‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলো’য় ফোনে ত্রিপল খাটিয়ে থাকা শেষ, আবাসের বাড়ি বৃদ্ধ দম্পতিকে

‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে আবেদন জানিয়ে বাংলার বাড়ি পেলেন বড়ঞার এক অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি।

Must read

কমল মজুমদার l জঙ্গিপুর: ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে আবেদন জানিয়ে বাংলার বাড়ি পেলেন বড়ঞার এক অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি। দশ বছর ধরে এক চিলতে ছিটেবেড়ার ঘরে মাথা গুঁজে কোনওরকমে দিন কাটাচ্ছিলেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পারশালিকা গ্রামের অসহায় দম্পতি মানিক ও গীতারানি ঘোষ। বর্ষায় চাল ফুটো হয়ে জল পড়ত। রাত কাটাতে হত প্রতিবেশীদের বাড়িতে। পঞ্চায়েত, ব্লকে ঘুরেও আবাস যোজনায় ঘর পাননি। বারবার ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে। পুত্রহীন ঘোষ দম্পতির অভিযোগ, বর্ষায় ত্রিপল চাইতে গেলেও পাইনি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি ফোন করে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন তাঁরা। বাংলা আবাস যোজনায় ঘরের টাকা আসতেই দেরি না করেই ইট গাঁথার কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন-অন্ধকার পেরিয়ে আলোকের যাত্রা এখন এই রাজ্যে

জীবনে প্রথম মাথার উপর ছাদ পেতে চলার আনন্দে আত্মহারা বৃদ্ধ দম্পতি প্রতিবেশীদের দুবেলা গলা উঁচু করে বলছেন, ‘আমাদের কাছে মুখ্যমন্ত্রীই ভগবান। উনিই বিপত্তারণ।’ মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে ঘর পাওয়ায় মানিক ঘোষ ও গীতারানি ঘোষকে দেখতে গ্রামে এখন ভিড় করছেন অনেক মানুষ। ঘোষ দম্পতি দুই মেয়ের বিয়ে দিতে তাঁদের চাষের জমির অনেকটাই বেচে দিয়েছেন। সামান্য দেড় বিঘা জমির আয়ে কোনওরকমে সংসার চলে। ছিটেবেড়ার ঘর প্রতি বর্ষায় একটু একটু করে ভেঙে পড়লেও সারানোর সামর্থ্য ছিল না। গ্রামের মোড়পতলায় সেই আশ্রয়ও মাস দুয়েক আগে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে ত্রিপল টাঙিয়ে বাস করছেন। আশি ছুঁইছুঁই মানিক ঘোষ বলেন, তিনবার গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য বদল হয়েছে। প্রত্যেকের কাছে কাতর অনুরোধ করেছি। কেউ কর্ণপাত করেননি। হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। মাস দেড়েক আগে মানিকবাবুর স্ত্রী গীতারানি ঘোষ ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলো’-র নম্বরে ফোন করেন। ঘোষ দম্পতির অবস্থার কথা শুনে নবান্ন থেকে সেদিনই ব্লক প্রশাসনের কাছে অনুসন্ধানের নির্দেশ আসে। আর কোথাও ঘুরতে হয়নি ঘোষ দম্পতিকে। এক মাসের মধ্যে প্রশাসনিক সমস্ত কাজ মেটার পর সপ্তাহ খানেক আগে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকাও ঢোকে। গীতারানি বলেন, ‘সরকারের প্রধানকে সরাসরি ফোন করায় সহজেই মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলাম। উনি ভগবান।’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দেবেন্দ্রনাথ বাগদি বলেন, ‘মানিকবাবু ঘরের দাবিদার ছিলেন। কবে এনকোয়ারি হয়েছে আমরা জানতাম না। উনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেই ঘর পেয়েছেন।’

Latest article