ রোগগুলির চিকিৎসার জন্য তৈরি করেছেন যা হাজার হাজার বা লক্ষ লক্ষ রোগীর জীবনকে প্রভাবিত করে। এর দুটি উদাহরণ হল সিক্ল সেল ডিজিজ এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া যেগুলির জন্য বর্তমানে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA)-এর অনুমোদিত থেরাপি রয়েছে। এখানে বলে রাখা ভাল যে এই জিন এডিটিং দু’ভাবেই হয়ে থাকে-দেহকোষের ক্রোমোজোমে থাকা জিনে কাঁচি চালিয়ে বা জননকোষে থাকা জিনে প্রয়োজন অনুসারে কাঁচি চালিয়ে।
তবে, তুলনামূলকভাবে খুব কম রোগই জিন এডিটিং পদ্ধতির সুবিধা পায়, কারণ এত বেশি রোগ-সৃষ্টিকারী জিনের প্রকার বিদ্যমান যেটিকে সংশোধন করার জন্য জিন এডিটিং টুলগুলিরও বিভিন্ন প্রকারের প্রয়োজন হয়, যা শুধু খরচা সাপেক্ষই নয় সময় সাপেক্ষও বটে।
কীভাবে কাজ করে এই ক্রিস্পার/ক্যাস-৯?
CRISPR-এর পুরো কথাটি হল ক্লাস্টারড রেগুলারলি ইন্টারস্পেসড সর্ট প্যালিনড্রোমিক রিপিট্স। আর এই ক্যাস-৯ হল ক্রিস্পার অ্যাসোসিয়েটেড প্রোটিন যেটি কিনা এই কাঁচির কাজটি করে থাকে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনিফার ডোয়ুডনা এবং বার্লিনের ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইউনিটের সদস্যা ইম্যানুয়েল শারপেনটায়ার ২০২০ সালে এই ক্রিস্পার/ক্যাস-৯ (CRISPR/Cas-9) আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। তাঁরা স্ট্রেপটোকক্কাস পায়োজেনস নামক ব্যাকটিরিয়া থেকে ক্রিস্পার/ক্যাস-৯ (CRISPR/Cas-9)-কে পৃথকীকৃত করেন। এই ক্রিস্পার (CRISPR ) আদপে নিজেই একটি ডিএনএ সিকোয়েন্স যেটি কিনা ক্যাস-৯ এর সহায়তায় যেকোনও জীবের জিনোম কাটতে বা ছাঁটতে বা বলা ভাল তাদের ত্রুটি সংশোধনে সমর্থ। এই ক্রিস্পার/ ক্যাস-৯ (CRISPR/Cas-9) পদ্ধতিটি সর্বপ্রথম এশ্চেরেশিয়া কোলাই নামক ব্যাকটিরিয়ার দেহে পরিলক্ষিত হয়। ব্যাকটিরিয়াগুলি সাধারণত ফাজ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করত। আমরা সবাই প্রায় এই ঘটনাটির সাথে পরিচিত যে ফাজ ভাইরাস ব্যাকটিরিয়ার দেহে নিজেদের জেনেটিক বস্তু প্রবেশ করিয়ে ব্যাকটিরিয়ার জেনেটিক বস্তুর ধ্বংসসাধন করে ও নিজেদের প্রতিলিপি গঠন করে। কিন্তু এই আক্রমণের ফলে অনেক সময় ফাজের জিনের কিছু অংশ ব্যাকটিরিয়ার জিনের অংশীভূত হয় আর এই