সাতবার গুলি খেয়েছিলেন এবার সফল সিভিল সার্ভিসে, হার না মানা জেদের প্রতীক এই অফিসার

তবে শুধু পরীক্ষার ফলাফল দিয়ে রিঙ্কুর সাফল্য বিচার করা যাবে না। তাঁর এই সাফল্যের পিছনে আছে এক দীর্ঘ লড়াইয়ের কাহিনি।

Must read

প্রতিবেদন : ২০০৪ সালে উত্তরপ্রদেশের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজ্যের সামাজিক উন্নয়ন দফতরের কর্তা হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন রিঙ্কু সিং রাহি। চাকরি জীবনে ২০০৮ সালে রিঙ্কুকে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়তে হয়। বলা যায় ২০০৮ সালের সেই ঘটনা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে রিঙ্কুর জীবন। ২০০৮ সালে মুজফ্ফরনগরে বৃত্তি সংক্রান্ত একটি আর্থিক দুর্নীতির চক্র ফাঁস করেছিলেন এই তরুণ অফিসার। ৮৩ কোটি টাকার ওই কেলেঙ্কারি সমস্ত তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন-‘প্রাণ খুলে হাসুন’ শীতলা মন্দিরে পুজো দিয়ে ভাল থাকার মন্ত্র জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

রিঙ্কুর দেওয়া তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ওই ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দোষী সাব্যস্ত হয় চারজন। দোষীদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। এরপরই দুষ্কৃতীদের বিষনজর পড়ে রিঙ্কুর উপর। একটি বা দুটি নয়, রিঙ্কুর উপর দুষ্কৃতীরা চালিয়েছিল সাতটি গুলি। একটি গুলি লেগেছিল মাথায়। দুষ্কৃতীদের প্রাণঘাতী আক্রমণে গুরুতর জখম রিঙ্কু বেশ কয়েক মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর প্রাণে বেঁচে ফিরে আসেন। ২০০৯ সালের মার্চ মাসের সেই ঘটনা এখনও ভুলতে পারেননি তিনি। হামলার স্মৃতিচিহ্ন আজও তিনি নিজের শরীরে বহন করে চলেছেন। ওই হামলায় রিঙ্কু তাঁর বাম চোখ হারান। হারিয়েছেন শ্রবণশক্তিও।

আরও পড়ুন-সন্তুর উস্তাদ ও সুফি বাদক পন্ডিত ভজন সোপোরি প্রয়াত

অস্ত্রোপচার করলেও বদলে গিয়েছে মুখের চেহারা। কিন্তু রিঙ্কুর লড়াই থামেনি। চাকরির পাশাপাশি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিরেক্টরের পদে ছিলেন তিনি। রিঙ্কুর সামনে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসার এবারই ছিল শেষ সুযোগ। রিঙ্কু বলেছেন, একদিকে চাকরি, অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সামলে পড়াশুনা করার জন্য তিনি বিশেষ সময়ে পেতেন না। কিন্তু তাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরাই তাঁকে পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে উৎসাহ জুগিয়েছেন। রিঙ্কু স্পষ্ট জানিয়েছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রেরণাতেই তিনি এবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন। তবে নিরাশ হতে হয়নি তাঁকে। ইউপিএসসি পরীক্ষায় ৬৮৩ র্যাঙ্ক করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন-আলফাজের সাহায্যে পুলিশ, মাদ্রাসায় রাজ্যে প্রথম

তবে শুধু পরীক্ষার ফলাফল দিয়ে রিঙ্কুর সাফল্য বিচার করা যাবে না। তাঁর এই সাফল্যের পিছনে আছে এক দীর্ঘ লড়াইয়ের কাহিনি। এক অদম্য জেদের গল্প।
রিঙ্কু জানিয়েছেন, তাঁর একমাত্র লক্ষ্য হল দেশের সেবা করা। নিজের জীবনের চেয়েও তিনি দেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। তবে রিঙ্কুর আক্ষেপ, তাঁর উপর হামলার মূলচক্রী এখনও ধরা পড়েনি। এটাকে তিনি উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের ব্যর্থতা বলেই মনে করেন।

Latest article