৯৪তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের মঞ্চ। সেখানে উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে ঠাট্টা-রসিকতা করছিলেন সঞ্চালক ক্রিস রক। একে-একে সকলকে নিয়ে বলতে বলতে উইল স্মিথের স্ত্রী জাডা পিঙ্কেটকে নিয়ে রসিকতা শুরু করলেন। ক্রিস রক বললেন পরের ‘জিআইজেন’ ছবিতে অভিনয় করবেন জাডা। প্রসঙ্গত, এই ছবিতে নায়িকা ছিলেন ডেমি মুর। ছবিতে যাঁর মাথায় কোনও চুল ছিল না। আসলে জাডার মাথাতেও চুল নেই। সেটা কিন্তু স্টাইলের জন্য নয়। তিনি অ্যালোপেশিয়া রোগে আক্রান্ত। ফলে তাঁর সব চুল উঠে গিয়েছিল। ব্যস স্ত্রীর অপমান সহ্য করতে না পেরে, উইল স্মিথ কষিয়ে চড় মেরে বসলেন ক্রিসকে। হতভম্ব সবাই। তার পরবর্তী ঘটনা সকলের জানা।
কয়েকদিন আগেই বলিউডের অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেন তাঁর গায়ের রঙের জন্য বলিউডে একটা সময় তাঁকে নাকি ‘কালো বেড়াল’ বা ‘ব্ল্যাক ক্যাট’ বলা হত। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া মনে করেন, সুন্দরী বলতে যা বোঝায় তিনি ঠিক তেমনটা নন বলেই তাঁকে ইন্ডাস্ট্রিতে অন্য নায়িকাদের চেয়ে আরও অনেক বেশি খাটতে হয়েছে।
লাফটার কুইন ভারতী সিং— যাকে ‘বিন ব্যাগ’ বলেই বিদ্রুপ করত অনেকে।
এ-ছাড়া রবিনা ট্যান্ডন, বিপাশা বসু, কোরিওগ্রাফার গীতা কাপুর, সমীরা রেড্ডি, শুভশ্রী গাঙ্গুলি— এমন কত-কত নাম রয়েছে আর তাঁদের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে তিক্ত বডি শেমিং-এর (Body Shaming) অভিজ্ঞতা।
মহিলাদের অধিকাংশকেই ঘরে-বাইরে প্রতিনিয়ত বডি শেমিং-এর (Body Shaming) শিকার হতে হয়। ঠাট্টার ছলে শরীরে নিয়ে হুল ফোটানোর বদ অভ্যেস একধরনের মানসিক বিকৃতি। সোশ্যাল মিডিয়াতে হ্যাশ ট্যাগ স্টপ বডি শেমিং জাতীয় প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও সমাজের চিত্রটা বদল হয়নি। এটা একটা সামাজিক ব্যাধি। মানুষের মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা অশিক্ষা। বডিং শেমিং-এর শিকার কিন্তু শুধু নারী নন, পুরুষও। এই কারণে আত্মহননের পথও বেছে নিয়েছে— এমন খবর নজরে এসেছে। আন্তর্জাতিক ল্যানসেট পত্রিকার সমীক্ষা অনুযায়ী এই দেশে যেসব কারণে মহিলারা আত্মহত্যা করেন তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হল বডি শেমিং। এটা কোনও মজা নয়। চেহারার খুঁত নিয়ে ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটাক্ষ যে কোনও মানুষের আত্মবিশ্বাসকে ভেঙে চুরমার দিতে পারে মুহূর্তেই— তাই ছুঁড়ে ফেলতে হবে মনের এই মহামারীকে।
দায়িত্ব নিতে হবে পরিবারকেই
পায়েল ঘোষ, পেরেন্টিং কনসালটেন্ট
বডি শেমিং-এর (Body Shaming) শিকড়টা অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। যে বা যারা বডি শেমিং করছে তারা বলতে পারছে কারণ আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট এটাই শেখায়। আমাদের যত বলিউডি বা টলিউডি ছবি আছে তার নায়িকাদের সিংহভাগকেই সুন্দরী এবং জিরো ফিগার হতে হবে। এই যে একটা স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন আমাদের সমাজে করে দেওয়া হয়েছে সেইটা পরিবারগতভাবে প্রবাহিত হয়েছে পরবর্তী জেনারেশনে। চেহারা, গায়ের রং, উচ্চতা ইত্যাদি নিয়ে বেশিরভাগ বাড়িতে