উত্তর ভারতের বাণিজ্য করিডর

Must read

শান্তনু বেরা, তাজপুর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ২ ডিসেম্বর নবান্নে আদানি গোষ্ঠীর প্রধান গৌতম আদানির বৈঠকের পর, ১৪ ডিসেম্বর প্রস্তাবিত তাজপুর গভীর সমুদ্রবন্দর পরিদর্শন করলেন ওই শিল্পগোষ্ঠীর কর্মকর্তারা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিক এবং দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর আট কর্মকর্তা এদিন তাজপুর, চাঁদপুর, জলধা ও পুরুষোত্তমপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁরা দিঘা-তমলুক রেলপথের রামনগর ও বাদলপুর স্টেশন-সহ ওড়িশার আঙ্গুয়া স্টেশন পরিদর্শন করেন। তাজপুর গভীর সমুদ্রবন্দরকে কেন্দ্র করে রামনগর ১ ও ২ ব্লকের কোথায় কী ধরনের পরিকাঠামো তৈরি হবে, তা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এই শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিরা।

আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: কলকাতার জন্য একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

জেলা প্রশাসন সূত্রে প্রকাশ, ছয় লেনের সড়কপথ ও দিঘা-তমলুক রেললাইনে জুড়ে দেওয়া হবে তাজপুর সমুদ্রবন্দরকে। এই বন্দর থেকে পণ্যবাহী সামগ্রী সড়ক ও রেলপথে দেশের নানা প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা সামনে রেখেই এমন ভাবনা। উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর এই বন্দর নির্মাণের জন্য দরপত্র চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। এর মধ্যেই আদানি গোষ্ঠী-সহ মোট চারটি শিল্প সংস্থা তাজপুর এলাকা পরিদর্শন করলেন। তবে কেন্দ্র সরকারের নানা টানাপড়েন ও সমস্যা কাটিয়ে অবশেষে তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলার জন্য আদানি গোষ্ঠীর পরিদর্শনের পর রীতিমতো খুশির হাওয়া কাঁথি, রামনগর, এগরা-সহ সমগ্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে।
জেলা প্রশাসনের দাবি, এখানে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি সম্পূর্ণ হলে হলদিয়া বন্দরের ট্রান্সলোডিংয়ের সমস্যায় অনেকটা চাপ কমবে। কারণ পলি জমে হলদিয়া বন্দরে এখন বড় বড় জাহাজ ঢুকতে পারে না। মাঝসমুদ্রে শিপ টু শিপ ট্রান্সলোডিংয়ে অনেক খরচ বাড়ছে। শুধু হলদিয়া বন্দর নয়, কলকাতা বন্দরও নাব্যতা-সমস্যায় ভুগছে। তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর সম্পূর্ণ হলে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে প্রতিবছর যে কয়েক হাজার কোটি টাকার মাছ ও চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি হয়, সেই কাজে ব্যাপক সুবিধা হবে। আবার বীরভূমের পাঁচামি থেকে কয়লা, আকরিক লোহা, পেট্রোপণ্য প্রভৃতি এই বন্দর দিয়ে নানা দেশে আমদানি ও রফতানি করা যাবে। ১৬ হাজার কোটি টাকার গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এতে প্রত্যক্ষভাবে ১০ হাজার মানুষের ও পরোক্ষভাবে আরও বেশ কয়েক হাজার কর্মসংস্থান হবে। এই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ৬টি বার্থ ও পরের পর্যায়ে আরও ৯টি বার্থ তৈরি করা হবে। ৯৯ বছরের লিজ দেওয়া হবে। এই বন্দরের সঙ্গে নিকটতম জাতীয় সড়ক ও রেলপথের যোগাযোগের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “এই বন্দর আগামী দিনে উত্তর-পূর্ব ভারতের গেটওয়ে হয়ে উঠবে বলে রাজ্য সরকার মনে করে। সেই সঙ্গে এই বন্দর রূপায়ণ হলে পূর্ব মেদিনীপুরের আর্থসামাজিক চেহারাটাই বদলে যাবে।

Latest article