ব্যাকটিরিয়া যদি কোনওমতে বেঁচে যায় তবে এই ব্যাকটিরিয়াটির ওই ফাজের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে এবং পরবর্তীকালে শত আক্রমণের ফলেও সেই ব্যাকটিরিয়া সেই ফাজ দ্বারা মরে না। এর মূল কারণ হল ব্যাকটিরিয়াটির জিনোম (কোনও জীবের জিনতথ্যের সম্পূর্ণ সেট)-এর প্রকৃতি যেটি আসলে ক্রিস্পার-জাতীয় অর্থাৎ সহজভাবে বলতে গেলে এখানে একই প্রকারের A, T, G, C-এর সজ্জাক্রমের পুনরাবৃত্তি দেখা যায় এবং এদের এই সজ্জাক্রমের প্রকৃতি হয় প্যালিনড্রোমিক (উভয় দিক থেকে দেখলে একই সজ্জাক্রম দেখা যায়)। আর এর মাঝে মাঝে কতকগুলি স্পেসার থাকে যা কিনা ওই ফাজের জিন বহন করে বা বলা ভাল যতগুলি ফাজ ওই ব্যাকটিরিয়াকে আক্রমণ করেছে তাদের প্রত্যেকের জিন তথ্যই এই স্পেসাররূপে ব্যাকটিরিয়ার জিনোমে থাকে যা স্মৃতির কাজ করে। শুধু তাইই নয় ব্যাকটিরিয়ার জিনোমে ক্যাস-৯ জিনও উপস্থিত থাকে যারা ক্যাস-৯ উৎসেচক তৈরি করে। তাই দ্বিতীয়বার কোনও ফাজ আক্রমণকালে যখন তাদের জেনেটিক বস্তুটি ব্যাকটিরিয়ার দেহে প্রবেশ করায় তখন ব্যাকটিরিয়ার দেহে থাকা এই ক্রিস্পার-এর স্পেসারের সাথে যদি প্রবিষ্ট জিনের মিল পাওয়া যায়, তাহলে এই ক্রিস্পার (CRISPR) ওই নির্দিষ্ট সিকোয়েন্সের একটি আরএনএ (RNA) কপি (crRNA বা CRISPR RNA) তৈরি করে এবং তার সঙ্গে ক্যাস-৯ উৎসেচক যুক্ত করে একটি কমপ্লেক্স গঠন করে। যার মধ্যে crRNAব্যাকটিরিয়া কোষে অনুপ্রবিষ্ট জিনকে চিনতে ও ক্যাস-৯ উৎসেচক সেই অংশটিকে চিনে কেটে দিতে সাহায্য করে। ফলে ওই জিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায় ও ব্যাকটিরিয়াটিও ফাজের প্রকোপ থেকে রক্ষা পায়। আবার এই অনুপ্রবিষ্ট জিন যদি নতুন হয় তাহলেও আরেক শ্রেণির ক্যাস প্রোটিন সেই জিনকে কেটে ক্রিস্পার (CRISPR)-এ সংযোজিত করে। এইভাবে আক্রমণকারী বিভিন্ন ফাজের প্রায় সমস্ত তথ্য ব্যাকটিরিয়াটির ক্রিস্পার-এর মধ্যে থেকে যায়। ফাজ ভাইরাসের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ব্যাকটিরিয়ার এরূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা পরবর্তীকালে বিজ্ঞানীদের মাথায় এরকম একপ্রকারের কাঁচির ধারণা দেয় যা দিয়ে কিনা কাঙ্ক্ষিত জিন কাটা যায়।
আরও পড়ুন-দিল্লি-এনসিআরে দূষণ ও ভাইরাসের জোড়াফলায় অসুস্থ ৭৫% পরিবার!
