মণীশ কীর্তনিয়া: একটা সময় ছিল যখন শিলং নিয়ে বাঙালির আবেগ ছিল যথেষ্ট। ছুটি কাটাতে মেঘরাজ্যে (Meghalaya Assembly Election) যেতেন বহু বাঙালি পরিবার। আর সেখানে বসবাসকারী বাঙালির সংখ্যা পুরো মেঘালয়ে ছিল বেশ কয়েক লক্ষ। মেঘরাজ্যের সরকারি-বেসরকারি অফিস-কাছারিতে গিজগিজ করতেন বাঙালিবাবুরা। এখন অতটা না থাকলেও মেঘালয়ের বিভিন্ন অংশ জুড়ে আছেন বাঙালিরা। সংখ্যায় কমে গেলেও ভোটের অঙ্কে তা নেহাত হেলাফেলার মতো নয়৷ বিশেষ করে শিলং এবং গারো হিলসের বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে রীতিমতো ‘ডিসাইডিং ফ্যাক্টর’ বাঙালিরা।
আদিবাসী রাজ্য মেঘালয়ে (Meghalaya Assembly Election) হিন্দু-বাঙালি, মুসলমান-বাঙালিরাও এই মুহূর্তে বেশ গুরুত্বের দাবি রাখেন। কয়েকটি বিধানসভায় তো প্রায় ৭৫ শতাংশ বাঙালি রয়েছেন। কয়েক পুরুষের বাস তাঁদের। এই বাঙালি ভোটাররাও চাইছেন এবার মেঘালয়ে পরিবর্তন হোক। বাংলার মতো সেখানেও তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার হোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বাংলায় চালু করেছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, বার্ধক্যভাতা, সবুজসাথী— সব হোক এখানেও। আর তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আশায় বুক বাঁধছেন মেঘালয়ের যুব সম্প্রদায়ের বাঙালি যুবকেরাও। অভিষেককে দেখে ও তাঁর কথা শুনে উৎসাহিত তাঁরা। গারো হিলসের মহেন্দ্রগঞ্জ, ফুলবাড়ি, টিকরিকিলা, রাজাবালা-সহ বেশ কয়েকটি বিধানসভায় বাঙালি ভোট ‘ডিসাইডিং ফ্যাক্টর’।
আরও পড়ুন-নোবেলজয়ীকে ন্যক্কারজনক আক্রমণ
এর মধ্যে মহেন্দ্রগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মেঘালয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমার স্ত্রী দীপাংশি ডি শিরা। তিনিও মানছেন বাঙালিরা মেঘালয়ের অন্যতম বড় শক্তি। মুকুল সাংমা নিজে প্রার্থী টিকরিকিলা থেকে। শিলংয়েও অন্তত ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে বাঙালি ভোটাররা বড় ফ্যাক্টর। এর মধ্যে সাউথ শিলং, নর্থ শিলং, পান্থার, নংপোই, উমসিং এবং জিরাং বিধানসভায় নজরে বাঙালি ভোট৷ এর বাইরেও গোটা মেঘালয় জুড়েই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন বাঙালিরা। তাঁরাও আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে বুথে যাবেন ভোট দিতে।
নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একসঙ্গে দু’বার মেঘালয় সফর করেছেন। কয়েকদিন আগে তুরা লোকসভার মেন্দিপাথারের জনসভায় যে-ভিড় হয়েছে তা মেঘালয়ের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। মঙ্গলবার শিলংয়ে ১০ অঙ্গীকারে ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন। প্রচার চলছে জোরকদমে। সব দেখে-শুনে শাসক এনপিপি ও বিজেপি দিশাহীন হয়ে পড়েছে। মেঘরাজ্যের নির্বাচনী ময়দানে তাদের খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। বুধবার আরও তিন কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথম দফায় ৫২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল দল।