প্রতিবেদন : এসব হচ্ছেটা কী! সাসপেন্ড করে দিচ্ছে! নোটিশ পাঠিয়ে দিচ্ছে! কোন আইনে তুমি নোটিশ পাঠাচ্ছো? লজ্জা করে না! অমিত শাহের দালালি করছে নির্বাচন কমিশন (election commission)। ঝাড়গ্রামের সভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির এসআইআরের নামে এনআরসির চক্রান্তের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, উনি যা বলবেন তাই হবে। হবে না। একজনকেও সাসপেন্ড করতে দেব না। আমাদের অফিসারকে প্রটেকশন দেওয়ার ক্ষমতা রাখি। আমাকে ঘাঁটাবেন না। আমি ইতিহাস বের করে দেব।
আরও পড়ুন-বিহারে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ, তথ্য তলব সুপ্রিম কোর্টের
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এসআইআরে বলেছে বাবা-মায়ের বার্থ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। কোথা থেকে বার্থ সার্টিফিকেট পাবে! যারা বলছে তাদের বার্থ সার্টিফিকেট আছে তো? অমিত শাহ, আগে আপনার বার্থ সার্টিফিকেট দেখান। এরপর জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাকে ভোট দিন বলব না। আপনি কাকে ভোট দেবেন আপনার ব্যাপার। কিন্তু ভোটার লিস্টে যদি আপনার নাম না থাকে তাহলে আপনাকে বের করে দেবে। তাই ভোটার লিস্টে যেন কারও নাম বাদ না যায়। সবাই নাম তুলুন।
এদিন অসম সরকারকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অসম থেকে বাংলায় এনআরসি নোটিশ পাঠাচ্ছে। এটা ক্রিমিনাল অফেন্স। এভাবে নোটিশ পাঠাতে পারে না। বলছে নতুন করে নাম তুলতে হবে। এটা ওদের এনআরসি করার চক্রান্ত। এপিক কার্ড করার জন্য কত মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এখন বলছে সেই এপিক কার্ড কোনও কাজে লাগবে না। এর জবাব বিজেপিকে দিতে হবে। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে আধার কার্ড, রেশন কার্ড করালেন কেন, যদি কাজেই লাগবে না?
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভাল করে লিস্টে নাম দেখবেন। নমিনেশন ফাইলের দিন পর্যন্ত এরা নাম চেঞ্জ করে। নির্বাচন কমিশন অমিত শাহের হাতের পুতুল। নির্বাচন কমিশনে এখন যিনি আছে, তিনি প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ছিলেন। তাঁর এত বড় ক্ষমতা যে, বাংলাকে চোখ রাঙান। আমরা বলি চোখ রাঙানো ভাল, তার আগে নিজের পেছনটা তাকিয়ে দেখুন। আমরা যখন ধরব, আমরা কিন্তু শেষ করে ছাড়ব। আমরা পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, বকলমে এনআরসি মানব না। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। ভাষার উপর অত্যাচার চলবে না। মনে রাখবেন, টাকা দিয়ে সব হয় না। টাকা দিয়ে তুমি আমার নাম কাটবে, অধিকার কাড়বে, এসব হবে না। আমাদের শপথ আমরা এনআরসি করতে দিচ্ছি না, দেব না।
আরও পড়ুন-কিছুতেই বাংলার অসম্মান মানব না
এরপর মুখ্যমন্ত্রীর অভয়বাণী, নোটিশ পাঠালে কেউ কোথাও যাবেন না। বাংলায় থাকুন, শান্তিতে থাকুন স্বস্তিতে থাকুন। আমি যদি নিজে মনে না করি, আমাকে কেউ সরাতে পারবে না। আপনাদের লোকেরাও আমাকে ভোট দেবে আশ্রয়ের জন্য। আমাদের অফিসারদের ভয় দেখাবেন না। মনে রাখবেন আমাদের অফিসারদের রক্ষা করার ক্ষমতা আমাদের আছে। যে সব থেকে বড় চোর-ডাকাত, সেই কিনা রেকমেন্ড করছে, যার বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা ধরা পড়েছিল। বেশি কথা বলবেন না। আমি জানি কার কী ক্ষমতা, আমাকে ঘাঁটাবেন না। নিজের দায়িত্ব পালন করুন। কোটি কোটি টাকা কেড়ে নিয়ে কী করেছিলেন আমার সব মনে আছে। এনআরসির ভয়ে মানুষকে আত্মহত্যা করতে হবে। এই জিনিস চলতে পারে না। এর দায় কে নেবে?