আগের আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে আমাদের দেহের যাবতীয় গঠনের পিছনে আছে নির্দিষ্ট জিন। তা সে ভালই হোক বা খারাপ অর্থাৎ কোনও রোগের জন্যও দায়ী সেই জিনই (বিশেষত জিনগত রোগ)। তাহলে আমরা যদি এই অসুস্থ জিনগুলিকে সারিতে তুলতে চাই তবে আমাদেরকে জিনের ওই সিকোয়েন্সগুলিকে বাদ দিতে হবে যারা কিনা ওই নির্দিষ্ট রোগের জন্য দায়ী। তার জন্য আমরা এই ব্যাকটিরিয়ার পদ্ধতিই অবলম্বন করব। প্রথমত ক্রিস্পার-এর মধ্যে ওই অসুস্থ ডিএনএ (DNA) সিকোয়েন্স-এর সংযোজন করাতে হবে যাতে এর থেকে সৃষ্ট সিআর আরএনএ কোষে গিয়ে সেই অসুস্থ ডিএনএ সিকোয়েন্সকে চিনতে পারে। আর দ্বিতীয়ত, ক্যাস উৎসেচক দিয়ে সেই নির্দিষ্ট সিকোয়েন্সকে কেটে বাদ দিতে হবে। এর ফলে জিনের ওই অংশে থাকা তথ্য মুছে যাবে এবং ওই জিনটি তার কার্যক্ষমতা হারাবে। ফলে সেটি আর কোনও অসুস্থ প্রোটিন তৈরি করতে পারবে না। এখানে একটি কথা বলে রাখা জরুরি সেটি হল ক্রিস্পার/ক্যাস-৯ পদ্ধতিতে সিআর আরএনএ-এর সাথে একটি ট্রেসার আরএনএ (tracr RNA) থাকে যা কিনা এই সিআর আরএনএ-কে ধারণ করতে সহায়তা করে আর এই সিআর আরএনএ ও ট্রেসার আরএনএ উভয় মিলেই তৈরি করে গাইড আরএনএ (gRNA) বা জিআরএনএ। এই গাইড আরএনএ, ক্যাস-৯ কে সঠিক সিকোয়েন্স চিনতে ও তাকে সঠিক জায়গায় কাটতে সহায়তা করে বলেই এরূপ নাম হয়েছে। জিনের এরূপ কাটাকুটির পর হোমোলোগাস রিকম্বিনেশন পদ্ধতি বা ননহোমোলোগাস অ্যান্ড জয়েনিং পদ্ধতিতে এই কাটা অংশগুলি জুড়ে যায়। তাই বলা হয় যে-কোনও ধরনের জেনেটিক ত্রুটি (যেমন— সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ক্যানসার, মাস্কুলার ডেসট্রফি প্রভৃতি) সারাতে নিখুঁতভাবে জিন কাটতে, এমনকী নতুন ও সুস্থ DNA সিকোয়েন্সকে জিনোমে প্রতিস্থাপন করতেও নাকি এটির জুড়ি মেলা ভার। বর্তমানে এটির ওপর ভর করেই বিজ্ঞানীরা উন্নত প্রজাতির পতঙ্গ প্রতিরোধী খাদ্য-শস্যের পাশাপাশি উন্নত জিনসম্পন্ন মানবভ্রূণ সৃষ্টি করার কথাও ভাবছে। আর শুধু ভাবছেনই না তার সফল প্রয়োগও করে ফেলেছেন, যার গল্প আমরা ইতিমধ্যেই প্রবন্ধের শুরুতেই শুনে ফেলেছি।
কে. জে.-র ভবিষ্যৎ
বর্তমানে জিন এডিটিং-এর প্রয়োগ সম্ভব হলেও কে. জে.-র বাকি জীবন কেমন কাটবে বা ভবিষ্যতে আর কোনও শারীরিক সমস্যা হবে কি না, এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে তাকে সঠিক পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তবে আপাতত কোনওরকম প্রতিস্থাপন আর জটিল শল্যচিকিৎসা ছাড়াই যে জটিলতম রোগ থেকে শুধু জিন এডিটিং দ্বারাই শিশুটি আপাতভাবে সুস্থ হয়েছে, বিজ্ঞানীরা সেটি ভেবেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন এবং আশা করছেন ভবিষ্যতেও এরকম আরও আরও জটিল রোগ থেকে মুক্তির উপায় বাতলাবে এই জিন এডিটিং-ই।