আলোচনা হয় সুতরাং বাচ্চাদের মধ্যে ছোট থেকেই এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে যায় যে চেহারার এই ক্রাইটেরিয়াগুলো রিজেক্টেড আর এইগুলো অ্যাকসেপ্টেড। এই ধরনের সামাজিক আবহেই তারা বড় হয়ে ওঠে। এবার যখন সে স্কুলে যাচ্ছে সে দেখছে তার কোনও বন্ধু বেশ মোটা, কোনও বন্ধু খুব কালো তখন তার মধ্যে ওই প্যারামিটারটাই তৈরি হচ্ছে এবং শিশুটি ডিপ্লম্যাটিক হতে পারছে না ফলে নিজের অজ্ঞানতায় অন্য বাচ্চাটির বডি শেমিং করছে।
এ-ছাড়া অনেক বাচ্চার মধ্যে বুলি করার একটা প্রবণতা থাকে। বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে গ্রুপ করা, বুলি করা এগুলো বেশি। এবার কোনও মেয়ে যদি নর্মাল চেহারার স্ট্যান্ডার্ড প্যারামিটারের বাইরে থাকে তখন তাকে তার সেই চেহারা নিয়ে ব্যাঙ্গ করে অন্য মেয়েরা। তাকে অস্বস্তিতে ফেলে বেশ আনন্দ পায়। যে বাচ্চাটি বডিং শেমিং-এর শিকার সে বন্ধু-বান্ধবদের কাছে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হবার আগেই দেখা যাবে নিজের বাড়ির লোকের কাছেও হয়েছে। সেই বাচ্চাটির রং যদি শ্যামলা হয়, চেহারা যদি খুব মোটা হয়, তাকে কিন্তু ছোট থেকেই পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে কথা শুনতে হয়। অনেক বাবা-মাকে নিজের মেয়েকে নিয়েই বলতে শোনা যায়, ‘‘এত কালো, তোর বিয়ে কী করে দেব!” এই জিনিসগুলো শুনতে-শুনতে সে বড় হয় এবং তার মধ্যে একটা হীনমন্যতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়। বাইরের চেহারার সঙ্গে মনের যে কোনও পার্থক্যই নেই। এটা বোঝানোর মতোও কেউ থাকে না কারণ বাইরের পরিবেশ অনেক বেশি প্রভাবিত করে। এবার যখন সে স্কুলে পা দেয় তখন প্রথমদিকে নিশ্চিন্ত থাকে, কিন্তু ধীরে ধীরে ক্লাস বাড়ে, তারা বড় হয়। তখন সেই বন্ধুরা যখন খেলার ছলে বা গল্পের ছলে তাকে বডি শেমিং করে সেটা তার কাছে খুব হতাশাজনক হয়ে যায়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং এটাই ভেবে নেয়, বাইরের রূপটাই আসল। ফলে সমস্যা শুরু হয়। গোটা পৃথিবী জুড়ে নারী-শরীরকে সব সময় কমোডিটি হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই সমাজে দেখতে ভালর সংজ্ঞাটাই অন্যরকম। মা-বাবাদের মধ্যেও নিজের সন্তান নিয়ে এই আত্মবিশ্বাস তৈরি হয় না। যে তার সন্তানকে শেখাবে তুমি তোমার মতো।
কিন্তু সময় বদলাচ্ছে। তাই বাবা-মাকে চিন্তা-ভাবনার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তাঁরা যখন বুঝতে পারবেন এই ধরনের ক্রিটিসিজম পরিবারমহলে আছে, তখন থেকেই কীভাবে শিশুটিকে প্রোটেক্ট করা যায় এটা ভাবতে হবে। তার মধ্যে বিশ্বাস জোগাতে হবে যে সে বডি শেমিং-কে কীভাবে হ্যান্ডেল করবে। বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে নয়, তার গুণগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। এটা খুব পজিটিভ পেরেন্টিং-এর অন্তর্গত। সারা বিশ্বের ছবি একত্র করে তাকে দেখানো— কারণ হলিউডি ছবি অনেকদিন আগেই প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছে যে রূপ বিষয়টা সিনেমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য নয়, অভিনয়-দক্ষতাই বড় কথা। আমার শরীর আমার বন্ধু, তাকে আমি ভালবাসি, ছোট থেকেই বাড়িতে এই ধরনের কথাবার্তার চল থাকা উচিত।
