প্রতিবেদন: গৃহবধূ নির্যাতনের নিষ্ঠুরতাকে কি এবারে স্বীকৃতি দিচ্ছে উচ্চ আদালত? নাকি এই নির্যাতনকে গার্হস্থ্য হিংসা বলে আদৌ মনেই করছে না আদালত? বম্বে হাইকোর্টের সাম্প্রতিক একটি রায়ে এই প্রশ্নটাই দেখা দিয়েছে বড় করে। প্রশ্ন উঠেছে, গৃহবধূ নির্যাতন বা এই সংক্রান্ত গার্হস্থ্য হিংসার সংজ্ঞা কি এবারে তাহলে বদলে যাচ্ছে আদালতের রায়ে? সত্যিই অবাককাণ্ড। বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ সম্প্রতি জানিয়েছে, পুত্রবধূকে টিভি দেখতে না দেওয়া, মন্দিরে একা যেতে না দেওয়া কিংবা শতরঞ্চিতে ঘুমোতে দেওয়া আদৌ নিষ্ঠুরতা নয়। মহারাষ্ট্রে সম্প্রতি এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দোষী সব্যস্ত করেছিল নিম্ন আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বম্বে হাইকোর্টে যান স্বামী।
আরও পড়ুন-টাকা ছড়িয়ে ভোটলুঠ বিজেপির! উদ্ধার ২৮২ কোটির বেআইনি সামগ্রী, মহারাষ্ট্রে কঠোর কমিশন
হাইকোর্ট সেই রায় খারিজ করে বেকসুর খালাস করে দেয় অভিযুক্তদের। এই রায়ে যতটা না বিস্মিত সাধারণ মানুষ এবং আইনবিশেষজ্ঞরা, তার থেকেও বিস্মিত বধূনির্যাতন নিয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে। প্রশ্নটা হচ্ছে, শুধুমাত্র দৈহিক নির্যাতনটাই কি অত্যাচারের মাপকাঠি কিংবা সংজ্ঞা। মানসিক নির্যাতন কি অত্যাচারের পর্যায়ে পড়ে না? মেয়েকে হারিয়ে ওই গৃহবধূর পিতা শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ এনেছিলেন। কেমন সেই নিষ্ঠুরতা? বাড়ির বউকে মিশতে দেওয়া হতো না প্রতিবেশীদের সঙ্গে, টিভি দেখতে দেওয়া হত না, একা মন্দিরে যেতে দেওয়া হত না, শতরঞ্চিতে ঘুমোতে বাধ্য করা হতো তাঁকে। এখানেই শেষ নয় গৃহবধূর রান্না নিয়েও খোটা দেওয়া হত তাঁকে। মাঝরাতে বালতি বালতি জল তুলতে হত। এই জল তুলতে গিয়েই মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর। সবমিলিয়ে শ্বশুরবাড়িতে এক দমবন্ধ করা পরিস্থিতি। আদালতের চোখে কি এগুলো নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে না? জিজ্ঞাসা আমজনতার।