বাড়িতে বন্ধু-বান্ধব এলে দেখতে হবে কার এই ধরনের কথাবার্তার প্রবণতা বেশি। সেক্ষেত্রে অভিভাবকের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। সমাজের এই মানসিকতা জোর করে বদলানোর সময় এসেছে। স্কুলে ভ্যালু এডুকেশন বিষয়টায় বডি শেমিং একটা পার্ট হিসেবে রাখা উচিত। এটা ক্লাসরুমে পড়ানো, যাতে একজন বাচ্চা সহজে তা গ্রহণ করবে এবং সেই বিশ্বাসটাই তাদের মধ্যে জেগে উঠবে।
বডি শেমিং (Body Shaming) থেকে আসে অবসাদও
রিমা মুখোপাধ্যায়, মনোবিদ
অনেকেই চেহারা নিয়ে বিদ্রুপ নিতে পারে না ফলে আত্মহননের মতো ভুল পদক্ষেপও নিয়ে ফেলেন।
বডি শেমিং শব্দবন্ধটা আমরা ইদানীং ব্যবহার করছি, কিন্তু এটা বহু আগেও এই সমাজে ছিল। অন্যের চেহারা নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ অধিকাংশ মানুষের একটা চারিত্রিক ধরন। আমি যখন ছোট ছিলাম, খুব রোগা ছিলাম। আমাকে কিন্তু প্রচুর শুনতে হয়েছে কেন আমি এত রোগা। এটা বলার মধ্যে কিছু মানুষের হয়তো সত্যি কোনও কনসার্ন রয়েছে, তবে সবার নয়। আমার মনে হয় সকলেই অল্পবিস্তর বডি শেমিং ফেস করেছে কারণ আমাদের সমাজ বাহ্যিক সৌন্দর্যের একটা প্যারামিটার নির্দিষ্ট করে দিয়েছে তার বাইরে কিছু হলেই সেটা খুঁত বলে ধরে নেওয়া হয়। বডি শেমিং যাঁরা করেন তাঁদের বেশিরভাগ সেই ধ্যান-ধারণারই শিকার। এটা তাঁদের কাছে নর্মাল। কারণ হয় তাঁরা নিজেরা বডি শেমিং-এর শিকার তাই অন্যকে বুলি করে বা তাঁরা হয়তো তথাকথিত সুন্দর তাই সেই আলাদা মানুষটাকে অ্যাকসেপ্ট করতে পারেন না এবং মনেই করেন না যে তাঁরা বডি শেমিং করছেন। গোটা দুনিয়ায় কসমেটিক ইন্ডাস্ট্রির এত রমরমা। বিয়ের বাজার হোক বা ইন্টারভিউয়ের বাজার বাহ্যিক রূপটাই প্রাধান্য পায়। কাজেই যার সেটা নেই তাকে বডি শেমিং করলে মানসিক অবসাদ আসাটা অস্বাভাবিক নয়। তাঁদের মধ্যে একটা ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্স গড়ে ওঠে। আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়ে যায়। এর শিকড়টা কিন্তু রয়েছে শৈশবে। ছোটবেলা থেকে বাড়ির লোকেরাই সেই আত্মবিশ্বাসটা গড়ে উঠতে দেয় না। একটি মেয়ে মোটা হলে তার বাবা-মা প্রথমেই তার বিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু করেন। ফলে ছোট আত্মবিশ্বাস কমতে থাকে। এরপর বডি শেমিংয়ের শিকার হলে তার মধ্যে একটা সোশ্যাল অ্যাংজাইটি দেখা দেয়। মিশতে ভয় পায়, গুটিয়ে থাকে। এর থেকে একটা মানসিক রোগ আসতে পারে। ডিজমরফিক ডিজর্ডার যাঁদের রয়েছে তার লক্ষণ হল রোগী হয়তো দেখতে একদম স্বাভাবিক, কোনও খুঁত নেই কিন্তু তাঁর মনে হচ্ছে যে তাঁর নাকটা মোটা, বা চোখটা খুব ছোট। এই ডিজঅর্ডার থাকলে কেউ বডি শেমিং করলে সে হীনমন্যতায় ভোগে এবং অ্যাকসেপ্ট করতে পারে না, তখন হয়তো আত্মহননের কথাও ভাবতে পারে। এক্ষেত্রে পরিবারকে সতর্ক হতে হবে। ছোট থেকে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা জরুরি যে বাইরের রূপটাই সব নয়। বডি শেমিং নিয়ে অ্যাওয়ারনেসটাও খুব জরুরি। মনোবিদদের কাছে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে এলে কাউন্সেলিং এবং সাইকোথেরাপির মাধ্যমে তাকে মানসিকভাবে সুস্থ করে তোলা যায়।
আরও পড়ুন:সভ্যতাগুলো কেমন বৈচিত্রবিহীন হয়ে যাচ্ছে
কী বলছেন সেলিব্রিটিরা
সোহিনী সেনগুপ্ত
আজকের যুগে বডি শেমিং (Body Shaming) আর কোনও বিগ ডিল নয়। এই জাতীয় কুরুচিকর কাজ যারা করে তারা বেশির ভাগ অজ্ঞাতপরিচয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে পিছনে লুকিয়ে কথা বলে। বডি শেমিংকে ইগনোর করাটাই এর প্রতিবাদ। মা-বাবা, বন্ধুবান্ধব, স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি কেউ কোনওদিন আমার চেহারা নিয়ে একটা কথাও বলেনি। আমার আত্মবিশ্বাস সেই কারণে কোনও দিন কমেনি। ক্বচিৎ-কদাচিৎ কেউ চেহারা নিয়ে বললেও তা আমাকে প্রভাবিত করতে পারেনি।
অম্বরীশ ভট্টাচার্য
বডি শেমিং বিষয়টাকে আমি গোড়া থেকেই কোনওদিন পাত্তা দিইনি। কারণ কারও চেহারা নিয়ে কথা বলা— এগুলো অশিক্ষা থেকে আসে এবং আমি সেটাকে ইগনোর করবার মধ্যেই সার্থকতা খুঁজে পাই। ছোটবেলায় উত্তর কলকাতায় বড় হয়ে উঠেছি কোনওদিন এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। আগেকার দিনের মা-ঠাকুমারা মোটা বাচ্চাকে গোপাল বলেই ডাকতেন তাকে বেশি করে ভাত খাওয়াতেন। তখন বডি শেমিং বলে কিছু ছিল না। আমার এই ইন্ডাস্ট্রিতে পদার্পণই হচ্ছে মোটা চেহারার একটি চরিত্র দিয়ে। তাই এই চেহারা আমার কাছে পজিটিভ। জীবনে এক-আধবার বডি শেমিং-এর মতো পরিস্থিতি আসেনি বলব না কিন্তু আমি সেটাকে গুরুত্বই দিইনি।
ঋতাভরী চক্রবর্তী
আমার মনে হয় প্রতিটা মানুষ নারী হোক বা পুরুষ চেহারাটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত জায়গা। গায়ের রং, মাথার চুল, রোগা-মোটা এগুলো নিয়ে কারও কোনও বক্তব্য থাকা অনুচিত। কিন্তু তাও এটা হয় কারণ বেশিরভাগ মানুষের সেই বোধ নেই। আজ নয়, আগেও এটা ছিল। ছোটবেলায় আমি আর দিদি খুব রোগা ছিলাম তখন কেউ কেউ বলত, ‘‘তোরা তো ফুঁ দিলেই উড়ে যাবি।” এখন মনে হয় এটা এক ধরনের বডি শেমিংই ছিল। অভিনয়ে আসার পর আমি কোনও স্টিরিওটাইপ চেহারায় নিজেকে আটকে রাখিনি। আমার নতুন ছবি ‘ফাটাফাটি’র জন্য ওয়েট পুট অন করা দরকার ছিল করেছি। ছবিটা নিয়ে আমি খুবই এক্সাইটেড। আবার পরবর্তী আর একটি ছবিতে যখন জিরো ফিগার হতে হবে তখন দর্শক আমাকে তাই দেখবে। কাজেই কে কী বলল সেটা কখনই ম্যাটার করবে না। বডি শেমিং যার হচ্ছে সত্যি তার পক্ষে লড়াইটা একটু কঠিন কিন্তু আত্মবিশ্বাস দিয়েই এটা ইগনোর করা যায়। নিজে যে যেমন, সেটা নিয়ে খুশি থাকাটাই আসল।
পাওলি দাম
আমরা যাঁরা অভিনয় পেশার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের চরিত্রের প্রয়োজনে নিজের চেহারা নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করতে হয়। সাধারণ মানুষ সেটা বুঝতে পারে না। এই তো কিছুদিন আগে আমি একটু ওয়েট কমিয়েছিলাম ছবিরই প্রয়োজনে। তখন অনেকে দেখে আমাকে প্রশ্ন করত, ‘‘আর ইউ সিক!” আমি খুব অবাক হতাম। আসলে এটাই মানুষের মানসিকতা। রোগা মানেই অসুস্থ, মোটা মানেই বেশি খায়। এই কারণে বডি শেমিং হয়। যা একেবারেই ঠিক নয়। তা ছাড়া চেহারা এক-একজনের এক-একরকম। সবাইকে স্লিম ট্রিম হতে হবে, ফর্সা হতে হবে এমন তো কোনও কথা নেই। আমি এইভাবে কোনওদিন ভাবিনি। এই ধরনের মানসিকতাতেই বিশ্বাসী নই। যাঁরা বডি শেমিং (Body Shaming) করেন সেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। একটা অশিক্ষা কাজ করে এর পিছনে। এটাকে পাত্তা না-দেওয়াই উচিত।